সুন্নাহ বা হাদিস

 

দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে-

সুন্নাহ বা হাদিস যার মাধ্যমে রাসূলের ইত্তেবা করা হয় তার গুরত্ব:

সুন্নাহ শব্দের অর্থ চলার পথ, কর্মের নীতি ও পদ্ধতি। যে পন্থা ও রীতি মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবলম্বন করতেন তাই সুন্নাহ। কুরআনে রাসূলের সর্বোত্তম আদর্শ বলতে সুন্নাহকেই বুঝানো হয়েছে। হাদিসের অপর নাম সুন্নাহ। হাদিস অর্থ কথা, বাণী, সংবাদ, খবর, প্রাচীন ও পুরাতনের বিপরীত।

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কথা, কাজ ও সমর্থনকে হাদিস বলে।

হাদীসের পরিভাষায় আকীদার পরিভাষায় সুন্নাত মানেই হলো শরিয়ত, রাসূল সা এর রীতি পদ্ধতি। রাসূল সা যে কাজ যেভাবে করেছেন সেটা সেভাবে করাই সুন্নাত। ফরযকে ফরয হিসেবে পালন, সুন্নাতকে সুন্নাত হিসেবে, মুস্তাহাবকে মুস্তাহাব এর মতই আমল করা সুন্নাহ। সকল কাজ রাসূলের সুন্নাহ মত করা ফরয।

 

১. সুন্নাহ হল এক প্রকার ওয়াহী:

ওয়াহী দুই প্রকার:

এক- ওয়াহী মাতলু- কুরআন মাজীদ।

দুই- ওয়াহী গাইরে মাতলু। সুন্নাহ বা হাদিস।

সূন্নাহ বা হাদিস ও আল্লাহ তা’আলার পক্ষ হতে প্রেরিত ওহী। আল্লাহ তা’আলা বলেন-

﴿ وَمَا يَنطِقُ عَنِ ٱلۡهَوَىٰٓ ٣ إِنۡ هُوَ إِلَّا وَحۡيٞ يُوحَىٰ ٤ ﴾ [النجم: ٣،  ٤]

“আর সে মনগড়া কথাও বলে না । তাতো ওয়াহী যা তার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়”। সূরা নজম, আয়াত: ৩, ৪

২. সুন্নাহ হল কুরআনের ব্যাখ্যা:

সূন্নাহ হল কুরআনের ব্যাখ্যা। সূন্নাহ বাদ দিয়ে কুরআনের উপর আমল করা বা কুরান বুঝা সম্ভব নয়। যেমন, সালাত কায়েম করা, যাকাত আদায় করা ইত্যাদি আদেশ কুরআনে দেয়া হয়েছে কিন্তু সালাত কীভাবে আদায় করতে হবে এবং যাকাত কি পরিমাণ আদায় করতে হবে, কোন কোন সম্পদের যাকাত দিতে হবে এবং কোন সম্পদের যাকাত দিতে হবে না।

“(তাদের প্রেরণ করেছি) স্পষ্ট প্রমাণাদি ও কিতাবসমূহ এবং তোমার প্রতি নাযিল করেছি কুরআন, যাতে তুমি মানুষের জন্য স্পষ্ট করে দিতে পার, যা তাদের প্রতি নাযিল হয়েছে। আর যাতে তারা চিন্তা করে”।সূরা নাহাল, আয়াত: ৪৪

আর আমি প্রত্যেক রাসূলকে তার কওমের ভাষাতেই পাঠিয়েছি, যাতে সে তাদের নিকট বর্ণনা দেয়, সুতরাং, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সঠিক পথ দেখান। আর তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়”। সূরা ইব্রাহীম, আয়াত: ৪

মালিক ইবনু আনাস (রহঃ) হতে মুরসালরূপে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: “আমি তোমাদের মধ্যে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। যতক্ষণ তোমরা সে দু’টি জিনিস আঁকড়ে থাকবে, পথভ্রষ্ট হবে না: আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের হাদিস”। মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হাদিস: ৩৩৩৮

৩. সুন্নাহ বা হাদিস হল হিকমাহ (প্রজ্ঞা)

আল্লাহ তাআলা  কুরআনে সূন্নাহকে হিকমাহ বলে আখ্যায়িত করেছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন,

