সাজদাহ সহু

দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে

প্রশ্ন : ফরজ নামাজে কী ধরনের ভুল হলে সাহু সিজদাহ দিতে হবে?

উত্তর : তিন প্রকার ভুলের কারণে সাহু সিজদাহ দেওয়া ওয়াজিব।

প্রথম কারণ হলো, ফরজ সালাতের মধ্যে যদি কেউ কোনো ওয়াজিব অথবা কোনো ফরজ কাজ অনিচ্ছাকৃতভাবে বৃদ্ধি করে, তাহলে তার ওপর সিজদাহে সাহু আসবে। যেমন : তিনি প্রথমবার রুকু করেছেন, আবার দ্বিতীয়বারও রুকু করে ফেলেছেন অথবা তিনি প্রথমবার সিজদাহ দিয়েছেন, দ্বিতীয়বারও দিয়েছেন, আবার তৃতীয়বারও সিজদাহ দিয়ে ফেলেছেন। বেশি করে ফেলেছেন।

দ্বিতীয় রাকাতে সালাম ফিরিয়ে ফেলেছেন। যদি চার রাকাত নামাজ হয়, তাহলে চতুর্থ রাকাতে সালাম ফেরাবেন।

দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, দ্বিতীয় রাকাতে কেউ যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে বসলেন না, তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন, ওয়াজিব তরফ করলেন না, এই কারণে তিনি সিজদাহে সাহু দেবেন। তাহলে বোঝা গেল, একটি হলো বৃদ্ধির কারণে, অন্যটি হলো ছেড়ে দেওয়ার কারণে।

তৃতীয়টি হলো, কোনো কারণে সালাতের ওয়াজিব ও রোকনের ক্ষেত্রে সন্দেহ তৈরি হলে, তখন এই সন্দেহ দূর করার জন্য তিনি ইয়াকিনের ওপর নির্ভর করবেন। যেমন : সন্দেহ তৈরি হয়েছে, তৃতীয় রাকাত আদায় করেছেন না, দ্বিতীয় রাকাত আদায় করেছেন। তখন তিনি দ্বিতীয় রাকাত ধরে নিয়ে তৃতীয় রাকাত নিশ্চিত করবেন এবং সাহু সিজদাহ দেবেন।

 

প্রশ্ন: জনৈক ব্যক্তির নামাযে সিজদা সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হয়েছে। তিনি শাইখ বিন বাযের ফতোয়ার আলোকে একীনের (নিশ্চিত জ্ঞানের) উপর নির্ভর করে অতিরিক্ত একটি সিজদা দিয়েছেন। সালাম ফেরানোর পর আর কোন সহু সিজদা দেননি। তিনি মনে করেছেন তাকে আর কোন সিজদা দিতে হবে না। তার নামায কি সহিহ হল?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

আলহামদুলিল্লাহ।এক:

যে ব্যক্তি নামাযের সিজদা সংখ্যা নিয়ে সন্দেহে পড়েছেন; অর্থাৎ তিনি কি এক সিজদা দিয়েছেন; না দুই সিজদা দিয়েছেন এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যান তাহলে তিনি একীনের (নিশ্চিত জ্ঞানের) উপর নির্ভর করবেন। একীন হচ্ছে- ছোট সংখ্যাটি হিসাব করা। তাই তিনি শুধু একটি সিজদা দিয়েছেন ধরে নিয়ে দ্বিতীয় সিজদাটি আদায় করবেন। এরপর সালাম ফেরানোর আগে সহু সিজদা দিয়ে নেয়া উত্তম। এটি শাইখ বিন বায (রহঃ) এর অভিমত।

শাইখ বিন বায (রহঃ) বলেন: “আর যদি সন্দেহটি নামাযের মধ্যে হয় তাহলে সে ব্যক্তি একীনের উপর নির্ভর করবে এবং সিজদাটি আদায় করবে। যদি সন্দেহ হয় এক সিজদা দিয়েছে, নাকি দুই সিজদা দিয়েছে তাহলে সে ব্যক্তি দ্বিতীয় সিজদাটি আদায় করবে। এটি প্রথম, কিংবা দ্বিতীয়, কিংবা তৃতীয় কিংবা চতুর্থ যে রাকাতের ক্ষেত্রে হোক না কেন। এরপর সালাম ফিরানোর পূর্বে সহু সিজদা দিবে; যদি সালাম ফিরানোর পরেও দেয় তাতে কোন অসুবিধা নেই। তবে আগে দেয়াই উত্তম”।[শাইখ বিন বাযের ফতোয়াসমগ্র (১১/৩০) থেকে সমাপ্ত]

