বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
৩৩:৫৬ اِنَّ اللّٰهَ وَ مَلٰٓئِکَتَهٗ یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡهِ وَ سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا
নিশ্চয় আল্লাহ নবীর প্রশংসা করেন এবং তার ফেরেশতাগণ নবীর জন্য দোআ-ইসতেগফার করেন। হে ঈমানদারগণ! তোমরাও নবীর উপর সালাত পাঠ কর এবং তাকে যথাযথ ভাবে সালাম জানাও। সুরা আহযাবঃ ৫৬
আরবী ভাষায় সালাত শব্দের অর্থ রহমত, দো’আ প্রশংসা।
‘সালাতুর রব’ এ কথার অর্থ, রহমত, আর ‘সালাতুল মালায়েকা’ এ কথার অর্থ, ক্ষমা চাওয়া। ইমাম তিরমিযি রহ. সুফিয়ান সাওরী
অধিকাংশ আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ থেকে তাঁর নবীর প্রতি যে সালাত সম্পৃক্ত করা হয়েছে এর অর্থ, আল্লাহ নবীর প্রশংসা করেন। তাঁর কাজে বরকত দেন। তাঁর নাম বুলন্দ করেন। তাঁর প্রতি নিজের রহমতের বারি বর্ষণ করেন।
ফেরেশতাদের পক্ষ থেকে তাঁর উপর সালাত প্রেরণের অর্থ হচ্ছে, তারা তাঁকে চরমভাবে ভালোবাসেন এবং তাঁর জন্য আল্লাহর কাছে দো’আ করেন, আল্লাহ যেন তাকে সর্বাধিক উচ্চ মর্যাদা দান করেন, তাঁর শরীয়াতকে প্রসার ও বিস্তৃতি দান করেন এবং তাঁকে সর্বোচ্চ প্রশংসিত স্থানে পৌঁছিয়ে দেন। তাঁর উপর রহমত নাযিল করেন।
আর সাধারণ মুমিনদের তরফ থেকে সালাতের অর্থ দো’আ ও প্রশংসার সমষ্টি।
এ আয়াতের তাফসীরে আবুল আলিয়া রাহিমাহুল্লাহ বলেনঃ আল্লাহ্ তা’আলার সালাতের অর্থ আল্লাহ কর্তৃক ফিরিশতাদের সামনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সম্মান ও প্রশংসা করা। [সহীহ বুখারী, কিতাবুত তাফসীর]
এ হুকুমটি নাযিল হবার পর বহু সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সালামের পদ্ধতি তো আপনি আমাদের বলে দিয়েছেন। (অর্থাৎ নামাযে “আসসালামু আলাইকা আইয়ুহান নাবীয়্যু ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ” এবং দেখা সাক্ষাত হলে “আসসালামুআলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ” বলা।) কিন্তু আপনার প্রতি সালাত পাঠাবার পদ্ধতিটা কি? [দেখুন, তাবারী, কুরতুবী, তাহরীর ওয়া তানওয়ীর] এর জবাবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিভিন্ন লোককে বিভিন্ন সময় যেসব সালাত বা দরূদ শিখিয়েছেন তা বিভিন্নভাবে বর্ণিত হয়েছে। যেমন,
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
আবূ হুমাইদ সায়েদী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, লোকেরা বলল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কিভাবে আপনার প্রতি দরূদ পেশ করব?’ তিনি বললেন, “তোমরা বলো, “আল্লা-হুম্মা স্বাল্লি আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আযওয়া-জিহি অযুর্রিয়্যাতিহি কামা স্বাল্লাইতা আলা আ-লি ইবরা-হীম, অবা-রিক আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আযওয়া-জিহি অযুর্রিয়্যাতিহি কামা বারাকতা আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।”
অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ, তাঁর পত্নীগণ ও তাঁর বংশধরের উপর সালাত পেশ কর; যেমন তুমি ইব্রাহীমের বংশধরের উপর সালাত পেশ করেছ। আর তুমি মুহাম্মদ, তাঁর পত্নীগণ ও তাঁর বংশধরের উপর বরকত বর্ষণ কর যেমন তুমি ইবরাহীমের বংশধরের উপর বরকত বর্ষণ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত গৌরবান্বিত। (বুখারী ও মুসলিম)
সহীহুল বুখারী ২৩৬৯, ৬৩৬০, মুসলিম ৪০৭, নাসায়ী ১২৯৪, আবূ দাউদ ৯৭৯, ইবনু মাজাহ ৯০৫, আহমাদ ২৩০৮৯, মুওয়াত্তা মালিক ৩৯৭
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ
اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْد
[বুখারী ৩৩৭০]
‘আল্লা-হুম্মা স্বাল্লি আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আ-লি মুহাম্মদ, কামা স্বাল্লাইতা আলা আ-লি ইবরা-হীম। ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বা-রিক আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আ-লি মুহাম্মদ, কামা বা-রাকতা আলা আ-লি ইবরা-হীম। ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।’