﴿ وَأَنزَلَ ٱللَّهُ عَلَيۡكَ ٱلۡكِتَٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَعَلَّمَكَ مَا لَمۡ تَكُن تَعۡلَمُۚ ١١٣ ﴾ [النساء: ١١٣]

“এবং আল্লাহ তোমার প্রতি গ্রন্থ ও হিকমাহ (হাদিস) অবতীর্ণ করেছেন এবং তুমি যা জানতে না, তিনি তাই তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন”। সূরা নিসা, আয়াত: ১১৩

আয়াতে আল্লাহ তা’আলা যেমনিভাবে কুরআন নাযিল করার কথা বলেন, অনুরূপভাবে হিকমাহ অর্থাৎ সূন্নাহ নাযিল করার কথাও বলেন।

“নিশ্চয় আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি অত্যন্ত অনুকম্পা প্রদর্শন করেছেন যখন তাদের নিকট তাদের নিজস্ব একজনকে রাসূল করে পাঠিয়েছেন, সে তাদেরকে আল্লাহর আয়াত পড়ে শোনাচ্ছে, তাদেরকে পরিশোধন করছে, তাদেরকে কিতাব ও হিকমাহ (হাদিস) শিক্ষা দিচ্ছে”। আলে ইমরান, আয়াত: ১৬৪

আল্লাহর আয়াত ও হিকমাহ (হাদিস) এর কথা যা তোমাদের গৃহে পঠিত হয়, তা তোমরা স্মরণ রাখবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি সূক্ষ্মèদর্শী ও সর্ব বিষয়ে অবহিত”। আহযাব: ৩৪

৪.  সুন্নাহর বাইরে যে আমল করা হয়, তা পরিত্যাজ্য।

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رد»

“আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমাদের এ দ্বীনে নতুন কিছু উদ্ভাবন করেছে যা এতে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত”।বুখারি, হাদিস: ২৪৭৯, মুসলিম, হাদিস: ১৭১৮

আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিন ব্যক্তি  রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর স্ত্রীদের নিকট তার ইবাদতের অবস্থা জানার জন্য আসেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ইবাদতের খবর শুনে তারা যেন তার ইবাদতকে কম মনে করলেন। তারা পরস্পর আলাপ করলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর তুলনায় আমরা কী? আল্লাহ তা’আলা তার আগের-পিছের সকল গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন। তাদের একজন বললেন, আমি সারা রাত সালাত আদায় করবো। দ্বিতীয়জন বললেন, আমি দিনে সিয়াম পালন করবো, আর কখনো তা ত্যাগ করবো না। তৃতীয় জন বললেন, আমি নারী থেকে দূরে থাকব, কখনো বিয়ে করবো না। তাদের এই পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার সময় রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এসে পড়লেন এবং বললেন, “তোমরা কি এ ধরনের কথাবার্তা বলেছিলে? খবরদার! আমি আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে বেশী ভয় করি, তোমাদের চেয়ে বেশী তাকওয়া অবলম্বন করি। কিন্তু এরপরও আমি কোন দিন সিয়াম পালন করি আবার কোন দিন সিয়াম পালন ছেড়ে দিই। রাতে সালাত আদায় করি আবার ঘুমও যাই। নারীদেরকে  বিয়েও করি। এটাই আমার পথ। তাই যে ব্যক্তি আমার পথ ছেড়ে দিয়েছে সে আমার ( উম্মতের মধ্যে) গণ্য হবে না”। বুখারি, হাদিস: ৫০৬৩

৫.  সুন্নাহ হল নাজাতের অসীলা, মুক্তির পথ।

সুন্নাহর অনুসরণ করার মধ্যেই নাজাত ও মুক্তি। সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করা ছাড়া নাজাত বা মুক্তি লাভ করা সম্ভব নয়।

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ، حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ، حَدَّثَنَا هِلاَلُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «كُلُّ أُمَّتِي يَدْخُلُونَ الجَنَّةَ إِلَّا مَنْ أَبَى» ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَمَنْ يَأْبَى؟ قَالَ: «مَنْ أَطَاعَنِي دَخَلَ الجَنَّةَ ، وَمَنْ عَصَانِي فَقَدْ أَبَى»

আবূ হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: “আমার সকল উম্মাত জান্নাতে প্রবেশ করবে, কিন্তু যে অস্বীকার করবে সে ব্যতীত। জিজ্ঞেস করা হল, কে অস্বীকার করবে? তিনি বললেন, যারা আমার অনুসরণ করবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে আমার অবাধ্য হবে সে-ই ( জান্নাতে প্রবেশ করতে) অস্বীকার করল”। বুখারি, হাদিস: ৭২৮০

