শিষ্ঠাচার সংক্রান্ত হাদীস—১৪ (পিতা মাতার প্রতি সন্তানের ভূমিকা-৩)

আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন,

 ‘একদিন একজন লোক রাসূলুল্লাহ সা-এর দরবারে হাযির হয়ে আরয করল, হে আল্লাহর রাসূল সা! আমার কাছে সবচেয়ে উত্তম ব্যবহার পাওয়ার অধিকারী কে? তিনি বললেন, তোমার মা। লোকটি জিজ্ঞেস করল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে লোকটি আবারও প্রশ্ন করলো, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। লোকটি আবারও জিজ্ঞেস করল, তারপর কে? তিনি বললেন, তারপর তোমার পিতা’  (বুখারী হা/৫৯৭১; মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪৯১১)।

অন্য আর এক হাদীসে তিনি বলেন,

 ‘সবচেয়ে বড় কবীরা গুনাহ হচ্ছে কোন ব্যক্তি কর্তৃক তার পিতা-মাতাকে অভিসম্পাত করা। বলা হ’ল হে আল্লাহর রাসূল সা! মানুষ তার পিতা-মাতাকে কি ভাবে অভিশাপ করে? তিনি বললেন, কোন ব্যক্তি অপরের পিতা-মাতাকে গালি দেয়। ফলে সেও তার পিতা-মাতাকে গালি দেয়।’  (বুখারী, হা/৫৯৭৩; মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪৯১৬)।

আমাদের সমাজে উঁচু,মধ্যবিত্ত ,নীচু পরিবার সহ শিক্ষিত বা অশিক্ষিত সব ধরনের পরিবারেই দেখা যায় স্বামী ও স্ত্রী কোন কারনে বাদানুবাদ হলেই পিতা মাতা নিয়ে গালি গালাজ শুরু করে দেন। সামান্য ব্যাপারেও রাস্তা ঘাটেও সহজেই মুখ থেকে বাবা মা কে নিয়ে গালি দিয়ে ফেলেন। অথচ হাদীসের শিক্ষায় যে গালি দিল, সে মূলত নিজের পিতা মাতাকেই গালির বা অপমানের উপযুক্ত করে নিলো। তাই সন্তানের কর্তব্য পিতা মাতা যেন অপমানিত না হোন সেই রকম লেন দেন করা।

নবী করীম সা আরও বলেন,

 ‘ঐ লোক হতভাগ্য! ঐ লোক হতভাগ্য! ঐ লোক হতভাগ্য! জিজ্ঞেস করা হ’ল, হে আল্লাহর রাসূল সা.! কার শানে একথা বললেন? নবী করীম সা. বললেন, যে লোক পিতা-মাতার একজন কিম্বা দু’জনকে তাদের বৃদ্ধ বয়সে পেল অথচ জান্নাতে দাখিল হল না, সে হতভাগ্য’ (মুসলিম হা/২৫৫১)।