বিবাহিত নারী পুরুষ যারা পরকীয়ায় আসক্ত- তাদের জন্য কিছু আবেদন

 

প্রথমেই মনে করিয়ে দিতে চাই যে আপনি নারী পুরুষ যাই হোন না কেনো, আপনার মূল পরিচয় আপনি একজন মহান রবের অনুগত দাস, আপনাকে ফিরে যেতে হবে আবার মহান রবের দরবারে নিজের আমলনামার যাচাই বাছাই করার জন্য এবং স্থায়ী জীবনের ফলাফল পাবেন তারই ভিত্তিতে।

যারা ঈমানদার মুমিন, তাদের অন্তরে আল্লাহর মহব্বত ভালবাসা হবে সর্বাধিক প্রগাঢ়। সূরা আল বাকারা: ১৬৫

আবু হুরায়রা(রা) থেকে বর্ণিত। নবী সা: বলেন: আল্লাহ তায়ালার আত্মমর্যাদাবোধ আছে এবং আল্লাহ তায়ালার আত্মমর্যাদাবোধে ঐ সময় আঘাত লাগে যখন মু’মিন ব্যক্তি আল্লাহ কর্তৃক হারাম করা কোন কাজে লিপ্ত হয়।

বুখারী: ৪৮৪০

তাই মহান রবের দেয়া নি’আমত ভোগ করে- তাঁরই দেয়া রিযিক ও দেহ মন দিয়ে কিভাবে হারাম কাজে জড়াতে সাহস বা ইচ্ছা আসতে পারে যদি সে মুমিন হয়ে থাকে?

রাসুল সা: বলেছেন:

কোন ব্যক্তি পাপ কাজে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় যে সব কাজে গুনাহ নেই তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত আল্লাহভীরু লোকদের শ্রেণীভুক্ত হতে পারে না। তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ

রাসুল সা: বলেছেন: হে আয়েশা! ছোট-খাটো গুনাহর ব্যাপারেও সতর্ক হও। কেননা এজন্যও আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে। ইবনে মাজাহ

এইগুনাবলী শুধুমাত্র মুত্তাকীদের জীবনেই দেখা যায়।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ”। (সূরা বনী ইসরাঈল -৩২)

অর্থাৎ যেনাকে উত্তেজিত করে যে সব জিনিষ তা থেকে দূরে থাকার আদেশ এসেছে এই আয়াতে। অথচ দেখুন, আজ সমাজে ঘরে ঘরেই সেই প্ররোচনা চালাচ্ছে শয়তান ও মানবরূপী শয়তান। আপনি কম্পিউটারে কাজ করছেন, ইন্টারনেট থাকলে দেখবেন কত অশ্লীল ছবি নিজ থেকে সামনে চলে আসছে, বিজ্ঞাপন দিয়ে রেখেছে অশ্লীল নারীর ছবি দিয়ে ইত্যাদি। টিভিতে এখন দেশীয় কোন অনুষ্ঠানও দেখার মত নয়, এমনকি খবর দেখতেও চোখের যেনা হয়ে যায়। পত্রিকাগুলোতেও বিনোদনের নামে অশ্লীলতার প্রচার চলছে।

এই ধরনের পরিবেশে যারা বিবাহিত,ঘরে স্ত্রী বা স্বামী ও সন্তানাদি রেখেও নিজেরাই ইচ্ছা করেই যেনার নিকটবর্তী হতে চায় এবং হারাম যোগাযোগ করে থাকে গায়ের মাহরামদের সাথে তাদের পরিনতি কত ভয়াবহ হবে তা হাদীস থেকেও আমরা জানতে পারি।

আজ অপ্রয়োজনকে নানা যুক্তি দিয়ে প্রয়োজন বানিয়ে নারী পুরুষ অবৈধভাবে গল্পগুজবে বা চ্যাটের মাধ্যমে নিজদের সময় কাটায়। এখানে শয়তান মধু ঢেলে দেয় যেন আরো বেশী এই হারাম কাজে লিপ্ত থেকে আস্তে আস্তে যেনার কাজ সম্পাদিত হয়, আর যখন বাসায় পরিবারের কাছে যায় শয়তান তখন তিক্ত পরিবেশ সৃষ্টির চক্রান্তে থাকে, আবার অবৈধ আনন্দে থাকলে তখন পবিত্র আনন্দ অন্তরে ঠাঁই পায়না আর তাই পরিবারে সংগীর কাছে কোন কিছু ভালো লাগে না, একটা বিরক্ত ও অনীহা আসতে থাকে এতোদিনের সুন্দর সম্পর্কের মাঝে।

পরিবারের পবিত্রতা রাখার জন্য নিজেকেও পবিত্র থাকতে হবে। মনে রাখা প্রয়োজন যে যা করুক না কেনো তা সংরক্ষিত হচ্ছে ভিডিও আকারে।

