আল্লাহ তা’আলার আদেশ-নির্দেশ পালন ও ইবাদত-বন্দেগী সম্পাদন করতে গিয়ে ধৈর্য ধারণ করা-৮

সাধারনত দেখা যায় কোন একটি বিপদের সময় বা বিপদ থেকে উত্তোরনের পর বা কোন ইসলামিক আলোচনা শুনে কারো মনে খুব অনুশোচনা হলো এবং সে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলো যে, সে এখন থেকে মহান আল্লাহ যা বলেছেন, প্রিয় রাসূল স. যেভাবে করেছেন সেভাবে চলবেন। কিছুদিন দেখা যায় খুব নামাজ সাওম বা কিছু ভালো কাজ করেছেন কিন্তু দেখা যায় কয়েকদিন পর সে আগের মতোই আবার অনিয়মিতভাবে কাজগুলো করেন, অনেকেতো আবার রবের ইবাদাত ছেড়ে দিয়ে আগের অবস্থানে চলে যায়। তারা যেন মনে করেন, কখনো বিপদে পড়েননি বা পড়লেও নিজেই বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পেরেছিলেন, আল্লাহর ইবাদাতে অটল থাকার কথা ভুলেই যান। মহান আল্লাহ যে তাকে রক্ষা করেছেন সেই শুকরিয়াটুকু বজায় রাখেন না।

আল্লাহ তা’আলার আদেশ-নির্দেশ পালন ও ইবাদত-বন্দেগী সম্পাদন করতে গিয়ে, আল্লাহ তা’আলার নিষেধ এবং তার বিরুদ্ধাচরণ থেকে বিরত থাকার ক্ষেত্রে অটুট ধৈর্য্য থাকা জরুরী।

অনেকে আবার দেখা যায় আল্লাহ তা’আলার আদেশ-নির্দেশ পালন ও ইবাদত-বন্দেগী সম্পাদন করেন সুন্দর করে কিন্তু আল্লাহ তা’আলার নিষেধ এবং তার বিরুদ্ধাচরণ থেকে বিরত থাকার ক্ষেত্রে মোটেও শক্তিশালী ঈমানের পরিচয় বহন করেন না। আমাদের সমাজে এই সংখ্যাটাই অনেক বেশী।

এইক্ষেত্রে আমাদের মনে রাখা দরকার যে হেদায়েতের মালিক আল্লাহ। অর্থাৎ ভালো পথে আসা ও টিকে থাকার জন্য প্রয়োজন মহান রবের সাহায্য। মহান আল্লাহর প্রতিটি সিদ্ধান্তই দেখা যায় ন্যায়সিদ্ধ কারন তিনিতো ন্যায়বিচারক। হেদায়েতের পথে নেয়ার জন্য মহান রব কতগুলো বৈশিষ্টের কথা জানিয়েও দিয়েছেন। অনেকে বলেন, আল্লাহ চাইলেইতো আমি ভালো কাজ করতে পারি বা আমিতো তাওবা করেছি কিন্তু ধরে রাখতে পারছি না ইত্যাদি। আমরা ধীরে ধীরে একেক পর্বে বুঝার চেষ্টা করবো, কোথায় সেই ফাঁক যার কারনে এই ধরনের অবস্থায় পড়েন অনেকে।

মহান আল্লাহ বলেছেন-

 যদি তোমার রবের ইচ্ছা হতো (যে, যমীনে সবাই হবে মুমিন ও অনুগত) তাহলে সারা দুনিয়াবাসী ঈমান আনতো। তবে কি তুমি মুমিন হবার জন্য লোকদের ওপর জবরদস্তি করবে? আল্লাহর হুকুম ছাড়া কেউই ঈমান আনতে পারে না। আর আল্লাহর রীতি হচ্ছে, যারা বুদ্ধি প্রয়োগ করে কাজ করে না তাদের ওপর কলুষতা চাপিয়ে দেন। সূরা ইউনুস: ৯৯-১০০