আর কোন কোন আলেমের মতে, নামাযের কোন রুকন আদায়ে সন্দেহ হওয়া নামাযের রাকাত সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হওয়ার মত। যদি সন্দেহকারীর কাছে কোন একটি সম্ভাবনাকে অগ্রগণ্য মনে না হয় তাহলে সে ব্যক্তি একীনের উপর নির্ভর করবে; একীন হচ্ছে ছোট সংখ্যাটি হিসাব করা। এ অবস্থায় সে ব্যক্তি সালাম ফিরানোর পূর্বে সহু সিজদা আদায় করবে।

আর যদি তার কাছে কোন একটি সম্ভাবনাকে অগ্রগণ্য মনে হয় তাহলে সে ব্যক্তি তার কাছে যে সম্ভাবনাটি অগ্রগণ্য মনে হয় সেটার উপর নির্ভর করে নামায চালিয়ে যাবে এবং সালাম ফিরানোর পূর্বে সহু সিজদা দিবে।

মুরদাওয়ি (রহঃ) বলেন:

“গ্রন্থকারের বক্তব্য: কারো কোন একটি রুকন ছুটে গেছে সন্দেহ হওয়া সে রুকন আদৌ পালন না করার মত এটাই মাযহাবের অভিমত। মাযহাবের অধিকাংশ আলেম এ মতটি গ্রহণ করেছেন। তাদের অনেকে এ মতটিকে অকাট্য বলেছেন। কারো কারো মতে, এ মাসয়ালাটি কোন একটি রাকাত ছেড়ে দেয়ার মাসায়ালার সাথে কিয়াসযোগ্য। তাই সে ব্যক্তি নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করবে এবং প্রবল ধারণার ভিত্তিতে আমল করবে।”[আল-ইনসাফ (২/১৫০) থেকে সমাপ্ত]

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন:

“যদি কারো কোন একটি রুকন ছুটে গেছে সন্দেহ হয় সেটা কোন রুকন ছেড়ে দেয়ার মতই”। অর্থাৎ সে ব্যক্তি যদি সন্দেহ করে যে, সে কি রুকনটি আদায় করেছে নাকি আদায় করেনি তার হুকুম হবে যে ব্যক্তি আদৌ রুকনটি আদায় করেনি সে ব্যক্তির হুকুমের মত। এর উদাহরণ হচ্ছে- কোন মুসল্লি দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়ানোর পর তার সন্দেহ হল সে কি সিজদা দুইটা দিয়েছে নাকি একটা দিয়েছে…? কোন কিছু আদায় না-করার সন্দেহ ঐ কাজটি আদৌ না-করার মত। কারণ কোন কিছু না-করা নিয়ে যখন সন্দেহ হয় তখন সে জিনিসের মূল অবস্থা হচ্ছে— না-করা। কিন্তু তার যদি প্রবল ধারণা হয় যে, সে রুকনটি আদায় করেছে তাহলে অগ্রগণ্য মতানুযায়ী সে প্রবল ধারণার ভিত্তিতে নীতিগতভাবে সে রুকনটি আদায় করেছে ধরা হবে এবং তাকে এ রুকনটি পুনরায় আদায় করতে হবে না। কারণ আমরা ইতিপূর্বে উল্লেখ করেছি যে, যদি কেউ নামাযের সংখ্যা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে তাহলে সে ব্যক্তি তার প্রবল ধারণার উপর নির্ভর করবে। তবে সালাম ফিরানোর পর তাকে সহু সিজদা দিতে হবে।[আল-শারহুল মুমতি (৩/৩৮৪) থেকে সমাপ্ত]

দুই:

আলেমগণ উল্লেখ করেছেন, ভুলক্রমে যে ব্যক্তির সহু সিজদা ছুটে গেছে যদি খুব বেশি বিলম্ব না হয় তাহলে সে তখনি সেটা কাযা করে নিবে। আর যদি দীর্ঘ সময় বিলম্ব হয় তাহলে মুসল্লির উপর থেকে সহু সিজদা আদায় করার দায়িত্ব বাদ যাবে এবং তার নামায সহিহ হবে।