“যেদিন তাদের কৃতকর্মের বিরুদ্ধে তাদের জিহ্বা, তাদের হাত ও পা সাক্ষী দিবে”। (সূরা আন নূর-২৪)

মহান আল্লাহ তা’আলা বলেছেন:

আর সেই সময়ের কথাও একটু চিন্তা করো যখন আল্লাহ‌র এসব দুশমনকে দোযখের দিকে যাওয়ার জন্য পরিবেষ্টিত করা হবে। তাদের অগ্রবর্তীদেরকে পশ্চাদবর্তীদের আগমন করা পর্যন্ত থামিয়ে রাখা হবে। পরে যখন সবাই সেখানে পৌঁছে যাবে তখন তাদের কান, তাদের চোখ এবং তাদের দেহের চামড়া তারা পৃথিবীতে কি করতো সে সম্পর্কে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। তারা তাদের শরীরের চামড়াসমূহকে বলবে, তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলে কেন? তারা জবাব দেবে, সেই আল্লাহ‌ই আমাদের বাকশক্তি দান করেছেন যিনি প্রতিটি বস্তুকে বাকশক্তি দান করেছেন। তিনিই তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলেন। আর এখন তোমাদেরকে তাঁর কাছেই ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পৃথিবীতে অপরাধ করার সময় তোমরা গোপন করতে তখন তোমরা চিন্তাও করোনি যে, তোমাদের নিজেদের কান, তোমাদের চোখ এবং তোমাদের দেহের চামড়া কোন সময় তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। তোমরা তো বরং মনে করেছিলে, তোমাদের বহু সংখ্যক কাজ-কর্মের খবর আল্লাহও রাখেন না। সূরা হামীম আস-সাজদাহ: ২০-২১

বুখারি শরীফে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্বপ্নের বিবরণ সম্বলিত যে হাদীসটি হযরত সামুরা বিন জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে উল্লেখ রয়েছে এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন;

“জিবরাঈল ও মীকাঈল (আলাইহি সালাম) তাঁর কাছে এলেন এবং আমি তাঁদের সাথে পথ চলতে শুরু করলাম। এক পর্যায়ে আমরা বড় একটা চুল্লির কাছে এসে পৌঁছলাম। সে চুল্লির উপরি অংশ সংকীর্ণ ও নিম্নভাগ প্রশস্ত। ভেতরে বিরাট চিৎকারও শোনা যাচ্ছিল। আমরা চুল্লিটার ভেতরে দেখতে পেলাম উলংগ নারী ও পুরুষদেরকে। তাদের নিচ থেকে কিছুক্ষণ পর পর এক একটা আগুনের হলকা আসছিল আর তার সাথে সাথে আগুনের তীব্র দহনে তারা প্রচন্ডভাবে চিৎকার করছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম; হে জিবরাঈল! এরা কারা ? তখন তিনি বললেনঃ এরা ব্যভিচারী নারী ও পুরুষ”।

অন্য এক হাদীসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

“হে মুসলমানগণ ! তোমরা ব্যভিচার পরিত্যাগ কর। কেননা এর ছয়টি শাস্তি রয়েছে। মন্দ পরিণতি এর মধ্যে তিনটি দুনিয়াতে ও তিনটি আখেরাতে প্রকাশ পাবে। যে তিনটি শাস্তি দুনিয়াতে হয় তা হচ্ছে, তার চেহারার ঔজ্জ্বল্য বিনষ্ট হয়ে যাবে, তার আয়ুষ্কাল সংকীর্ণ হয়ে যাবে এবং তার দারিদ্রতা চিরস্থায়ী হবে। আর যে তিনটি শাস্তি আখেরাতে প্রকাশ পাবে তা হচ্ছে, সে আল্লাহর অসন্তোষ, কঠিন হিসাব ও জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে”। [বায়হাকী]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশুদ্ধ হাদিসে এসেছে, তিনি বলেছেন:

‘একজন পুরুষ একজন নারীকে নিয়ে একাকী হলেই শয়তান তাদের তৃতীয়জন হয়ে যায়’। (তিরমিযী)

উমর (রা:) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

কোন পুরুষ যখন কোন নারীর সাথে একান্তে থাকে, তখন তাদের মাঝে তৃতীয় জন হিসেবে উপস্থিত হয় স্বয়ং শয়তান তাদের মাঝে ভাবাবেগকে উৎসাহিত করে এবং উভয়ের মাঝে খারাপ কুমন্ত্রণা দিতে থাকে এবং সর্বশেষে লজ্জাকর পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটায়।

এতে তারা নিজেরা যেমনি কঠিন গোনাগার হবে, তেমনি তাদেরকে এই মেলামেশার সুযোগ দেয়ার কারণে তাদের পিতা-মাতা ও অভিভাবকদেরকে হাদীস শরীফে দাইয়ুস বলা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে যে, দাইয়ুস জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।