এখানে পরিষ্কার বলে দেয়া হয়েছে, আল্লাহর অনুমতি ও তার সুযোগ দান অন্ধভাবে বিচার-বিবেচনা ছাড়াই সম্পন্ন হয় না। কোন রকম মহৎ উদ্দেশ্য ছাড়া এবং কোন প্রকার যুক্তিসঙ্গত নিয়ম কানুন ছাড়াই যেভাবে ইচ্ছা এবং যাকে ইচ্ছা এ নিয়ামতটি লাভ করার সুযোগ দেয়াও হয় না এবং যাকে ইচ্ছা এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত ও করা হয়না। বরং এর একটি অত্যন্ত জ্ঞানগর্ভ নিয়ম হচ্ছে, যে ব্যক্তি সত্যের সন্ধানে নিজের বুদ্ধিবৃত্তিকে নির্দ্বিধায় যথাযথভাবে ব্যবহার করে তার জন্য তো আল্লাহর পক্ষ থেকে সত্যে পৌঁছে যাবার কার্যকরণ ও উপায় উপকরণ তার- নিজের প্রচেষ্টা ও চাহিদার অনুপাতে সরবরাহ করে দেয়া হয় এবং তাকেই সঠিক জ্ঞান লাভ করার ঈমান আনার সুযোগ দান করা হয়।

যারা (মুহাম্মাদ সা.এর রিসালাত মেনে নিতে) অস্বীকার করেছে তারা বলে, “এ ব্যক্তির কাছে এর রবের পক্ষ থেকে কোন নিদর্শন অবতীর্ণ হয়নি কেন?”  বলো, আল্লাহ যাকে চান গোমরাহ করে দেন এবং তিনি তাকেই তাঁর দিকে আসার পথ দেখান যে তাঁর দিকে রুজু করে। সূরা আর রাদ: ২৭

যে নিজেই আল্লাহর দিকে রুজু হয় না বরং তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাকে জোর করে সত্য-সঠিক পথ দেখানো আল্লাহর রীতি নয়। এ ধরনের লোকেরা সত্য-সঠিক পথ পরিত্যাগ করে উদভ্রান্তের মতো যেসব ভুল পথে ঘুরে বেড়াতে চায় আল্লাহ তাদেরকে সেই সব পথে ঘুরে বেড়াবার সুযোগ দান করেন। একজন সত্য-সন্ধানীর জন্য যেসব কার্যকারণ সত্য পথলাভের সহায়ক হয়, একজন অসত্য ও ভ্রান্ত পথ প্রত্যাশী ব্যক্তির জন্য সেগুলো বিভ্রান্তি ও গোমরাহীর কারণে পরিণত করে দেয়া হয়। উজ্জ্বল প্রদীপ তার সামনে এলেও তা তাকে পথ দেখাবার পরিবর্তে তার চোখকে অন্ধ করে দেবার কাজ করে। আল্লাহ কর্তৃক কোন ব্যক্তিকে গোমরাহ করার অর্থ এটাই। যারা আল্লাহর পথের সন্ধান করে ফিরছে তারা নিদর্শন দেখতে পাচ্ছে এবং নিদর্শনসমূহ দেখেই তারা সত্য পথের সন্ধান লাভ করছে।

আমরা দুনিয়ার জীবনের যে কোন একটি বিষয়কে আয়ত্বে আনার জন্য কত সময়, কত অর্থ, কত মেধা, কত শক্তি খাটানোর চেষ্টা করি এবং এর পিছনে যে জিনিষটা কাজ করে তা হলো বিশ্বাস ও ধৈর্য্য শক্তি। আর যার যত ধৈর্য্য শক্তি বেশী সে তত সুন্দর ও ভালোভাবে কাজের সফলতা আনায় সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। আবার এই  ধৈর্য্য শক্তি ততটাই সহনীয় ও সহজ হয়, সেই কাজের ফলাফল যতটা উঁচুমানের বা আকর্ষনীয় হয় ও ফলাফল প্রাপ্তির উপর বিশ্বাস দৃঢ় হয়।

যত বেশী আকর্ষনীয় দুনিয়াবী পাওয়া<<< বিশ্বাসের গভীরতা যতবেশী<<<ধৈর্য্য শক্তি সহজ হওয়া<<<< ততবেশী পরিশ্রমী হওয়ার আগ্রহ <<<কোন একটি কাজ সহজ বা কঠিন।

আমরা বেশীরভাগ মানুষই দুনিয়াতে চাক্ষুস ফলাফলের আসায় এই সূত্র অনুসরন করি বা সন্তানদের,অন্যদের শিক্ষা দেই কিন্তু পরকালের যেই ব্যাপারটা আমি এখনই দেখতে পারছি না, সেই সত্য অবধারিত স্থায়ী জীবনের ফলাফলটার ব্যাপারে সূত্রটা অনুসরন করিনা বা অনেকে মনে করেন অনুসরনযোগ্য না বা অনেকে পরের জীবনটা নিয়ে ভাবতেই চান না। অনেকে মুখে খুব বলেন যে, আখেরাতের জীবনইতো স্থায়ী,দুনিয়াতো কিছুই না কিন্তু কাজের বাস্তবতায় কথার প্রতিফলন থাকে না।