বল, আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর। অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তার উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য সে দায়ী এবং তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরাই দায়ী; এবং তোমরা তার আনুগত্য করলে সৎপথ পাবে, আর রাসূলের কাজ তো কেবল স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া। সূরা নূর, আয়াত: ৫৪

৬. রাসূলের ফায়সালার সামনে মু’মিনের আর কোন এখতিয়ার বা স্বাধীনতা থাকে না। বরং শুনলাম ও মানলাম বলা।

﴿ فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤۡمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيۡنَهُمۡ ثُمَّ لَا يَجِدُواْ فِيٓ أَنفُسِهِمۡ حَرَجٗا مِّمَّا قَضَيۡتَ وَيُسَلِّمُواْ تَسۡلِيمٗا ٦٥ ﴾ [النساء : ٦٥]

“কিন্তু না, তোমার প্রতিপালকের শপথ! তারা মু’মিন হবে না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের বিবাদ-বিসম্বাদের মীমাংসার ভার তোমার উপর ন্যস্ত না করে, অতঃপর তোমার ফয়সালার ব্যাপারে তাদের মনে কিছু মাত্র কুণ্ঠাবোধ না থাকে, আর তারা তার সামনে নিজেদেরকে পূর্ণরূপে সমর্পণ করে”। সূরা নিসা, আয়াত: ৬৫

৭। মু’মিন জীবনের আদর্শ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম):

একজন মুমিনের জন্য রাসূল সা. এর জীবনীর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। আল্লাহর রাসূলই হল একজন মুমীনের অনুকরনীয় আদর্শ।

﴿ لَّقَدۡ كَانَ لَكُمۡ فِي رَسُولِ ٱللَّهِ أُسۡوَةٌ حَسَنَةٞ لِّمَن كَانَ يَرۡجُواْ ٱللَّهَ وَٱلۡيَوۡمَ ٱلۡأٓخِرَ وَذَكَرَ ٱللَّهَ كَثِيرٗا ٢١ ﴾ [الاحزاب : ٢١]

“তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের আশা রাখে আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে”।সূরা আহযাব, আয়াত: ২১

﴿ وَإِنَّكَ لَعَلَىٰ خُلُقٍ عَظِيمٖ ٤ ﴾ [القلم: ٤]

“তুমি অবশ্যই মহান চরিত্রে অধিষ্ঠিত”। সূরা কলম, আয়াত: ৪

৮। আল্লাহর ভালবাসা পাওয়ার মাধ্যম রাসূলের অনুসরণ:

আল্লাহকে ভালোবাসতে হলে, রাসূলের ইত্তেবার কোন বিকল্প নাই। রাসূলের ইত্তেবার মাধ্যমেই আল্লাহর ভালোবাসা লাভ হয়। আল্লাহ তা’আলা বলেন,

﴿ قُلۡ إِن كُنتُمۡ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِي يُحۡبِبۡكُمُ ٱللَّهُ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡۚ وَٱللَّهُ غَفُورٞ رَّحِيمٞ ٣١ ﴾ [ال عمران: ٣١]

“বলে দাও,‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাসো তবে আমার অনুসরণ কর আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের গুনাসমূহ ক্ষমা করবেন, বস্তুত, আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু”।সূরা আল ইমরান, আয়াত: ৩১

৯। কুরআন ও সুন্নাহই সকল সমস্যার সমাধান:

একজন মুমীনের জন্য কুরআন ও সূন্নাহই হল সব সমস্যার সমাধানের মূল।

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَأَطِيعُواْ ٱلرَّسُولَ وَأُوْلِي ٱلۡأَمۡرِ مِنكُمۡۖ فَإِن تَنَٰزَعۡتُمۡ فِي شَيۡءٖ فَرُدُّوهُ إِلَى ٱللَّهِ وَٱلرَّسُولِ إِن كُنتُمۡ تُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِۚ ذَٰلِكَ خَيۡرٞ وَأَحۡسَنُ تَأۡوِيلًا ٥٩ ﴾ [النساء : ٥٩]