যার অর্থ, হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ তথা মুহাম্মদের পরিবারবর্গের উপর দরুদ পাঠ করো; যেমন দরূদ পেশ করেছিলে ইব্রাহীমের পরিবারবর্গের উপর। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও অতি সম্মানার্হ। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ ও তাঁর পরিজনবর্গের প্রতি বরকত নাযিল কর; যেমন বরকত নাযিল করেছ ইব্রাহীমের পরিজনবর্গের প্রতি। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও মহা সম্মানীয়।” (বুখারী ও মুসলিম)
اللهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ
[বুখারীঃ ৪৭৯৮]
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الأُمِّيِّ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَآلِ إِبْرَاهِيمَ ، وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الأُمِّيِّ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ [মুসনাদে আহমাদঃ ৪/১১৯
আবূ মুহাম্মদ কা‘ব ইবনে ‘উজরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একদা) আমাদের নিকট এলে। আমরা বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনার প্রতি কিভাবে সালাম পেশ করতে হয় তা জেনেছি, কিন্তু আপনার প্রতি দরূদ কিভাবে পাঠাব?’ তিনি বললেন, “তোমরা বলোঃ-
‘আল্লা-হুম্মা স্বাল্লি আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আ-লি মুহাম্মদ, কামা স্বাল্লাইতা আলা আ-লি ইবরা-হীম। ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বা-রিক আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আ-লি মুহাম্মদ, কামা বা-রাকতা আলা আ-লি ইবরা-হীম। ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।’
যার অর্থ, হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ তথা মুহাম্মদের পরিবারবর্গের উপর দরুদ পাঠ করো; যেমন দরূদ পেশ করেছিলে ইব্রাহীমের পরিবারবর্গের উপর। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও অতি সম্মানার্হ। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ ও তাঁর পরিজনবর্গের প্রতি বরকত নাযিল কর; যেমন বরকত নাযিল করেছ ইব্রাহীমের পরিজনবর্গের প্রতি। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও মহা সম্মানীয়।” (বুখারী ও মুসলিম) সহীহুল বুখারী ৩৩৭০, ৪৭৯৭, ৬৩৫৭, মুসলিম ৪০৬, তিরমিযী ৪৮৩, নাসায়ী ১২৮৭-১২৮৯, আবূ দাউদ ৯৭৬, ই
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ পড়ার ফযীলত সংক্রান্ত অনেক হাদীস রয়েছে। [ফাতহুল কাদীর]।
১। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি আমার প্রতি দরূদ পাঠ করে ফেরেশতারা তার প্রতি দরূদ পাঠ করে যতক্ষণ সে দরূদ পাঠ করতে থাকে।” [মুসনাদে আহমাদ: ৩/৪৪৫, ইবনে মাজাহ: ৯০৭]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্য থেকে কোনো ব্যক্তি তার ছালাতের স্থানে যতক্ষণ বসে থাকবে ততক্ষণ তার ওযু না ভাঙ্গা পর্যন্ত মালাইকারা অর্থাৎ ফেরেশতারা তার উপর সালাত পড়তে থাকে। তারা বলে, হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করে দাও,হে আল্লাহ তার প্রতি দয়া কর।বুখারীঃ ৬৫৯
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা এবং তাঁর মালাকগণ কাতারের ডান পাশের লোকদের উপর সালাত প্রেরণ করেন। আবুদাউদ, হাদিস: ৬৭৬ ইবনে মাজাহ: ১০০৫। (অন্য শব্দে হাসান)
আরো বলেছেন, “যে আমার ওপর একবার দরূদ পড়ে আল্লাহ তার ওপর দশবার দরূদ পড়েন।” [মুসলিম: ৩৮৪]
অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন আমার সাথে থাকার সবচেয়ে বেশী হকদার হবে সেই ব্যক্তি যে আমার ওপর সবচেয়ে বেশী দরূদ পড়বে।” [তিরমিযী: ৪৮৪]
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পড়বে, আল্লাহ তা‘আলা তার উপর দশবার দরূদ পাঠ করবেন, তার দশটি গুণাহ্ ক্ষমা করবেন, আর তার দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন। নাসায়ী: ১২৩০(সহীহ)
উবাই ইবনু কা’ব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনার উপর বেশী বেশী দরূদ পাঠ করি। আমি কত সময় দরূদ পড়ব? তিনি বললেন: যত তোমার মন চায়। আমি বললাম, চতুর্থাংশ? তিনি বললেন: যত মন চায়। তবে আরও বাড়ালে তা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে। আমি বললাম, দুই তৃতীয়াংশ? তিনি বললেন: যত মন চায়। তবে আরও বাড়ালে তা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে। আমি বললাম, আমি আপনার জন্য পুরো সময়েই দরূদ পড়ব। তিনি বললেন: তাহলে তোমার দুশ্চিন্তা দূর হবে এবং তোমার পাপ ক্ষমা হবে। তিরমিযী, হাদিস: ১৯৯৯।(হাদিসটি হাসান)