রাসূল(সঃ) বলেছেন, নিশ্চয়ই এই দুনিয়াটা একটা মধুর চাকচিক্যময় বস্তু এবং মহান আল্লাহ তোমাদেরকে দুনিয়ায় স্থলাভিষিক্ত করে দিয়েছেন। তিনি অবলোকন করছেন, তোমরা কি ভাবে কাজকর্ম করছো। অতএব তোমরা দুনিয়া থেকে সাবধান থাক। এবং নারী জাতি থেকে সাবধান থাক। মনে রেখ, বনী ইসরাইলের প্রথম ফিৎনাহ ছিল নারীদের সম্পর্কিত। মুসলিম: ৬৭৫১

এই হাদীসের শিক্ষাই হলো যে ফিতনা থেকে থেকে নারী ও পুরুষ উভয়কেই সাবধান হতে হবে।

ভালো লাগা ও ভালোবাসা দিয়েইতো আপনি আপনার সংগী বা সঙ্গীনীকে কবুল(বিয়ে) করে নিয়েছেন। মহান রবকে সাক্ষী রেখেই পবিত্র এই সম্পর্ক গড়ে তুলার অংগীকার করেছেন। তাকিয়ে দেখুনতো আপনার সংগীর দিকে আর ভাবুন যে সে কার ভালোবাসার আস্থায় নিজেকে সংসারের মায়াজালে আবদ্ধ করে চলেছে, কার উপর বিশ্বাস স্থাপন করে সন্তানের পিতা বা মাতা হয়েছে! আপনার শান্তি তৃপ্তি মেটানোর জন্য কে আল্লাহকে সাক্ষী রেখে এগিয়ে এসেছে! আপনিইতো সেই যে এই সংগীকে নিজের জীবনের সাথে আপন করে মিলিয়ে নেয়ার জন্য কষ্ট করে যাচ্ছিলেন। আপনার শক্তি সামর্থ্য ও চাহিদাকে পুরুপুরি নিজেদের মাঝে সহযোগীতায় পরিবারকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন! আপনিইতো সেই যে মনে ভেবেছিলেন জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া পেয়ে আজ আমি ধন্য। আর আপনার এই তৃপ্ত মনকে অবলম্বন করেই সেই সংগীটি পরিবারে নিজেকে বিলীন করে দিতে একটুও কার্পন্য করে নি। হয়তো ভালো লাগা বা না লাগার মাঝে কিছু বৈপরিত্য ছিল আর এটাইতো বিচিত্র স্বাদ এনে দেয় জীবনে। নিজ মা বাবা ভাই বোনদের মাঝেও কত সমস্যা হয় কিন্তু কখনো কি সম্পর্কের মাঝে আঘাত আনে এইরকম কাজ করতে ইচ্ছে জেগেছিলো?

তাহলে আজ যে সংগী আপনার মাঝে বিলীন হয়ে গিয়েছে তাকে কিভাবে এমন একটি পরিবেশ বানাতে যাচ্ছেন যা সম্পর্কের মাঝে আঘাত এনে দিবে?

অন্য একজনের দিকে আবার মন দিবেন এই কথা কি বিয়ের সময় জানিয়ে নিয়েছিলেন সংগীকে? চুক্তি করেছিলেন কি আবার অন্য একজনের সাথে শয়তানী প্রেম খেলায় মজা স্ফূর্তী করবেন বলে?

তাহলে আজ কেনো প্রতারনা করে যাচ্ছেন নিজ সংগীর সাথে? নিজেকে কি পূর্ণ সুন্দররুপে সংগীর কাছে ভূমিকা রেখে শান্তি দিতে পেরেছেন? সংগীর চাওয়া পাওয়াকে কি সুন্দররুপে আদায় করে যাচ্ছিলেন?

একটু ভেবে দেখুন তো কোন পিতা মাতার সন্তান আপনি? আপনার শিক্ষা কি? আপনাকে  এতো কষ্ট করে লালন পালন করে গিয়েছেন যেই পিতা মাতা,তারা কি এই হারাম কাজে জড়িত থাকার দৃশ্য দেখার জন্য আপনাকে কষ্ট করে বড় করে দিয়েছেন?

দুনিয়ার জীবন ক্ষনস্থায়ী, তার মাঝেও বড় সত্য কার জীবনের মর্মান্তিক সত্য অক্ষমতা চলে আসতে পারে যেকোন সময়। আপনি ভেবেছেন আজ আপনি রাস্তার একটি হাত পাতা মানুষ হলে আপনার ভালোবাসায় পাগল হয়ে এগিয়ে আসতো আজকের মুখোশধারী অবৈধ সম্পর্কধারী?