আল-বুহুতি (রহঃ) বলেন:

“কেউ যদি সালামের আগে আদায় করা মুস্তাহাব এমন কোন সহু সিজদা দিতে ভুলে যায়; সে সহু সিজদাটি যদি ওয়াজিব হয় তাহলে সে ব্যক্তি ওয়াজিব হিসেবে এটাকে কাযা করে নিবে। আর যদি অন্য কোন নামায শুরু করে দেয় তাহলে ঐ নামাযের সালাম ফিরানোর পর সহু সিজদা কাযা করবে; যদি এর মধ্যে বেশি বিলম্ব না হয়; ওজু না ভাঙ্গে এবং মসজিদ থেকে বের না হয়। যেহেতু সিজদাটি আদায় করার সময় এখনো আছে। আর যদি প্রথা অনুযায়ী খুব দেরী হয়ে যায়, কিংবা ওজু ছুটে যায় কিংবা মসজিদ থেকে বেরিয়ে যায় তাহলে সহু সিজদা আর কাযা করা যাবে না। যেহেতু এটি আদায় করার সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে। তবে তার নামায শুদ্ধ হবে। যেমন অন্য যে কোন ওয়াজিব ভুলক্রমে পরিত্যাগ করলেও নামায শুদ্ধ হয়।”[মুনতাহাল ইরাদাত (১/২৩৫) থেকে সমাপ্ত]

যে ব্যক্তি এ মাসয়ালার বিধান জানে না এমন ব্যক্তি ও জেনে ভুলকারী উভয়ের জন্য হুকুম অভিন্ন।

ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতোয়া সমগ্র খণ্ড-২ (৬/১০) তে এসেছে-

যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে সহু সিজদা ছেড়ে দেয় তাহলে তার নামায বাতিল হয়ে যাবে এবং তাকে পুনরায় নামায পড়তে হবে। আর যদি ভুলক্রমে কিংবা অজ্ঞতাবশত ছেড়ে দেয় তাহলে তাকে পুনরায় নামায পড়তে হবে না। তার নামায সহিহ।[সমাপ্ত]

শাইখ বিন বায (রহঃ) প্রশ্ন করা হয়েছিল যে,

যদি কেউ নামাযের রাকাতে বেশি করে কিংবা কম করে এবং সহু সিজদা না দেয় তাহলে তার নামায কি বাতিল হয়ে যাবে?

তিনি জবাবে বলেন:

এক্ষেত্রে বিস্তারিত বিশ্লেষণ প্রয়োজন। যদি সে ব্যক্তি সহু সিজদা দেয়ার হুকুম জানার পরও নামাযের মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে সহু সিজদা না দেয় তাহলে তার নামায বাতিল হয়ে যাবে। আর যদি অজ্ঞতাবশত কিংবা ভুলক্রমে সহু সিজদা না দেয় তাহলে তার নামায শুদ্ধ হবে…।[নুরুন আলাদ-দারব ফতোয়াসমগ্র থেকে সংক্ষেপিত ও সমাপ্ত]

আরও জানতে দেখুন 95410 নং ও 134518 নং প্রশ্নোত্তর।

আল্লাহই ভাল জানেন।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

সিজদা সাহু করার সঠিক নিয়ম হচ্ছে – “সালাতে কম বেশি যাই হোক, আত্তাহিয়্যাতু, দরুদ, দুয়া মাসুরা পড়ে তাকবীর দিয়ে পর পর দুটি সিজদাহ দিয়ে সালাম ফিরিয়ে সালাত শেষ করতে হবে।” -বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত, সালাত অধ্যায়, সাহো অনুচ্ছেদ, ১১৮ নাম্বার হাদীস।

অথবা, “সালাতে কম বেশি যাই হোক, সালামের ফেরানোর আগে বা পরে দুইটি (অতিরিক্ত) সাহু সিজদা দিতে হবে।” -সহীহ মুসলিম, নাওয়াতুল আওতার ৩/৪১১।