“আব্দুর রহমান ইবন ‘আওফ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হয়ে এক খেজুর বাগানে প্রবেশ করলেন। অতঃপর দীর্ঘক্ষণ সেজদা করলেন। এমন কি আমাদের ভয় হল তাঁর কোনো মৃত্যু হয়ে গেল নাকি। আমি তাঁকে দেখতে আসলাম তখন তিনি মাথা উঠালেন এবং বললেন: তোমার কি হল? আমি তাঁকে আমাদের ভয়ের কথা ব্যক্ত করলাম। তারপর তিনি বললেন: জিবরীল আলাইহিস সালাম আমাকে বললেন: আমি কি আপনাকে এই সু-সংবাদ দেব না যে, আল্লাহ তা‘আলা বলছেন: “যে ব্যক্তি আপনার উপর দরূপ পাঠ করবে, আমি তার উপর দরূদ পাঠ করব। আর যে ব্যক্তি আপনাকে সালাম করবে আমি তার উপর শান্তি নাযিল করব” আহমদ, হাদিস: ৭ (সহীহ
“আবুদ দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর সকালে দশ বার দরূদ পড়বে এবং সন্ধ্যায় দশবার দরূদ পড়বে, সে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ লাভে ধন্য হবে। ত্বাবরানী: ৬২৩৩ (হাদিসটি হাসান)
দরুদ না পড়লে কি ধরনের গুনাহ বা ক্ষতি হবেঃ
কোন মজলিসে বসেঃ
মুহাম্মদ ইবন বাশশার (রহঃ) …… আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তারা সাক্ষ্য দিয়ে বলেন যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন সম্প্রদায় যখন কোন মজলিসে বসে কিন্তু সেখানে তারা যদি আল্লাহর যিকর না করে এবং তাদের নাবীর উপর দুরুদ পাঠ না করে, তবে তা তাদের জন্য আফসোস ও ক্ষতির কারণ হবে। ইচ্ছা করলে আল্লাহ্ তাদের শস্তি দিবেন আর ইচ্ছা করলে তাদের তিনি মাফ করে দিবেন।
সহীহ, সহীহাহ ৭৪, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৩৮০ [আল মাদানী প্রকাশনী]হাদীসটি হাসান। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একাধিকভাবে এটি বর্ণনা আছে। হাদিসের মানঃ সহিহ
আরো বলেছেন, আমার কথা যে ব্যক্তির সামনে আলোচনা করা হয় এবং সে আমার ওপর দরূদ পাঠ করে না সে কৃপণ। [তিরমিযী: ৩৫৪৬]
আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই অভিশাপ দিলেন যে, “সেই ব্যক্তির নাক ধূলা-ধূসরিত হোক, যার কাছে আমার নাম উল্লেখ করা হল, অথচ সে (আমার নাম শুনেও) আমার প্রতি দরূদ পড়ল না।” (অর্থাৎ ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম’ বলল না।) (তিরমিযী হাসান) তিরমিযী ৩৫৪৫, আহমাদ ৭৪০২
কোন কোন সময় দরুদ পড়ার নির্দেশনা বিশেষভাবে এসেছেঃ
জুমু’আর দিনঃ
আওস ইবনে আওস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের দিনগুলির মধ্যে সর্বোত্তম দিন হচ্ছে জুমুআর দিন। সুতরাং ঐ দিন তোমরা আমার উপর অধিকমাত্রায় দরূদ পড়। কেননা, তোমাদের দরূদ আমার কাছে পেশ করা হয়।” লোকেরা বলল, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি তো (মারা যাওয়ার পর) পচে-গলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন। সে ক্ষেত্রে আমাদের দরূদ কিভাবে আপনার কাছে পেশ করা হবে?’ তিনি বললেন, “আল্লাহ পয়গম্বরদের দেহসমূহকে খেয়ে ফেলা মাটির উপর হারাম করে দিয়েছেন।” (বিধায় তাঁদের শরীর আবহমান কাল ধরে অক্ষত থাকবে।) (আবু দাউদ, বিশুদ্ধ সানাদ) আবূ দাউদ ১০৪৭, ১৫৩১, নাসায়ী ১৩৭৪, ইবনু মাজাহ ১৬৩৬, আহমাদ ১৫৭২৯, দারেমী ১৫৭২
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih) পুনঃনিরীক্ষণঃ রিয়াযুস স্বা-লিহীন (রিয়াদুস সালেহীন)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা আমার কবরকে উৎসব কেন্দ্রে পরিণত করো না (যেমন কবর পূজারীরা উরস ইত্যাদির মেলা লাগিয়ে করে থাকে)। তোমরা আমার প্রতি দরূদ পেশ কর। কারণ, তোমরা যেখানেই থাক, তোমাদের পেশ-কৃত দরূদ আমার কাছে পৌঁছে যায়।” (আবূ দাউদ বিশুদ্ধ সূত্রে) আবূ দাউদ ২০৪২, আহমাদ ৭৭৬২, ৮২৩৮, ৮৫৮৬, ৮৬৯৮, ৮৮০৯
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলার যমীনে বিচরণকারী কিছু ফেরেশতা আছেন, তাঁরা আমার নিকট উম্মতের পক্ষ থেকে প্রেরিত সালাম পৌঁছিয়ে থাকেন। [মুসনাদে আহমদ ১/৪৪১; ইবনে আবী শাইবা ৬/৪৪; সুনানে নাসায়ী ১/১৪৩]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে কোনো ব্যক্তি যখন আমার উপর সালাম পেশ করে, তখন আল্লাহ আমার মধ্যে আমার আত্মা ফিরিয়ে দেন, ফলে আমি তার সালামের জবাব দিই।” (আবূ দাউদ- বিশুদ্ধ সানাদ) আবূ দাউদ ২০৪১, আহমাদ ১০৪৩৪