আপনার আজকের শক্তি ও যোগ্যতাকে স্থায়ী মনে করবেন না, যেকোন সময় স্তব্ধ হয়ে যেতে পারে আল্লাহর হুকুমে। যাকে মহান আল্লাহকে সাক্ষী রেখে জীবন সংগী করেছেন, মহান রবকে ভয় করে, মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের পরিনতিকে ভয় করে সঠিকভাবে ইহসানের সাথে হক আদায় করুন। আনন্দ খুঁজুন শরীয়তের মাঝে থেকে। সময় ও অর্থ  অবৈধ সম্পর্কের দিকে খরচ করার আগে ভাবুন, কোন খাতে সময় ও অর্থ ব্যয় হচ্ছে তার জবাবদিহী করতে হবে খুব শিঘ্রই।

অন্ধ মোহে ও শয়তানের ফাঁদে পড়ে নিজের সংগীকে অবমূল্যায়ন করবেন না। মানবরুপী শয়তানের জন্য নিজের পবিত্র সুন্দর সংসারের ভীত ভেংগে দিবেন না।

মানুষের শারিরীক সৌন্দর্য ও মোহ সাময়িক, যে কোন সময় এই মোহ কেটে যাওয়ার অবস্থা আসতে পারে, কিন্তু পবিত্র ভালোবাসা ও বিশ্বাস যা মহান রবের সন্তুষ্টি ও ভয় কে সামনে রেখে শরীয়ার মধ্যে থেকে ভোগ করে, সেটার স্থায়িত্ব দুনিয়াতেও খুব গভীর এবং পরকালেও স্থায়ী জীবনের উপহার- জান্নাতে একসাথে বেড়ানো। তাই সাময়িক উত্তেজনাকে সংযত করুন। এতো সুন্দর করে, সংসারকে যে আগলে রাখতে চাচ্ছে, যে ভালোবাসা দিয়ে ভরে রাখতে চাচ্ছে, তার সাথে প্রতারনা করবেন না। যারাই এই পথে পা বাড়িয়েছে তাদের পরিনতি দেখুন, আর তাদের সন্তানদের পরিনতিও দেখুন। সংগীর ও সন্তানের আর্তনাদে আপনি ছাড়খার হয়ে যাবেন। কারন তারা কোন অন্যায় করেনি তারা মযলুম আর মযলুমের আর্তনাদ আল্লাহর কাছে সরাসরি পৌছে যায়। অন্য পরিবারে অশান্তি করে কেউ কোনদিনই শান্তি পায় নি দুনিয়াতেও নয় এবং আখেরাতেতো রয়েছে কঠিন আযাব। শয়তানের এক নম্বর ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজই হলো পরিবার ভাংগন। লক্ষ্য রাখুন আপনার পরিবারে কে এই কাজটি করতে চাচ্ছে, খুব দ্রুত সনাক্ত করে সরে আসুন নিজ পরিবারের মানুষটির কাছে, আরো বেশী নিজেদের সম্পর্কের বন্ধন গভীর করুন, মহান আল্লাহর সাহায্য চান। যে পরিবেশ এই শয়তানের পথ খুলে দেয় তা থেকে তাওবা করে দূরে চলে আসুন। মহান আল্লাহ পরিবারে রহমতের ধারা বইয়ে দিবেন।

আপনার যদি সংগী আরেকজন প্রয়োজন পড়ে তা মহান রবের কাছে প্রার্থনা করুন কিন্তু হারাম ও প্রতারনার ফাঁদে নিজেকে জড়িয়ে নয়। একটি প্রবাদ আছে “যেমন কর্ম তেমন ফল”-এটা বাস্তবতা। আজ নিজ সংগীকে অবমূল্যায়ন করছেন খুব বেশী দূরে নয় যে, কোন না কোন ভাবে আপনি অবমূল্যায়িত হবেন আরো কঠিনভাবে।

আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে বলেনঃ

আর যদি শয়তানের প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করে তাহলে আল্লাহর শরণাপন্ন হও, তিনি শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। যাদের মনে আল্লাহর ভয় রয়েছে তাদের উপর শয়তানের আগমন হওয়ার সাথে সাথে তারা সতর্ক হয়ে যায় এবং তখনই তাদের বিবেচনাশক্তি জাগ্রত হয়ে উঠে। পক্ষান্তরে যারা শয়তানের ভাই তাদেরকে শয়তান ক্রমাগত ভ্রষ্টতার দিকে নিয়ে যায়। অতঃপর তাতে কোন কমতি করে না।

(সূরা আরাফঃ২০০-২০২)