অর্থাৎ দুইটাই জায়েজ, সালামের আগে বা পরে দুইটা অতিরিক্ত সিজদা দেওয়া।

সালাম ফেরানোর আগে সিজদা সাহু যেভাবে করবেনঃ
সিজদা সাহু দেওয়া ওয়াজিব হয় এমন কোন ভুল করলে, শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ, দুয়া মাসুরা পরে ডানে ও বামে দুইদিকে সালাম ফেরাবেন। এরপরে আল্লাহু আকবার বলে দুইটি সিজদা সাহু দেবেন। দুই সিজদার মাঝখানে বা সিজদাতে তাসসবীহর পরে দুয়া করতে পারবেন। ২টা অতিরিক্ত সিজদা দিয়ে আর কিছু পড়তে হবেনা, আবার ডানে ও বামে দুইদিকেই সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করবেন।

তবে আমার কাছে আত্তাহিয়্যাতু ও দরুদ, দুয়া মাসুরা পড়ে দুইটা সিজদাহ সাহু দিয়ে সবার শেষে একবারে সালাম ফিরানোকেই সহজ মনে হয়, কারো ইচ্ছা হলে এমন বা অন্য নিয়মেও করতে পারেন। কিন্তু আত্তাহিয়্যাতু পড়ে একপাশে সালাম ফিরিয়ে আবার তাশাহুদ পড়ার কোনো সহীহ হাদীস নেই।

“এক পাশে সালাম ফিরানো বিদাত” – বলেছেন হানাফী বড় আলেম ইবনুল হুমাম আল-হানাফী (ফতহুল কাদীর ১/২২২ পৃষ্ঠা)।

সিজদা সাহু যে কারণে দিতে হয়ঃ

খুব কমন যে ভুলগুলো আমরা নামাযের মধ্যে করি সেগুলো ও সিজদা সাহু করার সঠিক নিয়ম বর্ণনা করা হলো –

সিজদা সাহু করার সঠিক নিয়মঃ আপনি ২ রাকাত বা ৪ রাকাতের শেষ বৈঠকে বসবেন। আত্তাহিয়্যাতু পড়ে দুরুদ শরীফ, দুয়া মাসুরা পড়বেন। এর পর কোনো সালাম না ফিরিয়ে আপনি অতিরিক্ত দুইটা সিজদা দিবেন, প্রত্যেকবার তাকবীর দিবেন সিজদার সময়ে আর, সিজদার তাসবীহ সুবহা’না রাব্বিয়াল আ’লা পড়বেন। পরে দুইদিকে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করবেন।

১. ৪ রাকাত নামাযের ১ম বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু না পড়েই দাঁড়িয়ে গেলে কি করবেন?
উত্তরঃ দাড়াতে যাচ্ছেন কিন্তু দাড়ান নি, তাহলে আর দাড়াবেন না, বসেই যাবেন। আত্তাহিয়্যতু পড়ে বাকি নামায পুরা করবেন, কোন সিজদা সাহু দেওয়া লাগবেনা। কিন্তু, দাঁড়িয়ে গেলে আর বসবেন না, বাকি নামায শেষ করে উপরে যেই নিয়মে সিজদা সাহু দিতে বলা হয়েছে সেইভাবে সিজদা সাহু দিয়ে নামায শেষ করবেন।

২. ৪ রাকাত নামাযে ২ রাকাত শেষে সালাম ফিরিয়ে ফেললেন। এমন অবস্থায় আবার দাঁড়িয়ে যাবেন, বাকি দুই রাকাত পূর্ণ করে শেষে সিজদা সাহু দিবেন। এমনকি কেউ যদি উঠে অন্য কোথাও চলে যায় মাঝখানে কথাও বলে তবুও সে ২ রাকাত পড়ে শেষে ২টি সিজদা সাহু দিয়ে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করবেন, নতুন করে ৪ রাকাত আবার পড়তে হবেনা। অনুরূপ ১ রাকাত বা ৩ রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে ফেললেও বাকি ১ রাকাত পড়ে শেষ সেজদা সাহু দিবেন।