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর অনুগত হও এবং রাসূলের অনুগত হও এবং তোমাদের মধ্যকার কর্তৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গেরও ; তবে যদি কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটে, তাহলে সেই বিষয়কে আল্লাহ এবং রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও যদি তোমরা আল্লাহ এবং আখিরাতে ঈমান আন ; এটাই উত্তম এবং সুন্দরতম মর্মকথা”। সূরা নিসা, আয়াত: ৫৯

“তোমার কাছে তারা এমন কোন সমস্যাই নিয়ে আসে না যার সঠিক সমাধান ও সুন্দর ব্যাখ্যা আমি তোমাকে দান করিনি”। সূরা ফুরকান, আয়াত: ৩৩

﴿ وَأَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَلَا تَنَٰزَعُواْ فَتَفۡشَلُواْ وَتَذۡهَبَ رِيحُكُمۡۖ وَٱصۡبِرُوٓاْۚ إِنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلصَّٰبِرِينَ ٤٦ ﴾ [الانفال: ٤٦]

“আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য কর, পরস্পরে ঝগড়া বিবাদ কর না, তা করলে তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলবে, তোমাদের শক্তি-ক্ষমতা বিলুপ্ত হবে। আর ধৈর্য ধারণ করবে, আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন”।সূরা আনফাল, আয়াত: ৪৬

অর্থাৎ নিজেদের আবেগ অনুভূতি ও কামনা-বাসনাকে সংযত রাখো ৷ তাড়াহুড়ো করো না৷ ভীত-আতংকিত হওয়া, লোভ-লালসা পোষণ করা এবং অসংগত উৎসাহ -উদ্দীপনা প্রকাশ থেকে দূরে থাকো৷ স্থির মস্তিস্কে এবং ভারসাম্যপূর্ণ ও যথার্থ পরিমিত বিচক্ষণতা ও ফায়সালা করার শক্তি সহকারে কাজ করে যাও৷ বিপদ-আপোদ ও সংকট -সমস্যার সম্মুখীন হলেও যেন তোমাদের পা না টলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি দেখা দিলে ক্রোধ ও ক্ষোভের তরংগে ভেসে গিয়ে তোমরা যেন কোন অর্থহীন কাজ করে না বসো৷ বিপদের আক্রমণ চলতে থাকলে এবং অবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত দিকে মোড় নিয়েছে দেখতে পেলে মানসিক অস্থিরতার কারণে তোমাদের চেতনা শক্তি বিক্ষিপ্ত ও বিশৃংখল না হয়ে পড়ে৷ উদ্দেশ্য সফল হবার আনন্দে অধীন হয়ে অথবা কোন আধা -পরিপক্ক ব্যবস্থাপনাকে আপাতদৃষ্টিতে কার্যকর হতে দেখে তোমাদের সংকল্প যেন তাড়াহুড়োর শিকার না হয়ে পড়ে৷ আর যদি কখনো বৈষয়িক স্বার্থ, লাভ ও ইন্দ্রিয় সুখভোগের প্ররোচনা তোমাদের লোভাতুর করে তোলে তাহলে তাদের মোকাবিলায় তোমাদের নফস যেন দূর্বল হয়ে স্বতঃস্ফুর্তভাবে সেদিকে এগিয়ে যেতে না থাকে৷ এ সমস্ত অর্থ শুধু একটি মাত্র শব্দ সবর এর মধ্যে নিহিত রয়েছে৷ আল্লাহ বলেছেন এসব দিয়ে যারা সবরকারী হবে তারাই আমার সাহায্য ও সমর্থন পেয়ে ধন্য হবে৷

১০। সহীহ হাদিস যখন আহ্বান করবে, তখন সকলকে সেই আহ্বানে সাড়া দেওয়া জরুরী। সহীহ হাদিসের বিপরীতে কোন দূর্বল হাদিস বা যুক্তির পিছলে আমল করা যাবে না।

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- “আমি যেন তোমাদের মাঝে কাউকে এমন না পাই, সে তার খাটের উপর ঠেস দিয়ে বসে থাকবে। আর আমি যা আদেশ দিয়েছি অথবা যা থেকে নিষেধ করেছি, তা তার কাছে পৌছলে সে তখন বলবে: এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না, আমরা আল্লাহর কিতাবে যা পেয়েছি, তারই অনুসরণ করি”।আহমদ, হাদিস: ২৩৮৭৬; আবুদ দাউদ, হাদিস: ৪৬০৫; ইবনু মাযা, হাদিস: ১৩; তিরমিযি, হাদিস: ২৬৬৩