(এর ধরন আল্লাহই জানেন। অবশ্য এর অর্থ এ নয় যে, তাঁর জবাব কেউ শুনতে পায়।)
আর যে বিষয়ে তোমার জানা নেই তার অনুসরণ করো না। নিশ্চয় কান, চোখ ও অন্তঃকরণ-এদের প্রতিটির ব্যাপারে সে জিজ্ঞাসিত হবে”। ইসরাঃ৩৬
“ফলে যাদের অন্তরে রয়েছে সত্য-বিমুখ প্রবণতা, তারা ফিতনার উদ্দেশ্যে এবং ভুল ব্যাখ্যার অনুসন্ধানে মুতাশাবিহ আয়াতগুলোর পেছনে লেগে থাকে। অথচ আল্লাহ ছাড়া কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা জ্ঞানে পরিপক্ব, তারা বলে, আমরা এ গুলোর প্রতি ঈমান আনলাম, সবগুলো আমাদের রবের পক্ষ থেকে। আর বিবেক সম্পন্নরাই উপদেশ গ্রহণ করে”। সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৭
দু’আ করার পূর্বেঃ
ফাযালা ইবনে উবাইদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি লোককে নামাযে প্রার্থনা করতে শুনলেন। সে কিন্তু তাতে আল্লাহর প্রশংসা করেনি এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরূদও পড়েনি। এ দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “লোকটি তাড়াহুড়ো করল।” অতঃপর তিনি তাকে ডাকলেন ও তাকে অথবা অন্য কাউকে বললেন, “যখন কেউ দো‘আ করবে, তখন সে যেন তার পবিত্র প্রতিপালকের প্রশংসা বর্ণনা যোগে ও আমার প্রতি দরূদ ও সালাম পেশ করে দো‘আ আরম্ভ করে, তারপর যা ইচ্ছা (যথারীতি) প্রার্থনা করে।” (আবু দাউদ, তিরমিযী) আবূ দাউদ ১৪৮১, তিরমিযী ৩৪৭৬, ৩৪৭৭, নাসায়ী ১২৮৪, আহমাদ ২৩৪১৯
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পড়া। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ না পড়া পর্যন্ত যে কোন দোয়া আটকে থাকে”[আল-মুজাম আল-আওসাত (১/২২০), আলবানী ‘সহিহুল জামে’ গ্রন্থে (৪৩৯৯) হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
আজান শুনার পরঃ
“যখন মুয়াজ্জিনের আওয়াজ শ্রবণ কর, তখন তার ন্যায় তোমরাও বল, অতঃপর আমার ওপর দুরূদ পাঠ কর, কারণ আমার ওপর যে একবার দরূদ পাঠ করবে আল্লাহ তার ওপর দশবার দরূদ প্রেরণ করবেন। অতঃপর আমার জন্য উসীলা প্রার্থনা কর, উসীলা জান্নাতের একটি বিশেষ মর্যাদা যার ভাগীদার শুধু একজন বান্দাই হবে, আমি আশা করছি সে ব্যক্তিটি হবো আমিই। আমার জন্য যে ওসিলা প্রার্থনা করবে, তার জন্য আমার শাফা‘আত ওয়াজিব হয়ে যাবে”।সহিহ মুসলিমঃ৩৮৪
মসজিদে প্রবেশের সময় দরূদ পড়া:
মসজিদে প্রবেশ করা ও মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর সালাম প্রেরণ করা সূন্নাত। প্রমাণ:
عَنْ فَاطِمَةَ رَضِي اللهُ عَنْهَا بِنْتِ رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم قَالَتْ: كَانَ رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ الْمَسْجِدَ يَقُوْلُ : بِسْمِ اللهِ وَالسَّلاَمِ عَلَي رَسُوْلِ اللهِ ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذُنُوْبِي ، وَافْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ ، وَإِذاخَرَجَ قَالَ: بِسْمِ اللهِ وَالسَّلاَمُ عَلَي رَسُوْلِ اللهِ ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذُنُوْبِي وَافْتَحْ لِي اَبْوَابَ فَضْلِكَ . (صحيح ، رواه ابن ماجه ، صحيح سنن ابن ماجة للألبانى الجزء الأول(
“ফাতেমা বিনতু মুহাম্মদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মসজিদে প্রবেশ করতেন তখন বলতেন: ‘বিসমিল্লাহি ওয়াসসালামু ‘আলা রাসূলিল্লাহি আল্লাহুম্মাগফিরলী যুনুবী ওয়াফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিকা’
অর্থাৎ, আল্লাহর নামে আমি মসজিদে প্রবেশ করছি, আল্লাহর রাসূলের উপর শান্তি হোক, হে আল্লাহ! আমার গুনাহ ক্ষমা কর এবং আমার জন্য আপনার রহমতের দরজা খোলে দাও।
আর যখন মসজিদ থেকে বের হতেন তখন বলতেন: ‘বিসমিল্লাহি ওয়াস্সালামু আলা রাসূলিল্লাহি আল্লাহুম্মাগফিরলী যুনুবী ওয়াফতাহলী আবওয়াবা ফাদলিকা’
অর্থাৎ, আল্লাহর নামে আমি মসজিদ থেকে বের হচ্ছি, আল্লাহর রাসূলের উপর শান্তি হোক, হে আল্লাহ! আমার গুনাহ ক্ষমা কর এবং আমার জন্য আপনার করুণার দরজা খোলে দাও।
জানাযার সালাতে দরূদ পড়া
জানাযার ছালাতে (নামায) দ্বিতীয় তাকবীরের পর দরূদ পাঠ করা সুন্নাত। প্রমাণ-