এখানে সবকিছুর মূলে যে জিনিষ তা হলো আমাদের বিশ্বাসের অবস্থা। এই বিশ্বাসের অবস্থা আবার নির্ভর করে জ্ঞানের উপর। আর তাই দেখা যায় মহান আল্লাহ আখেরাতের ব্যাপারে বিশ্বাসের অবস্থাকে উচ্চতর মানে রেখেছেন। বিশ্বাসের তিন অবস্থা—

১। ইতিবাচক

২। নেতিবাচক

৩। সন্দেহ বা দূর্বল (এখনো বিশ্বাস জন্মেনি)

বিশ্বাস ও কর্মের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। বিশ্বাস অনুযায়ীই কর্ম হয়ে থাকে। কিন্তু বিশ্বাসের তিন অবস্থা হলেও কাজের ধরন দুই রকমের—

১। ইতিবাচক কর্ম যা ইতিবাচক বিশ্বাএর উপর নির্ভর করে

২। নেতিবাচক কর্ম যা নেতিবাচক ও সন্দেহযুক্ত বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে

এটি আল্লাহর কিতাব, এর মধ্যে কোন সন্দেহ নেই। এটি হিদায়াত সেই ‘মুত্তাকী’দের জন্য যারা অদৃশ্যে বিশ্বাস করে, নামায কায়েম করে এবং যে রিযিক আমি তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে খরচ করে। আর যে কিতাব তোমাদের ওপর নাযিল করা হয়েছে (অর্থাৎ কুরআন) এবং তোমার আগে যেসব কিতাব নাযিল করা হয়েছিল সে সবগুলোর ওপর ঈমান আনে আর আখেরাতের ওপর একীন রাখে। সূরা আল বাকারা: ২-৪

এখানে আখেরাতের ব্যাপারে একীন বা দৃঢ় বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে।

একটি উদাহরন দেই যেমন, ডাক্তার যখন বলেন একজন রোগীকে যে, আপনার অপারেশন করলে সুস্থ্য হয়ে উঠবেন, আবার পরিবারের একজন বললো অপারেশন করলে ক্ষতি হবে, সমাজের একজন বললো তুমি মাজারে যেয়ে মানত করো এমনি ভালো হয়ে যাবে।

এখন এই রোগীর কাজের ধরন হবে, সে যার উপর বিশ্বাস করবে তার কথার উপর এবং তার জ্ঞান দ্বারা সে বুঝবে যে, ডাক্তার জ্ঞানী, এই বিষয়ে তিনি ভালোটাই বলবেন,ফলে সিদ্ধান্তটা মানা ও অপারেশনের কষ্টটুকুও মেনে নেয়া সহজ হয়, কিন্তু সেই রোগীর যদি ডাক্তারের কথার উপর আস্থা না থাকে বা বিশ্বাস না রাখে তাহলে পরিনতি অন্যদিকে যাবে। তখন ডাক্তারের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়াটা কষ্টের হয়ে যায় এবং কাজের ঘাটতিও দেখা যায়।

একটি গন্তব্যে পৌছুতে দুই দিকের রাস্তা আছে। এখন কেউ বললো যে, সোজা রাস্তাটা যেটা গন্তব্যে পৌছুয়েছে সেখানে একটা ভয়ঙ্গকর গর্ত আছে, আরেকটি রাস্তা সেটা একটু বেশী পথ তবে রাস্তা ভালো আছে।

এখন আপনি যদি বিশ্বাস করেন এই কথার উপর তাহলে বেশী পথটি সহজ হয়ে যাবে এবং আপনি একটু সময় লাগলেও কষ্ট হলেও সুন্দর ভাবে গন্তব্যে পৌছে যাবেন। বিশ্বাসের দৃঢ়তার জন্য সেই কষ্টটুকু মেনে নেয়া সহজ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু যদি বিশ্বাসে ঘাটতি বা অবিশ্বাস করেন তাহলে আপনার অবস্থাও কঠিন হয়ে যাবে।

মহান আল্লাহ আমাদের তৈরী করেছেন, আমাদের সবই তিনি জানেন, সেই রবই বলে দিয়েছেন আখেরাতের ব্যাপারে বিশ্বাস গভীর করার জন্য। আখেরাতের বিশ্বাস বলতে বুঝায়-