গায়ের মাহরাম ( যাদের সাথে বিবাহ জায়েজ ও পর্দা করা ফরয) থেকে এখনই নিজেকে সরিয়ে নিয়ে আসুন। অফিসের বা প্রতিষ্ঠানের যারাই বিপরীত লিংগ আছেন তাদের সাথে শরীয়ার আচরন বজায় রাখুন। মহান আল্লাহকে ভয় করুন, প্রতিটি মূহুর্ত আপনার সাথের ফেরেশতারা সকল কিছু রেকর্ড করে যাচ্ছেন। আর সাক্ষ্মীতো আপনার সাথেই রয়েছে যারা মুখ খুলে দিবে একদিন সময়মতো আর তারা হলো আপনার চামড়া, চোখ, কান, জিহবা,যমীন। বিপরীত লিংগের সাথে যে আচরন করলে স্বামী বা স্ত্রী কেউ পছন্দ করবেন না বা আপনি নিজেও পছন্দ করতেন না যদি আপনার সংগীর সাথে বিপরীত লিংগ এই রকম ফ্রী আচরন করতেন, মনে রাখতে হবে এটাই গুনাহ, মানুষ ভালো বলুক আর নাই বলুক সেখান থেকে সরে আসতে হবে।

দীন প্রচারের কথা বলে বা মাসয়ালা জানার জন্য বা পড়া শুনা জানার জন্য ইত্যাদি কোনো যুক্তি বানিয়ে নেটে/ ফোনে/ প্রতিষ্ঠানে গায়ের মাহরামের সাথে যোগাযোগ করা থেকে বিরত থাকুন। সাহিত্য চর্চা বা সমাজ সচেতন হয়ে ভূমিকা রাখা প্রয়োজন কিন্তু সেটা নিশ্চয়ই মহান রবের বিধানের বাইরে যেয়ে গায়ের মাহরামদের সাথে বিভিন্ন মন্তব্য/প্রতিমন্তব্য, ব্যক্তিগত আবেগ অনুভূতি প্রকাশ করে নয়।  বিপরীত লিঙ্গের সাথে যোগাযোগ করার আগে নিজে চিন্তা করে দেখুন, আপনার স্বামী বা স্ত্রী যদি এমন করতো আপনার ভালো লাগতো কি না? আপনার সন্তান জানলে কি খুব ভালো ও সম্মান করবে আপনাকে? নিজ আমলনামায় এই কাজ ও সময় ফেরেশতারা কোন খাতে লিখবেন?

অনেকেই নিজ অফিসের কলিগদের সাথে এমন আচরন করেন যা শরীয়ত বহির্ভূত, ফরয পর্দার লংঘন, একসময় এই আচরনই নিয়ে যায় হারাম সম্পর্কের দিকে এবং নিজের আমল ও পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়। অনেক ক্ষেত্রেই দুনিয়াতেই এই ভুলের খেসারত দিতে হয় নিজ সন্তান বা পরিবারের কোন অঘটন দিয়ে। অনেকেই কলিগদের নিজের অন্তরংগ বন্ধু বানিয়ে গায়ের মাহরামদের সাথে আলাদা একটি সম্পর্ক বানিয়ে নেন যা ইসলাম হারাম করে দিয়েছে। পরিবারের সদস্যরা বন্ধু হবে, সব ধরনের আবেগ প্রকাশ হবে পরিবারে আর হতে পারে সম্পর্ক দীনী কলিগ নারী নারীর সাথে ও পুরুষ পুরুষের সাথে। কিন্তু বিপরীত লিংগের সাথে এই ধরনের সম্পর্ক করে ফ্রী মিক্সিং হারাম করে দেয়া হয়েছে।

অনেকে আবার নিজেকে আকর্ষিত করে তুলে ধরেন বিপরীত লিংগের দিকে যা নারী পুরুষ উভয়ের জন্য হারাম আর তা যদি হয় সাজ গোজ বা সুগন্ধি বা কথার ভংগিমা দিয়ে। তাবাররুউল জাহিলিয়্যা—যে অন্যের আকর্ষন কাড়ার জন্য নিজেকে সাজিয়ে প্রকাশ করে থাকে। আর নিজেকে এইভাবে প্রকাশ করার উদ্দেশ্য থাকে অন্যের চোখে আকর্ষন লাভ করা। এই আকর্ষন করার উদ্দেশ্য হবে  স্বামীর/স্ত্রীর জন্য বা নিজের পিতা-মাতার সামনে প্রদর্শন করার ইচ্ছা হতে পারে, এছাড়া অন্য যেকোন কারনে হলে তাবাররুল জাহিলিয়্যা। তাবাররুল হলো সেটা যখনই অন্যকে আকৃষ্ট করার জন্য হয়। এইক্ষেত্রে যে সকল পুরুষ বা ছেলেরা অন্য নারীকে(গায়ের মাহরাম) আকর্ষন করার জন্য নিজেকে সাজিয়ে প্রকাশ করে সেটাও তাবাররুল জাহিলিয়্যা হবে। যা মহান আল্লাহ সম্পূর্ন নিষেধ করে দিয়েছেন।