৩. ২ বা ৪ রাকাত নামাযে কেউ যদি ভুলে অতিরিক্ত ৩য় বা ৫ম রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যায় তাহলে কি করতে হবে?
উত্তরঃ অতিরিক্ত রাকাত পড়ার আগেই বুঝতে পারে বা রাকাত চলা অবস্থায় মনে পড়ে তাহলে রাকাত পূরণ না করেই বসে যেতে হবে, ইচ্ছা করে অতিরিক্ত ১ রাকাত পড়লে নামায ভেঙ্গে যাবে। বসে তাশাহুদ, দুরুদ, দুয়া মাসুরা পড়ে ২টা অতিরিক্ত সিজদা সাহু দিবেন, প্রত্যেক সিজদায় যাওয়ার আগে ও পরে স্বভাবিক নিয়মে “আল্লাহু আকবার” বলে তাকবীর দিবে। ২টা সিজদা সাহু দিয়ে আবার আত্তাহিয়্যাতু বা অন্য কিছু পড়তে হবেনা। কোনো দুয়া না পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করবেন।

আর অতিরিক্ত রাকাত পড়ার পরে কিন্তু সালাম ফেরানোর আগে মনে হলে একই নিয়মে ২টা সিজদা সাহু দেবেন। আর যদি সালাম ফেরানোর পরে, এমনকি মাঝখানে অন্য কাজ বা কথা বলার পরে মনে পড়ে তাহলে যখনই মনে হবে তখন ওযু অবস্থায় কিবলামুখী হয়ে সরাসরি আল্লাহু আকবার বলে ২টা সিজদা দিবেন, ২টা সিজদা সাহু দিয়ে ডানে বামে সালাম ফেরাবেন, আগে বা পরে কোনো কিছু পড়তে হবেনা।

৪. রুকু দুইবার বা সিজদা তিনবার করে ফেললেন। বাকি নামায পূর্ণ করে শেষে সিজদা সাহু দিবেন।

৫. কোনো এক রাকাতে রুকু, সিজদায় উলটা পাল্টা করলেন অর্থাত দিলেন না, বা সুরা ফাতেহা পড়েন নাই। এইগুলো নামাযের রুকন, এইগুলো ছাড়া এক রাকাত হয় না। এইরকম কোনো রুকন ছুটে গেলে ঐ রাকাত নামাযের মধ্যে গণ্য হয়না। এইজন্য আপনি পুরো নামায বাদ দিবেন না। ধরুন ৪ রাকাত পড়ছেন, তাহলে বাকিগুলো ঠিক থাকবে, আপনি চতুর্থ রাকাতের বৈঠকের পর সালাম না ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে যাবেন, এক রাকাত অতিরিক্ত পড়ে শেষ বৈঠক করে সিজদা সাহু দিবেন।

৬. নামায ২ রাকাত না ৩ রাকাত পড়া হলো সেটা নিয়ে বা কোনো কিছু একটা করেছেন কিনা সন্দেহ দেখ দিলে প্রথম দ্রুত সিদ্ধান্ত নিবেন কোনটা আপনার কাছে বেশি মনে হচ্ছে, ২ রাকাত না ৩ রাকাত। যেটা মনে বেশি জোরালো হবে সেটাকেই ধরবেন আর অন্যটার চিন্তা মাথা থেকে বাদ দিবেন। আপনি এইভাবে নামায পূর্ণ করবেন আর শেষে সিজদা সাহু দিবেন। আর যদি ২ রাকাত না ৩ রাকাত কোনোটার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে না পারেন, তাহলে কম রাকাত অর্থাৎ এই ক্ষেত্রে ২ রাকাত ধরে নামায পূর্ণ করবেন আর শেষে সিজদা সাহু দিবেন।

৭. ১ম/৩য় রাকাতে যদি না দাঁড়িয়ে বসে যান তাহলে কি করবেন?
উত্তরঃ কিছুইনা – মনে হলে দাড়িয়ে যাবেন, বাকি নামায শেষ করবেন কোন সাহু সিজদা লাগবেনা। আর যদি বৈঠক করে ফেলেন অর্থাৎ আত্তাহিয়্যাতু পড়া শেষ তাহলে শেষ বৈঠকে সিজদা সাহু দেবেন। উল্লেখ্য, ১ম ও ৩ইয় রাকাতের ২ সিজদার পরে উঠার আগে সরাসরি না উঠে একটু বসে পরে উঠা সুন্নত – একে প্রশান্তির বৈঠক বলা হয়।

https://islamqa.info/en/answers/77430/when-should-the-prostration-of-forgetfulness-be-done-and-what-should-be-said-in-it