আকীদা-বিশ্বাসের বিভিন্ন উপাদানের সমষ্টির ভিত্তিতে আখেরাতের ভাবধারা গড়ে উঠেছে। বিশ্বাসের নিম্নোক্ত উপাদানগুলো এর অন্তর্ভুক্ত।

একঃ এ দুনিয়ায় মানুষ কোন দায়িত্বহীন জীব নয়। বরং নিজের সমস্ত কাজের জন্য তাকে আল্লাহর সামনে জবাবদিহি করতে হবে।

দুইঃ দুনিয়ার বর্তমান ব্যবস্থা চিরন্তন নয়। এক সময় এর মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে এবং সে সময়টা একমাত্র আল্লাহই জানেন।

তিনঃ এ দুনিয়া শেষ হবার পর আল্লাহ আর একটি দুনিয়া তৈরি করবেন। সৃষ্টির আদি থেকে নিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীতে যত মানুষের জন্ম হয়েছে সবাইকে সেখানে একই সঙ্গে পুনর্বার সৃষ্টি করবেন। সবাইকে একত্র করে তাদের কর্মকাণ্ডের হিসেব নেবেন। সবাইকে তার কাজের পূর্ণ প্রতিদান দেবেন।

চারঃ আল্লাহর এ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সৎলোকেরা জান্নাতে স্থান পাবে এবং অসৎলোকদেরকে নিক্ষেপ করা হবে জাহান্নামে।

পাঁচঃ বর্তমান জীবনের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও অসমৃদ্ধি, সাফল্য ও ব্যর্থতার আসল মানদণ্ড নয়। বরং আল্লাহর শেষ বিচারে যে ব্যক্তি উত্রে যাবে সে-ই হচ্ছে সফলকাম আর সেখানে যে উত্রোবে না, সে ব্যর্থ।

কারণ এ বিষয়গুলো অস্বীকার করা তো দূরের কথা এগুলো সম্পর্কে কারো মনে যদি সামান্যতম দ্বিধা ও সন্দেহ থেকে থাকে, তাহলে মানুষের জীবনের জন্য কুরআন যে পথনির্দেশ করেছে সে পথে তারা চলতে পারবে না। আর যদি দূর্বলতা থাকে তাহলেও সঠিক পথে ধৈর্য্য সহকারে থাকতে পারবে না।

জ্ঞান>>বিশ্বাস >>ইচ্ছাশক্তি >>>বাস্তবায়ন শক্তি>>>> ধৈর্য্য শক্তি>>>>আল্লাহর সাহায্য  আল্লাহর ফয়সালা>>>>কাজের ফলাফল

ঈমানের অবস্থান সুদৃঢ় থাকার অর্থই হলো আমলের উপরও স্থির থাকা, এই কথা কেউ যদি বলে যে আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সকল কথাই বিশ্বাস করি কিন্তু বাস্তব কাজের বেলায় তার নমুনা নাই তাহলে কি তাকে বলা যাবে যে সে বিশ্বাস করেছে?

ঈমান ও আমল দুটো উতপ্রোতভাবে জড়িত। একটি ছাড়া অন্যটির মূল্যায়ন হয় না।

মহান আল্লাহ বলেছেন, রাসূল তোমাদের যা দেয় তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও। সূরা হাশর: ৭

“অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।” সূরা আল-আহযাব: ২১

রাসূলের অনুকরণ ও অনুসরণ বলতে বুঝায় দালালাতুল কুরআন (কুরআনের নস) মুতাবেক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সব কাজ করেছেন ও তিনি নিজে যা সুন্নত করেছেন সে সব কাজ করা। রাসূল সা. জুম‘আর খুতবায়ে ঘোষণা করেছেন,

“অতঃপর উত্তম হাদীস (কথা) হলো আল্লাহর কিতাব, আর উত্তম হিদায়েত হলো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিদায়েত।”  মুসলিম, হাদীস নং ৮৬৭।

রাসূলুল্লাহ সা. তাঁর সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরতে উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন:

“তোমরা আমার সুন্নত ও আমার পরে হিদায়েতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নতের অনুসরণ করো, এগুলো শক্ত করে আঁকড়ে ধরো” আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৬০৭।

রাসূল স.বলেছেন, আমি যখন তোমাদেরকে কোন কাজে নিষেধ করি তখন তা থেকে তোমরা নিবৃত্ত থাকো। আর যখন তোমাদেরকে কোন কাজের হুকুম করি তখন তোমাদের সাধ্যানুযায়ী এর উপর আমল কর।  সহিহ বুখারী