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلٍ رَضِي اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم أَنَّ السُّنَّةَ فِي الصَّلاَةِ عَلَى الْجَنَازَةِ أَنْ يُكَبِّرَ الإِمَامُ ثُمَّ يَقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ بَعْدَ التَّكْبِيْرَةِ الأُوْلَى سِرًّا فِي نَفْسِهِ ثُمَّ يُصَلِّي عَلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم وَيُخَلِّص الدُّعَاءَ لِلْجَنَازَةِ فِي التَّكْبِيْرَاتِ وَلاَ يَقْرَأُ فِي شَئْيٍ مِنْهُنَّ ثُمَّ يُسَلِّمْ سِرَّاً فِي نَفْسِهِ . (رواه الشافعي ، مسند الشافعى الباب الثالث والعشرون فى صلاة الجنائز (
“আবু উমামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তাঁকে একজন ছাহাবী বলেছেন, জানাযার ছালাতে (নামায) সূন্নাত হল, প্রথমে ইমাম তাকবীর বলবে। প্রথম তাকবীরের পর চুপে চুপে সূরা ফাতিহা পাঠ করবে, তারপর (দ্বিতীয়) তাকবীর (এর পর) দরূদ পাঠ করবে এবং (তৃতীয় তাকবীরের পর) মৃতের জন্য বিশেষভাবে দো‘আ করবে। কুরআন পাঠ করবে না। তারপর (চতুর্থ তাকবীরের পর) চুপে চুপে সালাম দিবে।
দরূদ শরীফের মাসনূন শব্দসমূহ
আমাদের দেশে নবী সা. এর উপর দরূদ পড়ার বিভিন্ন শব্দ পাওয়া যার অধিকাংশই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত বা স্বীকৃত কোনো দরূদ নয়। এগুলো সবই মনগড়া, বানানো ও জাল হাদিসের বৃত্তিতে আমাদের কাছে পৌছেছে। সুতরাং, এ সব মনগড়া, বানানো ও জাল দরূদ থেকে বিরত থাকতে হবে এবং বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত দরূদের অনুসরণ করতে হবে। নিম্নে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত দরূদের শব্দগুলো দেওয়া হল-
(১)
عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ السَّاعِدِي رَضِي اللهُ عَنْهُ أَنَّهُمْ قَالُوْا: يَا رَسُوْلَ الله صلي الله عليه وسلم كَيْفَ نُصَلّي عَلَيْكَ؟ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلي الله عليه وسلم :قُوْلُوا:
اللَّهُم صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وذُرِّيَتِهِ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلَى مَحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وَذرِّيَتِهِ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلَ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ. (صحيح ، رواه البخاري، كتاب الأنبياء ، باب قول الله تعالى واتخذ الله ابراهيم خليلا( .
“আবু হুমাইদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার উপর দরূদ পড়ব কিভাবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তোমরা বল ‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আযওয়াজিহী ওয়া যুররিয়্যাতিহী কামা ছাল্লাইতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা, ওয়া বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আযওয়াজিহী ওয়া যুররিয়্যাতিহী কামা বারাকতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ’।
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! মুহাম্মদ এবং তাঁর পত্নীগণ ও সন্তানদের প্রতি এমনভাবে দরূদ পাঠ কর যেমনভাবে করেছ ইব্রাহীমের পরিবার-পরিজনের উপর। হে আল্লাহ! মুহাম্মদ এবং তাঁর পত্নীগণ ও সন্তানদের প্রতি এমনভাবে বরকত অবতীর্ণ কর যেমনভাবে করেছ ইব্রাহীমের পরিবার-পরিজনের উপর। নিশ্চয় তুমি মহান এবং সুপ্রশংসিত। বুখারী, হাদিস: ৩৩৬৯
(২)
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى رَضِي اللهُ عَنْهُ قَالَ: لَقِيَنِي كَعْبُ بْنُ عُجْرَةَ رَضِي اللهُ عَيْهُ فَقَالَ: أَلاَ أُهْدِي لَكَ هَدِيَّةً سَمِعْتُها مِنْ النّبى صلي الله عليه وسلم ؟ فَقُلْتُ بَلَى فَأَهْدِهَا لِي! فَقَالَ: سَأَلْنَا رَسُولَ اللهِ كَيْفَ الصَّلاَةُ عَلَيْكُمْ أَهْلِ الْبَيْتِ فَإِنَّ اللهَ قَدْ عَلَّمَنَا كَيْفَ نُسَلِّمُ عَلَيْكَ ؟ قُولُوْا :
اللهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ, اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ. ( صحيح ، رواه البخاري كتاب الأنبياء ، باب قول الله تعالى واتخذ الله ابراهيم خليلا(.