নিজ নিজ স্বামী বা স্ত্রীর সাথেই সুন্দর আবেগমাখা কথা বলুন ও অংগ ভংগির সুন্দর ব্যবহার করুন এবং গায়ের মাহরামের সামনে এইগুলো করা থেকে বিরত থাকুন বরং এদের সাথে সহজভাবে প্রয়োজনীয় কথার মাধ্যমেই কাজ শেষ করে চলে যান। একসাথে কাজ করতে হলেও মনে রাখতে হবে বিপরীত লিংগের এই সহাবস্থান হারাম কিন্তু মহান আল্লাহ তখনই মাফ করতে পারেন যে, শরীয়া মেনে চলে কাজ করছেন ও পরিবেশ পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন। মহান আল্লাহকে ভয় করুন, স্বামী বা স্ত্রীর ভয়ে নয় বা লোকে কি বলবে সেই জন্য নয়, আখেরাতের শাস্তির ভয় করুন ও সমাজকে কলুষতা থেকে রক্ষা করুন।

চোখের যেনা দৃষ্টি দেয়া, কানের যেনা শ্রবণ করা, মুখের যেনা কথা বলা, হাতের যেনা স্পর্শ করা, পায়ের যেনা পথ চলা। (মুসলিম)

সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: আমি জানি কিয়ামতের দিন আমার উম্মতের মধ্যে একদল তিহামা পাহাড়ের মত শুভ্র নেক আমল নিয়ে হাজির হবে। কিন্তু আল্লাহ তাদের সেসব নেক আমলকে লাপাত্তা করে দিবেন। সাওবান বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! আপনি আমাদেরকে তাদের পরিচয় জানিয়ে দিন; যেন অজ্ঞাতসারে আমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত না হই। তিনি বললেনঃ তারা তোমাদেরই ভাই, তোমাদেরই বংশধর। তারা তোমাদের মত তাহাজ্জুদগুজার। কিন্তু তারা নির্জনে নিভৃতে আল্লাহর নাফরমানীতে লিপ্ত হয়। ( ইবনে মাজাহঃ ৪২৪৫, আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন)

আমার পরবর্তীতে পুরুষের জন্য নারীর ফিতনার চেয়ে কঠিন কোন ফিতনা আমি রেখে যায়নি। (সহীহ বোখারী (৪৮০৮) ও সহীহ মুসলিম (৬৮৮১)

যেখানে আল্লাহর রাসূল স. বলেছেন যেয়ে এটা কঠিন ফিতনা, সেখানে উম্মতে মুহাম্মদী হয়ে আমাদের সকলকেই সাবধান হয়ে চলা প্রয়োজন যেন এই অবস্থায় না পড়ি।

এখানে নারী ও পুরুষের  সাবধান হওয়ার জন্য আহবান করা হয়েছে। নারী যেন নিজেকে ফিতনা হিসেবে তুলে না ধরে এবং পুরুষ যেন ফিতনার মত নারী থেকে দূরে অবস্থান করে।

ইদানিং কিছু ভাইদের কথা শুনা যায় যারা বিধবা / ডিভোর্স নারীদের প্রতি এতো মায়া ও হাদীসের আলোকে অনেক মর্যাদার কাজ যুক্তি দিয়ে আরেকটি বিয়ে করার আগ্রহের কথাও খুব পরহেজগার হিসেবে আমল করতে চান। অথচ এরাই নিজ পরিবারের স্ত্রীর সন্তানের হক সঠিকভাবে আদায় করতে পারছেন না, পিতা মাতার খোঁজ খবর ও স্ত্রী সন্তানদের হক আদায়ে ভারসাম্য করতে পারছেন না, শুধু টাকা দেয়াই হক নয়,পরিবার গঠন অনেক বড় একটি হক যা পরিবারের সদস্যদের উপযুক্ত ও কার্যকরি সময় দানে সঠিক শিক্ষা ও ভালোবাসাসহ আরো অনেক দিক রয়েছে যা আদায় করা অবশ্য কর্তব্য, অথচ যার ব্যপারে অনেক পরিবার বঞ্চিত। মহান আল্লাহ বিভিন্ন কারনকে সামনে রেখে একের অধিক বিয়ে করার সুযোগ রেখেছেন তবে এটাকে সৌখিনতার ইস্যু  বা ভোগ করার ইস্যু না বানানোটাই তাকওয়ার দাবী। যাদের আর্থিকভাবে সামর্থ আছে, তারা যার সামর্থ নেই, দয়া করে (যে সকল যুবক ভাই বোনের অর্থের জন্য বিয়ে হচ্ছে না, চরিত্র ঠিক রাখার জন্য) তাদের সহযোগীতা করুন। বিধবা নারীর ব্যবস্থা করতে সহায়তা করুন এমন একজনের সাথে যার স্ত্রী নেই বা অসুস্থ ও অক্ষম স্ত্রী রয়েছে সেই পরিবারেও সহায়তা দান করার জন্য।