এই হাদীসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা। লক্ষ্য করুন, এখানে যে কাজগুলো নিষেধ, রাসূল স. তা করতে মানা করেছেন এবং যা করতে আদেশ দিয়েছেন সেটার ব্যাপারে একটি শিথিলতা দিয়েছেন, আর তা হলো সাধ্যুনুযায়ী করা। এখানেই ধৈর্য্যের ভুমিকা দেখা যায়। যার যত বেশী ধৈর্য্য সে ততবেশী ভালো কাজে এগুতে পারে এবং সবসময় উপরের দিকে যাওয়ার রাস্তায় নিশ্চিত মন নিয়ে এগুতে থাকে, সে জানে যে এই পথেই আমার সব চাওয়া পাওয়া  মুক্তি। আর যার বিশ্বাসেই দূর্বলতা সে এদিক সেদিক ঘুরতে থাকে, সঠিক পথ থেকে সহজেই বিচ্যুত হয়ে যায়।

আবার এই ভালো কাজে টিকে থাকার ধৈর্য্য না থাকার আরো কারন আছে আর সেটা হলো,শয়তানকে সুযোগ করে দেয়ার কিছু স্বভাবসমূহ

১- অজ্ঞতা সুতরাং একজন আলেম, শয়তানের মুকাবিলায় হাজারো আবেদের তুলনায় সবল।

২- কু প্রবৃত্তি ও ধর্ম বিশ্বাসে দুর্বলতা

আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, (শয়তান)বললো আপনার ক্ষমতার শপথঃ আমি তাদের সকলকেই পথভ্রষ্ট করব। তবে তাদের মধ্যে আপনার একনিষ্ঠ বান্দাদের নয়। সূরা সাদ : ৮২-৮৩

৩- উদাসিনতা ও শয়তানের প্রবেশপথ সম্পর্কে অসচেতনতা।

মুমিন ব্যক্তি যখন কোন পাপ কাজে লিপ্ত হয়, তখন তার হৃদয়ে একটি কালো দাগ পড়ে। যখন সে তওবা করে, ফিরে আসে, এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করে, তখন তার অন্তরাত্মা পরিস্কার হয়ে যায়, মুছে যায় সে কালো দাগের স্মৃতি। পাপ বেড়ে গেলে অন্তরের কাল দাগও বেড়ে যায়। পরিণতিতে তার হৃদয় ঢেকে যায় প্রবল অন্ধকারাচ্ছন্নতায়। এটা সেই মরিচা, যার কথা আল্লাহ পবিত্র কুরআনে এভাবে বলেছেন, ‘কখনও নয়; বরং তাদের কৃতকর্মই তাদের অন্তরে মরিচা ধরিয়েছে।’সূরা মুতাফফিফীন: ১৪ (তিরমিযী : ৩৩৩৪)

আসলে আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত কোন জাতির অবস্থা বদলান না যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের গুণাবলী বদলে ফেলে। আর আল্লাহ যখন কোন জাতিকে দুর্ভাগ্য কবলিত করার ফায়সালা করে ফেলেন তখন কারো রদ করায় তা রদ হতে পারে না এবং আল্লাহর মোকাবিলায় এমন জাতির কোন সহায় ও সাহায্যকারী হতে পারে না। সূরা রাদ: ১১

ভালো কাজে টিকে থাকার ধৈর্য্য  রাখার জন্য যা প্রয়োজন

১। ঈমানের শর্তসমূহের ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান ও দৃঢ় বিশ্বাস রাখা

২। জীবনের লক্ষ্যের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অবস্থান ও  দৃঢ় থাকা

৩। আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করা

৪। সব সময় আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া

৫। নফস ও শয়তানের চক্রান্ত সম্পর্কে জ্ঞান রাখা ও প্রতিরোধ করা

৬। উন্নত আখলাক থাকা

৭। উন্নত আখলাক ও পরহেজগার লোকদের সান্নিধ্যে থাকা

৮। বেশী বেশী মৃত্যুর কথা স্মরনে রাখা

«اَللَّهُمَّ حَبِّبْ إِلَيْنَا الإِِيمَانَ وَزَيِّنْهُ فِي قُلُوبِنَا، وَكَرِّهْ إِلَيْنَا الْكُفْرَ وَالْفُسُوقَ وَالْعِصْيَانَ، وَاجْعَلْنَا مِنَ الرَّاشِدِينَ، اَللَّهُمَّ تَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ وَأَحْيِنَا مُسْلِمِينَ، وَأَلْحِقْنَا بِالصَّالِحِينَ غَيْرَ خَزَايَا وَلاَ مَفْتُونِينَ».