“আব্দুর রহমান ইবনু আবি লায়লা রাহিমাহুল্লাহ বলেন, আমার সাথে কা‘ব ইবনু উজরার সাক্ষাৎ হল, তিনি বললেন: আমি কি সেই হাদিয়াটুকু তোমার কাছে পৌঁছাব না যা আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি? আমি বললাম, অবশ্যই আপনি আমাকে সেই হাদিয়া দেন। তারপর বললেন: আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি এবং আহলে বাইতের উপর কিভাবে সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? কেননা আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে আপনাকে কিভাবে সালাম জানাব তা বলে দিয়েছেন। তিনি বললেন: তোমরা বল: ‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা ছাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ। ‘আল্লাহুম্মা বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা কারাকতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! মুহাম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর এমনভাবে দরূদ পাঠ কর যেমনভাবে করেছ ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর, নিশ্চয় তুমি মহান এবং প্রশংসিত। হে আল্লাহ! মুহাম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর এমনভাবে বরকত দাও যেমনভাবে দিয়েছ ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর। নিশ্চয় তুমি মহান এবং প্রশংসিত। বুখারী, হাদিস: ৩৩৭০।
(৩)
عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَمْرٍو رَضِي اللهُ عَنْهُ أَتَي رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم رَجُلٌ حَتّى جَلَسَ بَيْنَ يَدَيْهِ, فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم أَمَّا السَّلاَمُ عَلَيْكَ فَقَدْ عَرَفَنَاهُ, وَأَمَّا الصَّلاَةُ فَأَخْبِرْنَا بِهَا كَيْفَ نُصَلِّى عَلَيْكَ؟ فَصَمَتَ رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم حَتَّى وَدَدْنَا أَنَّ الرَّجُلَ الَّذِى سَأَلَهُ لَمْ يَسْأَلْهُ. ثُمَّ قَالَ: إِذَا صَلَّيْتُمْ عَلَي فَقُوْلُوا:
اللهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَبىّ الأُمِيِّ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ. (حسن ، رواه إسماعيل القاضي في فضل الصلاة علي النبي صلي الله عليه وسلم ، فضل الصلاة على النبى للألبانى.(
“উকবা ইবনু আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে এসে বসল এবং বলল: ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনাকে কিভাবে সালাম জানাব তা আমরা জানি। তবে আপনার উপর কিভাবে সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তা আমাদের বলে দিন। তখন তিনি চুপ থাকলেন এমনকি আমরা ভাবলাম যদি প্রশ্নকারী প্রশ্ন না করত তাহলে অনেক ভাল হত। তারপর তিনি বললেন: তোমরা আমার উপর সালাত পাঠ করার জন্য বল: ‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিনিন্নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা ছাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিরক্ষর নবী মুহাম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর এমনভাবে দরূদ পাঠ কর যেমনভাবে করেছ ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর নিশ্চয় তুমি মহান এবং প্রশংসিত। ইসমাঈল কাযী, হাদিস: ৫৯ (হাসান)
(৪)
عَنْ أَبِيِ مَسْعُوْدٍ الأَنْصارِيِّ رَضِي اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ: أَتَانَا رَسُولُ للهِ صلي الله عليه وسلم فِي مَجْلِسِ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ رَضِي اللهُ عَنْهُ فَقَالَ لَهُ بَشِيْرُ بْنُ سَعْدٍ: أَمَرَنَا اللهُ عَزَّ وَجَلَّ أَنْ نُصَلِّيَ عَلَيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم فَكَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ؟ فَسَكَتَ رَسُولُ اللهِ صلي الله عليه وسلم حَتَّى تَمَنَّيْنَا أَنَّهُ لَمْ يَسْأَلْهُ ثُمَّ قَالَ: قُوْلُوْا :
الَّلهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آل إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ فَي الْعَالَمِيْنَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ وَالسَّلاَمُ كَمَا عَلَمتمْ. ] صحيح ، رواه مسلم ، كتاب الصلاة ، باب الصلاة على النبى بعد التشهد .[
“আবু মাসউদ আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা সা‘দ ইবনু উবাদার মজলিসে আমাদের কাছে আসলেন। তখন বশীর ইবনু সা‘দ তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন: ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ তা‘আলা আমাদের আদেশ দিয়েছেন যেন আমরা আপনার উপর দরূদ পড়ি। আমরা কিভাবে আপনার উপর সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তখন তিনি চুপ থাকলেন এমনকি আমরা ভাবলাম যদি প্রশ্নকারী প্রশ্ন না করত তাহলে অনেক ভাল হত। তারপর তিনি বললেন: তোমরা বল: ‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা ছাল্লাইতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা, ওয়া বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা ফিল আলামীনা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ’।