১১। আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি সর্বোচ্চ ভালবাসা ঈমানী কর্তব্য:

দুনিয়ার সব কিছু হইতে আল্লাহর রাসূলকে সর্বোচ্চ ভালো বাসতে হবে। সকল কিছুর উপর রাসূলের ভালোবাসাকে প্রাধ্যান্য দিতে হবে।

عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ، حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ»

আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: “তোমাদের মধ্যে কেউ মু’মিন হতে পারবে না , যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার কাছে তার পিতা, তার সন্তানাদি এবং সকল মানুষ হতে বেশী প্রিয় না হবো”।বুখারি, হাদিস: ১৬

১২। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সুন্নাহ শাশ্বত ও চিরন্তন। তাঁর শরীয়ত পূর্বের সমস্ত শরীয়তকে রহিত বা বাতিল করেছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত তা রহিত থাকবে।

فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ” والذي نفس محمد بيده لو بدا لكم موسى فاتبعتموه وتركتموني لضللتم عن سواء السبيل ولو كان حيا وأدرك نبوتي لاتبعني )  رواه الدارمي

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- “আল্লাহর কসম, যার হাতে মুহাম্মাদের জীবন। যদি মুসা আ: তোমাদের মাঝে প্রকাশ পেতেন তাহলে তোমরা তার আনুগত্য করতে আর আমাকে ত্যাগ করতে,ফলে তোমরা সহজ -সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে যেতে। অথচ মুসা আ: যদি এখন জীবিত থাকতেন ও আমার নবুওতের কাল পেতেন তাহলে তিনি নিশ্চিত আমার আনুগত্য করতেন”। দারমী হাদিসি: ৪৪৯

সুনান আদ-দারেমী ( আরবি: سنن الدارمي‎‎ ) অথবা মুসনাদ আদ-দারেমী ( আরবি: مسند الدارمي‎‎) হল আবদুল্লাহ ইবনে আব্দুল রহমান আদ-দারিমী(১৮১ হি-২৫৫ হি) দ্বারা সংগ্রহীত একটি হাদীস সংকলন: সুন্নিদের মধ্যে প্রসিদ্ধ ৯টি হাদিস গ্রন্থের মধ্যে এটি একটি, যেখানে বাকি ৮টি গ্রন্থ হচ্ছে; ৬টি কুতুব আল-সিত্তাহ, আল-মুওয়াত্তা ও মুসনাদে ইমাম আহমদ ।

১৩। যখন কোন সূন্নাত বিলুপ্ত হয়ে যায়, তার উপর মানুষকে উদ্ভুদ্ধ করা এবং তার উপর আমল করার ফযীলত অনেক।

রাসূল সা. বলেন,

مَنْ أَحْيَا سُنَّةً مِنْ سُنَّتِي، فَعَمِلَ بِهَا النَّاسُ، كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ مَنْ عَمِلَ بِهَا، لَا يَنْقُصُ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا، وَمَنْ ابْتَدَعَ بِدْعَةً، فَعُمِلَ بِهَا، كَانَ عَلَيْهِ أَوْزَارُ مَنْ عَمِلَ بِهَا، لَا يَنْقُصُ مِنْ أَوْزَارِ مَنْ عَمِلَ بِهَا شَيْئًا

“যে ব্যক্তি আমার একটি (মৃত) সুন্নাত জীবিত করে এবং লোকেরা তদনুযায়ী আমল করে, সেও আমল কারীর অনুরূপ পুরস্কার পাবে। এতে আমলকারীর পুরস্কার কিছুমাত্র কম হবে না। অপরদিকে যে ব্যক্তি কোন বিদআতের উদ্ভাবন করে এবং সে অনুযায়ী আমল করা হয়, তার উপর আমলকারীর পাপের বোঝার অনুরূপ বোঝা বর্তাবে। এতে আমলকারীর পাপের পরিমাণ কিছুই কমানো হবে না”। ইবনু মাযাহ, হাদিস: ২০৯

১৪। যারা আল্লাহ ও রাসূল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে, তারা মু‘মিন নন। বরং তারা মুনাফিক, যালিম, কাফির।