 ‘হে আল্লাহ! তুমি ঈমানকে আমাদের নিকট সুপ্রিয় করে দাও এবং তা আমাদের অন্তরে সুশোভিত করে দাও। কুফর, অবাধ্যতা ও পাপাচারকে আমাদের অন্তরে ঘৃণিত করে দাও, আর আমাদেরকে হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করে নাও। হে আল্লাহ! আমাদেরকে মুসলমান হিসেবে মৃত্যু দাও। আমাদের মুসলমান হিসেবে বাঁচিয়ে রাখ। লাঞ্ছিত ও বিপর্যস্ত না করে আমাদেরকে সৎকর্মশীলদের সাথে সম্পৃক্ত কর।

আহমদ : ১৪৯৪৫।

‘হে মুমিনগণ, তোমরা ধৈর্য্য ধর ও ধৈর্য্যে অটল থাক এবং পাহারায় নিয়োজিত থাক। আর আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফল হও।’     আলে-ইমরান : ২০০

এই সবর মুমিনের জন্য তার ভাইয়ের মতো। আপন ভাই অনেক সময় রাগ করে ছেড়ে যায়; কিন্তু বিপদের সময় সে-ই সবার আগে এগিয়ে আসে। এই সবর ঈমানের শাখা স্বরূপ, নালা না থাকলে ঈমানের অস্তিত্বই হুমকির সম্মুখীন হবে। সবর ছাড়া যদি ঈমান থাকেও, তবে তা বড় দুর্বল ঈমান। এমন ঈমানদার আল্লাহর ইবাদত করে দ্বিধা ও সংশয়ের সঙ্গে। এদের সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা সুন্দর বলেছেন,

আর মানুষের মধ্যে এমনও কেউ আছে, যে এক কিনারায় দাঁড়িয়ে আল্লাহর বন্দেগী করে, যদি তাতে তার উপকার হয় তাহলে নিশ্চিন্ত হয়ে যায়, আর যদি কোন বিপদ আসে তাহলে পিছনের দিকে ফিরে যায় তার দুনিয়াও গেলো এবং আখেরাতও। এ হচ্ছে সুস্পষ্ট ক্ষতি।  সূরা আল হাজ্জ:১১

এখানে এমন সব লোকের কথা বলা হয়েছে যাদের মানসিক গঠন অপরিপক্ব, আকীদা-বিশ্বাস নড়বড়ে এবং যারা প্রবৃত্তির পূজা করে। তারা ইসলামের অনুশাসন পালন  করে লাভের শর্তে। তাদের ঈমান এ শর্তের সাথে জড়িত হয় যে, তাদের আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হতে হবে, সব ধরনের নিশ্চিন্ততা অর্জিত হতে হবে, আল্লাহর দ্বীন তাদের কাছে কোন স্বার্থ ত্যাগ দাবী করতে পারবে না এবং দুনিয়াতে তাদের কোন ইচ্ছা ও আশা অপূর্ণ থাকতে পারবে না। এসব হলে তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট এবং তার দ্বীন তাদের কাছে খুবই ভালো। কিন্তু যখনই কোন আপদ বালাই নেমে আসে অথবা আল্লাহর পথে কোন বিপদ, কষ্ট ও ক্ষতির শিকার হতে হয় কিংবা কোন আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হয় না তখনই আর আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতা, রসূলের রিসালাত ও দ্বীনের সত্যতা কোনটার ওপরই তারা নিশ্চিন্ত থাকে না। ফলে ভালো কাজের উপর টিকে থাকার ধৈর্য্য থাকে না।

মহান আল্লাহ আরো সুন্দর করে মানুষের চরিত্র তুলে ধরে সতর্ক করে দিয়েছেন এবং অন্যদিকে সবরকারীদের জন্য পুরষ্কারের ঘোষনা দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন-

আমি মানুষকে নিজের অনুগ্রহভাজন করার পর আবার কখনো যদি তাকে তা থেকে বঞ্চিত করি তাহলে সে হতাশ হয়ে পড়ে এবং অকৃতজ্ঞতার প্রকাশ ঘটাতে থাকে। আর যদি তার ওপর যে বিপদ এসেছিল তার পরে আমি তাকে নিয়ামতের স্বাদ আস্বাদন করাই তাহলে সে বলে, আমার সব বিপদ কেটে গেছে। তখন সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে এবং অহংকার করতে থাকে। এ দোষ থেকে একমাত্র তারাই মুক্ত যারা সবর করে এবং সৎকাজ করে আর তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা এবং বিরাট প্রতিদানও। সূরা হুদ:৯-১১