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! মুহাম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর এমনভাবে দরূদ পাঠ কর যেমনভাবে করেছ ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর। আর মুহাম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর এমনভাবে বরকত দাও যেমনভাবে পৃথিবীতে দিয়েছ ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর। নিশ্চয় তুমি মহান এবং প্রশংসিত। মুসলিম, হাদিস: ৪০৫।
(৫)
عَنْ أَبِي سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِي اللهُ عَنْهُ قَالَ: قُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم هذَا التَّسْلِيْمُ فَكَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ؟ قَالَ: قُوْلُوْا :
الَّلهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَي آلِ إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَي آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلى إِبْرَاهِيْمَ . (رواه البخاري ، كتاب التفسير ، باب قول الله تعالى إن الله وملائكته يصلون على النبى.(
“আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমরা বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সালাম তো আমাদের জানা আছে। তবে আমরা কিভাবে আপনার উপর সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তখন তিনি বললেন: তোমরা বল: ‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন আব্দিকা ওয়া রাসুলিকা, কামা ছাল্লাইতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা, ওয়া বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা ‘আলা ইবরাহীমা’।
অর্থাৎ হে আল্লাহ! তোমার বান্দা এবং রাসূল মুহাম্মদ এর উপর এমনভাবে দরূদ পাঠ কর যেমনভাবে করেছ ইব্রাহীমের পরিবার-পরিজনের উপর। আর মুহাম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর এমনভাবে বরকত দাও যেমনভাবে দিয়েছ ইব্রাহীম এর উপর। বুখারী, হাদিস: ৪৭৯৮
(৬)
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى رَضِي اللهُ عَنْهُ قَالَ: لَقِيَنِي كَعْبُ بْنُ عُجْرَةَ رَضِي اللهُ عَيْهُ فَقَالَ: أَلاَ أُهْدِي لَكَ هَدِيَّةً ؟ خرج علينا رسول الله فقلنا قد عرفنا كيف نسلم عليك فكيف نصلي عليك ؟ قال : قُولُوْا:اللهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ َعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ, اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ. (صحيح ، رواه مسلم ، كتاب الصلاة ، باب الصلاة على النبى بعد التشهد .(
“আব্দুর রহমান ইবনু আবি লায়লা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমার সাথে কা‘ব ইবনু উজরার সাক্ষাত হল, তিনি বললেন: আমি কি তোমাকে একটি হাদিয়া দেব না? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে আসলেন। আমরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলামঃ আপনাকে কিভাবে সালাম জানাব তা আমরা জানি। তবে আপনার উপর কিভাবে সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তিনি বললেন: তোমরা বল: ‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা ছাল্লাইতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ। ‘আল্লাহুম্মা বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ’।
অর্থাৎ হে আল্লাহ! মুহাম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর এমনভাবে দরূদ পাঠ কর যেমনভাবে করেছ ইব্রাহীমের পরিবার-পরিজনের উপর নিশ্চয় তুমি মহান এবং প্রশংসিত। হে আল্লাহ! মুহাম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর এমনভাবে বরকত দাও যেমনভাবে দিয়েছ ইব্রাহীমের পরিবার-পরিজনের উপর। নিশ্চয় তুমি মহান এবং প্রশংসিত। মুসলিম, হাদিস: ৪০৬ ।
(৭)
عَنْ أَبِي سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِى اللهُ عَنْهُ قَالَ : قُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم السَّلاَمُ عَلَيْكَ قَدْ عَرَفْنَاهُ فَكَيْفَ الصَّلاَةُ عَلَيْكَ؟ قَالَ: قُوْلُوا :
الَّلهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلِى إِبْرَاهِيْمَ . (صحيح ، رواه النسائي ، صحيح سنن النسائى الجزء الأول.(
(৭) আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমরা বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সালাম তো আমাদের জানা আছে। তবে আমরা কিভাবে আপনার উপর সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তখন তিনি বললেন: তোমরা বল: ‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন আব্দিকা ওয়া রাসুলিকা, কামা ছাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা, ওয়া বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা ‘আলা ইবরাহীমা’।
অর্থাৎ হে আল্লাহ! তোমার বান্দা ও রাসূল মুহাম্মদ এর উপর এমনভাবে দরূদ পাঠ কর যেমনভাবে করেছ ইব্রাহীম এর উপর। আর মুহাম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর এমনভাবে বরকত দাও যেমনভাবে দিয়েছ ইব্রাহীম এর উপর। নাসায়ী, হাদিস: ১২২৬।(সহীহ)
(৮)