সর্বোপরি মহান রবের ভয় রাখুন, ফিরে যেতে হবে যেকোন সময় তাঁর দরবারে, কবরের জীবনে কি উত্তর দিবেন? আমলনামায় কি নিয়ে যাচ্ছেন? দুনিয়াতে কি জারী রেখে যাচ্ছেন? মানুষ কি সাক্ষ্য দিবে? যেনাকারীদের খাতায় নাম লিখা হচ্ছে কিনা? বংশের ধারা কোন রাস্তায় রেখে যাচ্ছেন?

মহান আল্লাহ বলেছেন

   আজ তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ হালাল করা হল। আহলে কিতাবদের খাদ্য তোমাদের জন্যে হালাল এবং তোমাদের খাদ্য তাদের জন্য হালাল। তোমাদের জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে, যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর তাদেরকে স্ত্রী করার জন্যে, কামবাসনা চরিতার্থ করার জন্যে কিংবা গুপ্ত প্রেমে লিপ্ত হওয়ার জন্যে নয়। যে ব্যক্তি বিশ্বাসের বিষয় অবিশ্বাস করে, তার শ্রম বিফলে যাবে এবং পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মায়িদাঃ ৫

 

পরকিয়া রোধে কিছু করনীয় টিপসঃ

১। স্বামী বা স্ত্রী অত্যন্ত দৃঢ়চিত্ত থাকা যে, কোনভাবেই সংসারের বন্ধন ছিন্ন করবো না।

২। সঙ্গীকেও খুব দৃঢ় অধিকার নিয়ে বলা, এই সংসার আমাদেরই থাকবে ইন শা আল্লাহ।

৩। একজন ভুল করলেও অপরজন অত্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে পরিস্থিতিকে হিকমাতের সহিত নিয়ন্ত্রন করার বুদ্ধি,শক্তি ও সাহস রাখা।

৪। আত্মবিশ্বাস রাখা যে, ভুল পথ থেকে নিজ সংগীকে ফেরাতে পারবে এবং সংসার পূর্বের চেয়ে আরো দৃঢ় বন্ধনযুক্ত হবে।

৫। সংগীর এই অবস্থা শয়তানের ফাঁদে পড়া, তাই অত্যন্ত যত্নশীল হয়ে সংগীকে উদ্ধারের প্রচেষ্টা চালানো। প্রথমেই বিভিন্নজনের কাছে দোষ তুলে না ধরে নিজেরাই সংশোধনের প্রচেষ্টা চালানো।

৬। সংগীকে ভালোবাসা আদর যত্ন সোহাগ দিয়ে আরো বেশী আপন করে নেয়ার জন্য সময় দেয়া ও আবেগের প্রকাশ করা। মুখে বলা তোমাকে অনেক ভালোবাসি। বিবাহের প্রথম দিকের বিভিন্ন সুখকর ঘটনাগুলি স্মরন করে গল্প করা।

৭। সন্তান সন্ততিদেরকেও আরো বেশী সংগীর সাথে বন্ধন বাড়ানোর জন্য কাছে পাঠানো। তাদেরকেও ভালোবাসা ও পছন্দের কথা প্রকাশের শিক্ষা দেয়া। আম্মু বা আবু আমরা তোমাকে খুব ভালোবাসি আর আমরা একসাথে সুন্দর ভালো থাকতে চাই।

৮। পরিবারের দায়িত্ব সংগী ছাড়া সম্ভব নয় এটা উপস্থাপন করা। তার ভূমিকার মূল্যায়ন করে কথা বলা।

৯। সংগীর উপস্থিতি ও ভূমিকা সংসারের জন্য একমাত্র অবলম্বন এটা তুলে ধরা ও বুঝতে দেয়া।

১০। সংগীকে (নিজে পারলেও দায়িত্বানুভূতি বজায় রাখার জন্য)সংসারের কাজে বেশী বেশী যুক্ত রাখা।

১১। নিজেকে আরো বেশী মহান রবের নৈকট্যে নিয়ে যেয়ে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া।

১২। নিজের গুনাহ বা ত্রুটির জন্য বেশী বেশী ইস্তেগফার ও তাওবা করে মহান রবের কাছে সমর্পন করে দেয়া।

১৩। ফরয ওয়াজিব সঠিকভাবে পালনের মাধ্যমে শেষ রাতের তাহাজ্জুদে চোখের পানি ফেলে মহান রবের কাছে চাওয়া। বেশী বেশী তেলাওয়াত বাড়িয়ে দেয়া।