সবরকারী ব্যক্তি কালের পরিবর্তনশীল অবস্থায় নিজের মানসিক ভারসাম্য অটুট রাখে। সময়ের প্রত্যেকটি পরিবর্তনের প্রভাব গ্রহণ করে সে নিজের রং বদলাতে থাকে না। বরং সব অবস্থায় একটা যুক্তিসঙ্গত ও সঠিক মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে চলে। যদি কখনো অবস্থা অনুকূলে এসে যায় এবং সে ধনাঢ্যতা, কর্তৃত্ব ও খ্যাতির উচ্চাসনে চড়তে থাকে তাহলে শ্রেষ্ঠত্ব ও অহংকারের নেশায় মত্ত হয়ে বিপথে পরিচালিত হয় না। আর যদি কখনো বিপদ-আপদ ও সমস্যা-সংকটের করাল আঘাত তাকে ক্ষত-বিক্ষত করতে থাকে তাহলে এহেন অবস্থায়ও সে নিজের মানবিক চরিত্র বিনষ্ট করে না। আল্লাহর পক্ষ থেকে সুখৈশ্বর্য বা বিপদ-মুসীবত যে কোন আকারেই তাকে পরীক্ষায় ফেলা হোক না কেন উভয় অবস্থায়ই তার ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা অপরিবর্তিত ও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকে। তার অন্তর কখনো কোন ছোট বা বড় জিনিসের আধিক্যে উপচে পড়ে না। কোন পরিস্থিতিতেই তাদের আমলের কোন পরিবর্তন হয় না বরং আরো উন্নত হয়।আল্লাহ বলেছেন- আর যারা হিদায়াত লাভ করেছে আল্লাহ তাদেরকে আরো অধিক হিদায়াত দান করেন। এবং তাদেরকে তাদের অংশের তাকওয়া দান করেন।

সূরা মুহাম্মদ:১৭

কাজেই যদি তোমাদের মধ্যে একশ জন সবরকারী হয়, তাহলে তারা দু’শ জনের ওপর এবং এক হাজার লোক এমনি পর্যায়ের হলে, তারা দু’হাজারের ওপর আল্লাহর হুকুমে বিজয়ী হবে। আর আল্লাহ সবরকারীদের সাথে আছেন। সূরা আনফাল:৬৬

এমনকি কখনো হয়, যে ব্যক্তি তার রবের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট হিদায়াতের ওপর আছে সে ঐ সব লোকের মত হবে যাদের মন্দ কাজকর্মকে সুদৃশ্য বানিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তারা নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসারী হয়ে গিয়েছে?  

সূরা মুহাম্মদ:১৪

আমাদের চিন্তা করা দরকার, কেনো আমি ভালো কাজে নিজেকে সার্বক্ষনিক যুক্ত রেখে উন্নত হতে পারি না, কেনো আমার ধৈর্য্য থাকে না!!! আল্লাহ আমাদের সংশোধন হওয়ার তাওফিক দান করুন।

আজ আমরা শুধুমাত্র কিছু আমল করা এবং কিছু খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকার ব্যাপারে সবর নিতে পারি না, অল্প কয়েকদিনের জীবনের চাওয়া পাওয়াকে এতোই প্রাধান্য দেই যে আখেরাতের সফলতার কথা দূরে ফেলে রেখে, অস্থির হয়ে সঠিক পথ থেকে দূরে যেয়ে, দুনিয়ার পাওয়াটা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে চাই। অথচ আমরাই হলাম শেষ নবী ও প্রিয় রাসূল স.এর উম্মত। আমরাই বলি, আমরাতো মুসলিম আমরা জান্নাতে যাবো। একবারও কি আমাদের চিন্তার খোড়াক আসে না যে, আমার রাসূল স. যিনি মহান আল্লাহর প্রিয় হাবীব ছিলেন, তিনি এই দুনিয়ার জীবনে কত কষ্টের মাঝে, কত ত্যাগ তিতিক্ষা, শারিরীক ও মানসিক আঘাতের মাঝেও ধৈর্য্যের চরম পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে, যে ফসল দিয়ে গেছেন আমাদের, তা আজকের এই ইসলাম। অথচ আমরা শুধু সুবিধাটুকু নিতে চাই, একটু সমস্যা হলেই বাতিলের সাথে সুর মিলিয়ে চলতেও সময় লাগে না। নিজের মুসলিম নামের পরিচিতির যে বাহ্যিক অবয়ব সেটাকেও বিজাতীয়ের সাথে বিলিন করে দিতে কুণ্ঠাবোধ করি না। অথচ মহান আল্লাহ রাসূল স.কে আহবান করে বলেছেন যা আমাদের জন্য অনেক বড় ধরনের শিক্ষা—

