নামাযের নিয়ত

দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে

সালাতের প্রয়োজনীয় বিষয়ঃ

নামাযের নিয়ত

যে কোনও আমলের জন্য নিয়ত জরুরী। নিয়ত ছাড়া কোন ইবাদত বা আমল শুদ্ধ হয় না। মহানবী (সাঃ) বলেন, “আমলসমূহ তো নিয়তের উপরেই নির্ভরশীল।” (বুখারী, মুসলিম,  মিশকাত ১নং)

ইমাম নওবী (রহঃ) বলেন, নিয়ত বলে মনের সংকল্পকে। (যার স্থল হল হৃদয় ও মস্তিষ্ক।) সুতরাং নামাযী নির্দিষ্ট নামাযকে তার মন-মস্তিষ্কে উপস্থিত করবে। যেমন যোহ্‌র, ফরয ইত্যাদি নামাযের প্রকার ও গুণ মনে মনে স্থির করবে। অতঃপর প্রথম তকবীরের সাথে সাথে (মন-মস্তিষ্কে উপস্থিতকৃত কর্ম করার) সংকল্প করবে। (রওযাতুত ত্বালেবীন ১/২২৪, সিফাতু স্বালাতিন নাবী (সাঃ), আলবানী ৮৫পৃ:)

এই সংকল্প করার জন্য নির্দিষ্ট কোন শব্দ শরীয়তে বর্ণিত হয় নি। আরবীতে বাঁধা মনগড়া নিয়ত বা নিজ ভাষায় কোন নির্দিষ্ট শব্দাবলী দ্বারা রচিত নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা বা আওড়ানো বিদআত। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ্‌, সঊদী উলামা-কমিটি ১/৩১৪, ৩১৫) সুতরাং নিয়ত করা জরুরী, কিন্তু পড়া বিদআত।

নিয়তে পরিবর্তন

নামায পড়তে পড়তে যদি নিয়ত পরিবর্তনের দরকার হয়, তাহলে সীমাবদ্ধ কয়েকটি নামাযে তা করা যাবে। যেমন;

ফরয পড়তে পড়তে কারো প্রয়োজন হল তা নফল গণ্য করবে। এরুপ বড়র নিয়ত করে ছোটতে পরিবর্তন করতে পারে। তবে এর জন্য শর্ত এই যে, পরে যেন ঐ ফরয পড়ার মত সময় অবশিষ্ট থাকে।

অনুরুপ নির্দিষ্ট সুন্নত (মুআক্কাদাহ) পড়তে পড়তে যদি কেউ তা সাধারণ নফল গণ্য করতে চায় তাও শুদ্ধ হবে।

পক্ষান্তরে এক ফরয পড়তে পড়তে অন্য ফরযের নিয়ত করা (যেমন, আসর পড়তে পড়তে মনে পড়ল যোহ্‌র কাযা আছে, সুতরাং তখনই যোহরের নিয়ত করে ঐ নামাযটাকে যোহরের ধরে নেওয়া) শুদ্ধ হবে না। উভয় নামাযই বাতিল গণ্য হবে।

 

তদনুরুপ সাধারণ নফল পড়তে পড়তে কোন নির্দিষ্ট সুন্নত বা নফল গণ্য করাও শুদ্ধ হবে না। যেমন কোন নির্দিষ্ট সুন্নত পড়তে পড়তে অন্য কোন নির্দিষ্ট সুন্নতের (যেমন এশার সুন্নত পড়তে পড়তে বিতরের) নিয়ত করা শুদ্ধ নয়। কারণ, শুরু থেকে নির্দিষ্ট নামাযের নিয়ত না হলে পূর্ণ নামায শুদ্ধ হয় না। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্‌হ, ইবনে উষাইমীন ২/২৯৫-২৯৮, ফাতাওয়া ইবনে উষাইমীন ১/৪১৬)

তদ্রুপ ২ রাকআত সুন্নত পড়তে পড়তে ৪  বা ৪ রাকআত পড়তে পড়তে ২ রাকআত সুন্নতের নিয়ত শুদ্ধ নয়।

বলা বাহুল্য, তারাবীহ্‌র নামাযে ভুলে তৃতীয় রাকআতে উঠে গেলে মনে পড়ার সাথে সাথে বসে গিয়ে নামায পূর্ণ করে সহু সিজদাহ করতে হবে। নচেৎ ৪ রাকআতের নিয়ত করে নামায পড়লে তা বাতিল গণ্য হবে। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্‌হ, ইবনে উষাইমীন ৪/১০৯-১১০)