হে আল্লাহ, তোমার সন্তুষ্টির জন্য আমাদের স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, বিশ্বাস, সুধারনাকে প্রতিষ্ঠিত করে দাও, আমাদের উভয়কে ক্ষমা করে তোমার জান্নাতের পথে নিয়ে চলো। শয়তানের চক্রান্ত থেকে আমাদের হেফাজত কর। গায়ের মাহরাম ও শরীয়ত বহির্ভূত সকল কাজ থেকে আমাদের হেফাজত কর,অন্য সকল মুমিন মুমিনার পরিবারকেও হেফাজত কর। যারা চক্রান্ত করছে তাকেও হেদায়েতের পথ দেখিয়ে দাও। তাকেও তার পরিবারমুখী করে দাও।

১৪। সংগীকে আখেরাতের কথা স্মরন করে দেয়া ও মুসলিম হিসেবে করনীয় বুঝানোর চেষ্টা করা বা বিভিন্ন লেকচার, বইএর মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করা।

১৫। ভুল মানুষ করতে পারে কিন্তু সচেতন মুমিন ব্যক্তি তওবা করে সঠিক পথে ফিরে আসে,তাই তাকে তাওবা করার আহবান জানিয়ে সংগীর ভুল ক্ষমা করে দিবেন এই আশ্রয়ের জায়গাটা নিশ্চিত করে ফিরে আসার ইংগিত দেয়া।

১৬। সন্তান সন্তুতির ভবিষ্যত জীবনের জবাবদিহীতার কথাও স্মরন করে দেয়া। আখেরাতের ময়দানেও মহান রবের সামনে দাঁড়াতে হবে সেটাও স্মরন করে দেয়া।

১৭। পিতা মাতা ও ভাই বোনদের সাথে  যোগাযোগ বাড়িয়ে  সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করা।

১৮। গোপনে গোয়েন্দাগিরি না করে সরাসরি সুন্দর করে  ঠান্ডা মাথায় জিজ্ঞেস করে জেনে নেয়া। সুন্দর করে শুনে বুঝানোর চেষ্টা করা।

১৯। শারিরীক সম্পর্ক উন্নত ও চাহিদামত বাড়িয়ে দেয়া। নিজেকে আরো আকর্ষনীয় করে তুলে ধরে তৃপ্তি দেয়ার সকল (শরিয়ত সম্মত পন্থাতেই) উপায় অবলম্ব করা, নিজেও পরিতৃপ্ত আছেন বুঝতে দেয়া।

২০। সকল সময়েই যেকোন অনুষ্ঠানে বা বেড়াতে একসাথে পরিবারের সকলে মিলে বা অন্তত দুজনে একসাথে থাকা।

২১। প্রতিদিন কুর’আনের অর্থসহ তাফসীর পড়ার বা পরিবারের সকলকে নিয়ে একসাথে আলোচনায় বসা।

প্রতিদিন সম্ভব না হলেও অন্তত সপ্তাহে ২-৩ দিন এই রকম একসাথে বসে গল্প/আলোচনার আসর করা বা বাইরে বেড়াতে যাওয়া।

২২। সর্বোপরি মহান রবের প্রতি ভরসা রেখে চাইতেই থাকা, হে অন্তর পরিবর্তনকারী, তুমি অন্তরকে তোমার দীনের দিকে ঘুড়িয়ে দাও। আমাদের সকল সময় তোমার অভিভাকত্বে রাখো। আমাদের ভুল ত্রুটি ক্ষমা করে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যান দান কর। তোমার কুদরত দিয়ে পুরো পরিবারকে একসাথে একমুখী করে দাও যা জান্নাতের দিকে চলে গিয়েছে। সকল মুমিন মুমিনার পরিবারগুলোকেও দুনিয়ার ফিতনা থেকে হেফাজত করো।

২৩। জীন শয়তান ও মানুষ শয়তান থেকে হেফাজতের জন্য কুর’আন ও সহিহ হাদীসের আলোকে দু’আগুলি আমল করা।

২৪। মহান রবের কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য যা কল্যান সেই ফয়সালাই করে দেয়ার দু’আ করা ও সবরের নি’আমত দান করা।

মহান আল্লাহ আমাদের প্রতিটি পরিবারকে শরীয়ত বহির্ভূত সকল ধরনের ফেতনাকে সনাক্তকরার ও এর থেকে নিজেদের দূরে থাকার ঈমানী শক্তি ও আমলিয়াত দান করুন। সকল সময়েই যেন পরিবারের সকলেই মহান রবের অভিভাবকত্বে থাকতে পারি এই দু’আ বেশী বেশী করে করি। প্রতিটি ব্যক্তি ও পরিবারকে দুনিয়ার শান্তি ও আখেরাতের মুক্তিলাভের সহজতা ও উপযুক্ততা দান করুন। আমীন।