অতএব, হে নবী, দৃঢ়চেতা রসূলদের মত ধৈর্য ধারণ করো এবং তাদের ব্যাপারে তাড়াহুড়া করো না। এদেরকে এখন যে জিনিসের ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে যেদিন এরা তা দেখবে সেদিন এদের মনে হবে যেন পৃথিবীতে অল্প কিছুক্ষণের বেশি অবস্থান করেনি। কথা পৌঁছিয়ে দেয়া হয়েছে। অবাধ্য লোকেরা ছাড়া কি আর কেউ ধ্বংস হবে? সূরা আহকাফ:৩৫

সমাজের মানুষ কি বলবে এই জিনিষ আমাদেরকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, সমাজের স্রোতের সাথে না চললে একটু টিটকারী, একটু আলাদা চোখে দেখা, একটু দুনিয়ার ভোগ বিলাসে ঘাটতি তাই আমরা মেনে নিতে প্রস্তুত হই না, তাহলে সাহাবা রা. কি করেছিলেন? খাদীজা রা. যিনি ধনী নারী ছিলেন, আবু তালিব যে ঈমান না এনেও শিয়াবে আবি তালিবে ৩টি বছর কিভাবে কাটিয়েছেন? আপনারা আমার প্রিয় নবীর জীবনীটা একটু দেখে আসুন, সবর কাকে বলে ও কিভাবে নিতে হয় তার নমুনা,  সত্যিকার উম্মত হলে, না বুঝার কোন কারন নেই। আর এই বুঝ দিয়েই আল্লাহর নির্দেশের পথে টিকে থাকা এবং অন্যায় থেকে নিজেদের দূরে রাখার ধৈর্য্য আসবে ইন শা আল্লাহ।

খাব্বাব ইবনে আরাত্ত্ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করলাম (এমতাবস্থায়) যে, তিনি কা‘বা ঘরের ছায়ায় একটি চাদরে ঠেস দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমরা বললাম যে, ‘আপনি কি আমাদের জন্য (আল্লাহর কাছে) সাহায্য চাইবেন না? আপনি কি আমাদের জন্য দো‘আ করবেন না?’ তিনি বললেন, ‘‘(তোমাদের জানা উচিত যে,) তোমাদের পূর্বেকার (মু’মিন) লোকেদের এই অবস্থা ছিল যে, একটি মানুষকে ধরে আনা হত, তার জন্য গর্ত খুঁড়ে তাকে তার মধ্যে (পুঁতে) রাখা হত। অতঃপর তার মাথার উপর করাত চালিয়ে তাকে দু’খণ্ড করে দেওয়া হত এবং দেহের মাংসের নিচে হাড় পর্যন্ত লোহার চিরুনী চালিয়ে শাস্তি দেওয়া হত। কিন্তু এই (কঠোর পরীক্ষা) তাকে তার দ্বীন থেকে ফেরাতে পারত না। আল্লাহর কসম! আল্লাহ নিশ্চয় এই ব্যাপারটিকে (দ্বীন ইসলামকে) এমন সুসম্পন্ন করবেন যে, একজন আরোহী সান‘আ’ থেকে হাযরামাউত একাই সফর করবে; কিন্তু সে (রাস্তায়) আল্লাহ এবং নিজ ছাগলের উপর নেকড়ের আক্রমণ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করবে না। কিন্তু তোমরা তাড়াহুড়ো করছ।’’সহীহ বুখারী ৩৬১৬, ৫৬৫৬, ৫৬৬২, ৭৪৭০

ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আমার পরে (শাসকগোষ্ঠী দ্বারা অবৈধভাবে) প্রাধান্য দেওয়ার কাজ হবে এবং এমন অনেক কাজ হবে যেগুলোকে তোমরা মন্দ জানবে।’’ সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনি (সেই অবস্থায়) আমাদেরকে কী আদেশ দিচ্ছেন?’ তিনি বললেন, ‘‘যে অধিকার আদায় করার দায়িত্ব তোমাদের আছে, তা তোমরা আদায় করবে এবং তোমাদের যে অধিকার তা তোমরা আল্লাহর কাছে চেয়ে নেবে।’’ সহীহ বুখারী ৩২৮২, ৬০৪৮, ৬১১৫, মুসলিম ২৬১০,