সালাতে তাসাহহুদ পাঠ

দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নাম

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বিতীয় রাকাআত শেষে তাশহহুদের উদ্দেশ্যে বসতেন। ফজরের ন্যায় দুই রাকাআত বিশিষ্ট ছালাত হলে দুই সাজদার মাঝখানে বসার ন্যায় পা বিছিয়ে বসতেন।বুখারী ও আবু দাউদ

অনুরূপভাবে বসতেন তিন ও চার রাকআত বিশিষ্ট ছালাতের প্রথম বৈঠকেও । নাসাঈ (১/১৭৩) ছহীহ সনদে।

فإذا جلست في وسط الصلاة، فاطمئن، وافترش فخذك اليسرى، ثم تشهد

তুমি যখন ছালাতের মাঝামাঝিতে বসবে তখন প্রশান্তি সহকারে বসবে, বাম উরু বিছিয়ে দিবে। অতঃপর তাশাহুদ পড়বে। আবু দাউদ ও বায়হাকী উত্তম সনদে।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাশাহহুদের জন্য বসলে উরুর উপর ডান হাতের তালু রাখতেন, অন্য এক বর্ণনায় আছে ডান হাঁটুর উপর রাখতেন এবং বাম হাতের তালু স্বীয় উরুর উপর রাখতেন, অপর বর্ণনায় আছে বাম হাঁটুর উপর বিছিয়ে রাখতেন।  মুসলিম

বসা অবস্থায় দৃষ্টি আপন কোলের দিকে থাকবে।(ফৎওয়ায়ে আলমগীরি ১/৭৩ পৃষ্ঠা)।
রাসূল (সা) যখন তাশাহুদের জন্য বসতেন শাহাদত আঙ্গুলের মাধ্যমে কিবলার দিকে ইশারা করতেন এবং সেদিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখতেন।
(ইবনে হিব্বান হা/-১৯৪৭; ইবনে খুযায়ামা হা/-৭১৯, সনদ সহীহ)।

তাশাহুদ পড়া থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত কিংবা শেষ বৈঠকে ছালাম ফিরানো পর্যন্ত ডান হাতের শাহদত আঙ্গুল দ্বারা সর্বদা ইশারা করবে। এ সময় দৃষ্টি থাকবে আঙ্গুলের মাথায়।(নাসাঈ হা/১০৬০,১২৭৫)।

দোয়া পড়ার সময় আঙ্গুলের দৃষ্টি যেন ইশারার বাইরে না যায়। (আহমাদ, আবু দাউদ, মিশকাত হা/৯১১, ৯১৭; নাসাঈ হা/১২৭৫)।
ইশারার সময় আঙ্গুল দ্রুত নড়ানো ঠিক নয়, যা পাশের মুছল্লীর দৃষ্টি কেড়ে নিতে পারে।(মুত্তাফাক আলাইহ, মিশকাত হা/৭৫৭)।

আবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও উক্ত অঙ্গুলিদ্বয় দ্বারা গোলাকৃতি করতেন এবং অঙ্গুলি উঠিয়ে নাড়ানো পূর্বক দুআ করতেন[3] এবং বলতেন। এটি (অর্থাৎ তর্জনী) শয়তানের বিরুদ্ধে লোহা অপেক্ষা কঠিন। (আহমাদ)

বৈঠকে দো’আ পড়ার সময় ডান হাতের আঙ্গুল গুলিকে বন্ধ (খামছার মত মুষ্টি বদ্ধ) রেখে কেবল তর্জনী (শাহাদৎ) আঙ্গুল তুলে রাখতে হবে। ও আঙ্গুল দিয়ে (তাওহীদ বা) ক্বিবলার দিকে ইশারা করতে হবে এবং দৃষ্টিটা আঙ্গুলের উপর রাখতে হবে। (মুসলিম, মিশকাত হা/৯০৬,৯০৭, আহমাদ, মিশকাত হা/৯১৭)।
কখনো বা ডান হাতের কনিষ্ঠা ও অনামিকা আঙ্গুল দু’টি বন্ধ রেখে মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুলিকে মিলিয়ে গোলকার বালার মত বানিয়ে তর্জনী হেলিয়ে (তাওহীদের প্রতি) ইশারা করতে হবে। (মুসলিম, মিশকাত হা/৯০৮, আবু দাউদ, দারেমী, মিশকাত হা/৯১১)।

হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, এই আঙ্গুল অর্থাৎ তর্জনী শয়তানের জন্য লোহার চেয়েও কঠিন। (আহমাদ, বায়হাক্বী, বাযযার)।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক দুরাকাআতে আত্তাহিয়াতু পড়তেন। মুসলিম

তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বসার পর প্রথমে যা বলতেন তা হল আত্তাহিয়াতু।এ হাদীছটি বাইহাকী উত্তম সনদে ‘আয়শা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর বরাতে বর্ণনা করেছেন, যেমনটি বলেছেন ইবনুল মুলকুক্বিন (২৮/২)।

 

প্রথম দু’রাকাতে যদি আত্তাহিয়াতু পড়তে ভুলে যেতেন তাহলে সাহু সাজদাহ দিতেন।বুখারী ও মুসলিম

নামাযে পঠিত বিষয়গুলোর অর্থ ও শিক্ষা—৮(তাসাহহুদ)