عَنْ أَبِي سَعِيْدٍ الخُدْرِيِّ قَالَ: قُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم هَذَا السَّلاَمُ عَلَيْكَ قَدْ عَرَفْنَاهُ فَكَيْف الصَّلاَةُ ؟ قَالَ: قُوْلُوْا:
الَّلَهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ. ( صحيح ، رواه ابن ماجة ، صحيح سنن ابن ماجة الجزءالأول .(
“আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমরা বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সালাম তো আমাদের জানা আছে। তবে আমরা কিভাবে আপনার উপর সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তখন তিনি বললেন: তোমরা বল: ‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন আব্দিকা ওয়া রাসুলিকা, কামা ছাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা, ওয়া বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা ‘আলা ইবরাহীমা’।
হে আল্লাহ! তোমার বান্দা ও রাসূল মুহাম্মদ এর উপর এমনভাবে দরূদ পাঠ কর যেমনভাবে করেছ ইব্রাহীম এর উপর। আর মুহাম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর এমনভাবে বরকত দাও যেমনভাবে দিয়েছ ইব্রাহীম এর উপর। ইবনু মাজাহ, হাদিস: ৭৩৬। (সহীহ)
(৯)
عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ السَّاعِدِيِّ رَضِي اللهُ عَنْهُ أَنَّهُمْ قَالُوْا: يَا رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم أُمِرْنَا بِالصَّلاَةِ عَلَيْكَ فَكَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ ؟ فقال : قُوْلُوا:
الَّلهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَتِهِ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَتِهِ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ فِي الْعَالَمِيْنَ,إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ. (صحيح ، رواه ابن ماجة ، صحيح سنن ابن ماجة الجزء الأول(
“আবু হুমাইদ সা‘য়েদী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদেরকে আপনার উপর দরূদ পড়ার আদশ দেওয়া হয়েছে। আমরা কিভাবে আপনার উপর দরূদ পড়ব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তোমরা বল: ‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আযওয়াজিহী ওয়া যুররিয়্যাতিহী কামা ছাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আযওয়াজিহী ওয়া যুররিয়্যাতিহী কামা বারাকতা ‘আলা ইবরাহীমা ফিল আলামীনা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ’।
অর্থাৎ হে আল্লাহ! মুহাম্মদ এবং তাঁর পত্নীগণ ও সন্তানদের প্রতি এমনভাবে দরূদ পাঠ কর যেমনভাবে করেছ ইব্রাহীমের উপর। হে আল্লাহ! মুহাম্মদ এবং তাঁর পত্নীগণ ও সন্তানদের প্রতি এমনভাবে বরকত অবতীর্ণ কর যেমনভাবে করেছ ইব্রাহীমের পরিবার-পরিজনের উপর। নিশ্চয় তুমি মহান এবং প্রশংসিত। ইবনু মাজাহ, হাদিস: ৭৩৮ । (সহীহ
(১০)
عَنْ زَيْدِ بْنِ خَارِجَةَ رَضِي اللهُ عَنْهُ قَالَ: أَنَا سَأَلْتُ رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم فَقَالَ: صَلُّوْا عَلَيَّ وَاجْتَهِدُوْا فِي الدُّعَآءِ وَقُوْلُوْا:
الَّلهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ . (صحيح ، رواه النسائي ، صحيح سنن النسائى الجزء الأول).
“যায়েদ ইবনু খারিজাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বললেন: তোমরা আমার উপর দরূদ পড় এবং অনেক বেশী চেষ্টা করে দো‘আ’ কর। এভাবে বল: ‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন’।
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! মুহাম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর রহমত বর্ষণ কর। নাসায়ী, হাদিস: ১২২৫ (সহীহ)
(১১)
عَنْ مُوْسَى بْنِ طَلْحَةَ رَضِي اللهُ عَنْهُ قَال: أَخْبَرَنِي زَيْدُ بْنُ خَارِجَةَ قَالَ:قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم قَدْ عَلِمْنَا كَيْفَ نُسَلِّمُ عَلَيْكَ فَكَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ ؟ قَالَ صَلُّوْا عَلَيَّ وَقُوْلُوْا:
الَّلهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَآلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ. ( صحيح ، رواه أحمد ، فضل الصلاة على النبى للألبانى(
“মুসা ইবনু ত্বালহা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যায়েদ ইবনু খারিজাহ আমাকে বললেন যে, তিনি বলেছেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনাকে কিভাবে সালাম করব তা আমারা জানি। তবে আপনার উপর সালাত তথা দরূদ কিভাবে পাঠ করব? তখন তিনি বললেন: তোমরা আমার উপর দরূদ পাঠ করতঃ বল: ‘আল্লাহুম্মা বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ’।
অর্থাৎ হে আল্লাহ! মুহাম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর এমনভাবে বরকত দাও যেমনভাবে দিয়েছ ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর। নিশ্চয় তুমি মহান এবং প্রশংসিত। মুসনাদু আহমদ, হাদিস: ৬৮। (সহীহ)
(১২) আল্লা-হুম্মা সাল্লি ওয়াসাল্লিম ‘আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ)
“হে আল্লাহ! আপনি সালাত ও সালাম পেশ করুন আমাদের নবি মুহাম্মাদের উপর।” (বুখারী, ৭/১৬২, নং ১১৬২।)