আল্লাহ তা’আলা তাদের সম্পর্কে বলেন,

﴿ وَيَقُولُونَ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَبِٱلرَّسُولِ وَأَطَعۡنَا ثُمَّ يَتَوَلَّىٰ فَرِيقٞ مِّنۡهُم مِّنۢ بَعۡدِ ذَٰلِكَۚ وَمَآ أُوْلَٰٓئِكَ بِٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٤٧ ﴾ [النور : ٤٧]

“তারা বলে- আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলাম আর রাসূলের প্রতিও আর আমরা মেনে নিলাম। কিন্তু এরপরও তাদের মধ্যকার একদল মুখ ফিরিয়ে নেয়, তারা মু’মিন নয়”। সূরা নূর, আয়াত: ৪৭

﴿ وَإِذَا دُعُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ لِيَحۡكُمَ بَيۡنَهُمۡ إِذَا فَرِيقٞ مِّنۡهُم مُّعۡرِضُونَ ٤٨ ﴾ [النور : ٤٨]

“তাদেরকে যখন তাদের মাঝে ফায়সালা করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ ও তার রাসূলের পানে আহ্বান করা হয়, তখন তাদের একদল মুখ ফিরিয়ে নেয়”। সূরা নূর, আয়াত: ৪৭

আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন,

﴿ وَإِذَا قِيلَ لَهُمۡ تَعَالَوۡاْ إِلَىٰ مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ وَإِلَى ٱلرَّسُولِ رَأَيۡتَ ٱلۡمُنَٰفِقِينَ يَصُدُّونَ عَنكَ صُدُودٗا ٦١ ﴾ [النساء : ٦١]

“যখন তাদেরকে বলা হয়-তোমরা আল্লাহর অবতীর্ণ হুকুমের এবং রাসূলের দিকে এসো,তখন তুমি ঐ মুনাফিকদের দেখবে, তারা তোমার কাছ থেকে ঘৃণা ভরে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে”।সূরা নিসা, আয়াত: ৬১

﴿كَيۡفَ يَهۡدِي ٱللَّهُ قَوۡمٗا كَفَرُواْ بَعۡدَ إِيمَٰنِهِمۡ وَشَهِدُوٓاْ أَنَّ ٱلرَّسُولَ حَقّٞ وَجَآءَهُمُ ٱلۡبَيِّنَٰتُۚ وَٱللَّهُ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّٰلِمِينَ ٨٦ ﴾ [ال عمران: ٨٦]

“আল্লাহ কীরূপে সেই সম্প্রদায়কে সুপথ দেখাবেন যারা ঈমান আনার পর, এ রাসূলকে সত্য বলে স্বীকার করার পর এবং তাদের নিকট সুস্পষ্ট দলীল আসার পর কুফরি করে? বস্তুত: আল্লাহ যালিম কওমকে পথ দেখান না”।আলে ইমরান, আয়াত: ৮৬

﴿ قُلۡ أَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَۖ فَإِن تَوَلَّوۡاْ فَإِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلۡكَٰفِرِينَ ٣٢ ﴾ [ال عمران: ٣٢]

“বল, ‘তোমরা আল্লাহর ও রাসূলের আজ্ঞাবহ হও’। অতঃপর যদি তারা না মানে, তবে জেনে রেখ, আল্লাহ কাফিরদেরকে ভালবাসেন না”।আলে ইমরান, আয়াত: ৩২

১৫। আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের পথ অবলম্বন করুন। রাসূলের পথ বাদ দিয়ে শয়তানের পথে চলার পর অনুশোচনা, কোন কাজে আসবে না।

সুতরাং সময় থাকতে তওবা করে কুরআন ও সহীহ হাদিসের দিকে আসুন। আল্লাহ তা’আলা বলেন,

﴿ وَيَوۡمَ يَعَضُّ ٱلظَّالِمُ عَلَىٰ يَدَيۡهِ يَقُولُ يَٰلَيۡتَنِي ٱتَّخَذۡتُ مَعَ ٱلرَّسُولِ سَبِيلٗا ٢٧ ﴾ [الفرقان: ٢٧]

“যালিম সেদিন আপন হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি রাসূলের সাথে পথ অবলম্বন করতাম”। সূরা ফুরকান, আয়াত: ২৮

১৬। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণ যেরূপ হওয়া উচিত:

فَقَالَ لَهُ عَبْدُ اللَّهِ: «إِنَّ اللَّهَ بَعَثَ إِلَيْنَا مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَا نَعْلَمُ شَيْئًا، فَإِنَّمَا نَفْعَلُ كَمَا رَأَيْنَا مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَفْعَلُ

সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. বলেন: “আল্লাহ তা’আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমাদের নিকট প্রেরণ করেছেন, আমরা কিছুই জানতাম না। আমরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যে রূপ করতে দেখি, আমরাও সেরূপ করি”।ইবনু মাযা, হাদিস: ১০৬৬ আলবানী রহ. হাদিসটিকে সহীহ লি গাইরিহি বলে আখ্যায়িত করেন।

كَانَ ابْنُ عُمَرَ :إِذَا سَمِعَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثًا لَمْ يَعْدُهُ، وَلَمْ يُقَصِّرْ دُونَهُ»

ইবনে উমার রা. যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কোন হাদিস শুনতেন, তাতে তিনি কোন কিছু বাড়াতেন না এবং তা থেকে কিছু কমাতেন না।ইবনু মাযা, হাদিস: ৪ আলবানী রহ. হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন।

عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: اتَّخَذَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَاتَمًا مِنْ ذَهَبٍ، فَاتَّخَذَ النَّاسُ خَوَاتِيمَ مِنْ ذَهَبٍ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنِّي اتَّخَذْتُ خَاتَمًا مِنْ ذَهَبٍ» فَنَبَذَهُ، وَقَالَ: «إِنِّي لَنْ أَلْبَسَهُ أَبَدًا» ، فَنَبَذَ النَّاسُ خَوَاتِيمَهُمْ

ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি সোনার আংটি পরতেন। তখন লোকেরাও সোনার আংটি পড়তে লাগল। এরপর (একদিন) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: আমি সোনার আংটি পরছিলাম-তারপর তিনি তা ছুঁড়ে ফেলে দিলেন এবং বললেন: আমি আর কোন দিনই তা পরব না। ফলে লোকেরাও তাদের আংটিগুলো ছুঁড়ে ফেলল”। বুখারি, হাদিস নং ৭২৯৮

 

عَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّهُ جَاءَ إِلَى الحَجَرِ الأَسْوَدِ فَقَبَّلَهُ، فَقَالَ: «إِنِّي أَعْلَمُ أَنَّكَ حَجَرٌ، لاَ تَضُرُّ وَلاَ تَنْفَعُ، وَلَوْلاَ أَنِّي رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَبِّلُكَ مَا قَبَّلْتُكَ»

উমার রা. হতে বর্ণিত যে, তিনি হাজরে আসওয়াদের কাছে এসে তা চুম্বন করে বললেন, “আমি অবশ্যই জানি যে, তুমি একখানা পাথর মাত্র, তুমি কারও কল্যাণ বা অকল্যাণ করতে পার না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তোমায় চুম্বন করতে না দেখলে কখনো আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না”।বুখারি, হাদিস: ১৫৯৭

আওফ ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-ইয়াহুদী জাতি ৭১ দলে বিভক্ত হয়েছিল। একদল জান্নাতী আর ৭০ দল জাহান্নামী। খ্রিস্টানরা ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছিল। ৭১ দল জাহান্নামী আর একদল জান্নাতী। সেই মহান সত্তার শপথ, যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ, অবশ্যই আমার উম্মাত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। একটি দল হবে জান্নাতী। আর ৭২টি দল হবে জাহান্নামী। বলা হল, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কারা জান্নাতী ? তিনি বললেন: আল জামায়াত (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবীদের জামায়াত)। ইবনু মাযাহ, হাদিস: ৩৯৯২

 

সুন্নাতের অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলী:

হাদীস গ্রন্থ:

১.  বুখারী, মুহাম্মদ ইবনু ইসমাঈল: আস-সহীহ

২.  ফাতহুল বারী ফী শারহিল বুখারী

৩.  মুসলিম ইবনু হাজ্জাজ: আস-সহীহ

৪.  আল মিনহাজ্জ ফি শারহু সহীহ মুসলিম

৫.  আবু দাউদ: আস-সুনান

৬.  আবু দাউদ: শারহু আওনুল মাবুদ

৭.  ইবনু মাজাহ: আস-সুনান

৮.  তিরমিযী: জামি তিরমিযী-আস-সুনান

৯.  তিরমিযী: শারহু তুওফাতুল আহওয়াযী

১০. নাসাঈ: আস-সুনান,

১১. ইবনু খুযাইমা: আস-সহীহ

১২. ইবনু হিব্বান: আস-সহী

১৩. হাকিম নাইসাপুরী: আল মুসতাদরাক

১৪. বাইহাকী: আস-সুনানুল কুবর

১৫. রিয়াদুস সালেহীন

১৬. তালখীসুল হাবীর

১৭. বুলুগুল মারা

১৮. সুবুলুস সালাম

১৯. মাযমাউয যাওয়ায়েদ-হাইসামী ৭৩৫-৮০৭ হি

২০. ইরওয়াউল গালীল -আলবানি

২১. সিলসিলাতুল আহাদীসিস যাঈফাহ- আলবানি

২২. সিলসিলাতুল আহাদীসিস সাহীহাহ- আলবানি

ফিকহী গ্রন্থ:

২৩. আল মুহাল্লা -ইবনু হাযম ৪৫৬ হি

২৪. আল-মুগনী -ইবনে কুদামা

২৫. আল মাজমু -নব্বী, ইয়াহইয়া ইবনু শারাফ -২০খন্ড

২৬. মাজমূ’উ ফাতাওয়া -ইমাম ইবনু তাইমিয়া -৩৭ খন্ড

২৭. যাদুল মা‘আদ- ইমাম ইবনূল কাইয়্যেম -৫খন্ড

২৮.        নাইলুল আওতার -শাওকানী

২৯. মাজমূআ ফাতাওয়া বিন বায-শাইখ আবদুল আযীয বিন বায

৩০. মাজমূআ ফাতাওয়া ওয়া রাসায়েল ২৬ খন্ড – মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন

৩১. আশ-শারহু মুমতা‘আ আলা যাদুল মুসতাক্বনি ১৫ খন্ড- মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন

৩২. ফিকহুস সুন্নাহ -সাইদ সাবিক (তাহক্বীক তামামুল মিন্নাহ-আলবানী)

৩৩. সহীহ ফিকহুস সুন্নাহ- আবু মালিক কামাল বিন সাইদ সালিম-৪ খন্ড

৩৪. আল ফিকহ আলাল মাজাহিবিল আর-বাআ

৩৫. বিদাআতুল মুজতাহিদ-ইবনে রুশদ

৩৬. ফাতাওয়া ইসলামিয়া

৩৭. ফাতাওয়া লাজনা আদ দায়েমা

৩৮.        আল মাওসুআতু ফীকহীয়া কুয়েতীয়া-৪৫ খন্ড

আক্বীদা:

৩৯. শারহু আক্বীদাতুল ওয়াসীতিয়া – ইবনে ওসাইমিন

৪০. আল কাওলুল মুফিদ আলা শারহু কিতাবিত তাওহীদ- ইবনে ওসাইমিন

তাফসীরুল কুরআন:

৪১. আল-জামে লি আহকামুল কুরআন-কুরতুবি ৬৭১ হি

৪২. তাফসীর আল-কুরআন আল-আযীম-ইমাম ইবনু কাসীর ইসমাঈল ইবনু উমার ৭০১-৭৭৪ হি

৪৩. তাফসীরে ফাতহুল কাদীর -শাওকানী ১১৭২-১২৫৫ হি

হাদীসের রাবীদের জীবনী-রিজাল শাস্ত্র: সহীহ ,হাসান, যঈফ, জাল নির্ণয়

৪৪. মীযানুল ইতিদাল-ইমাম যাহাবী, মুহাম্মদ ইবনু আহমাদ ৬৭৩-৭৪৮ হি:

৪৫. লিসানুল মিযান-হাফিজ ইবনু হাজার আসকালানী ৭৭৩-৮৫২ হি

৪৬. তাকরীবুত তাহযীব-হাফিজ ইবনু হাজার আসকালানী

৪৭. তাহযীবুত তাহযীব-হাফিজ ইবনু হাজার আসকালানী

 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনী:

৪৮. আর রাহীকুল মাখতূম -সফিউর রহমান মুবারকপুরী

আরবী অভিধান:

৪৯. আলকামুসুল মুহীত্ব-আল ফিরোযাবাদী ৭২৯-৮১৭ হি

৫০. লিসানুল আরব -ইবনু মানযুর ৬৩০-৭১১ হি

লেখকঃ জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের | সম্পাদনা : ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী