লাইলাতুল ক্বদর
(আরবি: لیلة القدر) আরবিতে লাইলাতুল কদর। এর অর্থ অতিশয় মহিমান্বিত ও সম্মানিত রাত বা পবিত্র রজনী। আরবি ভাষায় ‘লাইলাতুন’ অর্থ হলো রাত্রি এবং ‘কদর’ শব্দের অর্থ সম্মান, মর্যাদা। এ ছাড়া এর অন্য অর্থ হলো—ভাগ্য, পরিমাণ ও তাকদির নির্ধারণ করা। এ রাতে মুসলমানদের সম্মান বৃদ্ধি করা হয় এবং মানবজাতির ভাগ্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়। তাই এই রাত অত্যন্ত পুণ্যময় ও মহাসম্মানিত হিসেবে পরিচিত।
power point presentation——–
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে
اِنَّاۤ اَنۡزَلۡنٰهُ فِیۡ لَیۡلَۃِ الۡقَدۡرِ
১। নিশ্চয় আমরা কুরআন নাযিল করেছি লাইলাতুল ক্বদরে
وَ مَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا لَیۡلَۃُ الۡقَدۡرِ
২। আর আপনাকে কিসে জানাবে লাইলতুল ক্বদর কী?
لَیۡلَۃُ الۡقَدۡرِ ۬ۙ خَیۡرٌ مِّنۡ اَلۡفِ شَهۡرٍ
৩। লাইলাতুল ক্বদর হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।
تَنَزَّلُ الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَ الرُّوۡحُ فِیۡهَا بِاِذۡنِ رَبِّهِمۡ ۚ مِنۡ کُلِّ اَمۡرٍ
৪। সে রাতে ফিরিশতাগণ ও রূহ নাযিল হয় তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে।
سَلٰمٌ ۛ هِیَ حَتّٰی مَطۡلَعِ الۡفَجۡرِ
৫। শান্তিময় সে রাত, ফজরের আবির্ভাব পর্যন্ত।
ক্বদর রাতের মর্যাদা ও কল্যান
মহান রব ক্বদর রাতের পরিচয় ও মর্যাদা সুরা আল ক্বদরেই জানিয়েছেন.
১। এই রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।
لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ
“লাইলাতুল ক্বদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।”(সূরা ক্বদর: ৩)
২। এই রাত বরকতপূর্ণ রাত।
إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ
“নিশ্চয় আমি ইহা (কুরআন)কে অবতীর্ণ করেছি একটি বরকতময় রাতে।”( দুখান: ৩)
৩। এই রাত সম্মানিত কারন কুর’আন নাযিল হয়েছে।
اِنَّاۤ اَنۡزَلۡنٰهُ فِیۡ لَیۡلَۃِ الۡقَدۡرِ
“আমি একে (কুরআন) অবর্তীণ করেছি লাইলাতুল ক্বদরে।”(সূরা ক্বদর: ১)
৪। এই রাতে জিবরাইল আ. সহ ফেরেশতারা দুনিয়াতে অবতীর্ণ হন
تَنَزَّلُ الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَ الرُّوۡحُ
ঐ রাত্রিতে ফিরিশতাগণ ও রূহ (জিবরীল) অবতীর্ণ হয়, (সূরা ক্বদর: ৪)
৫। এই রাতে ভাগ্য নীতিমালা ফেরেশতাদের কাছে অর্পন করা হয়।
فِیۡهَا بِاِذۡنِ رَبِّهِمۡ ۚ مِنۡ کُلِّ اَمۡرٍ
তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে।(সূরা ক্বদর: ৪)
৬। এই রাত পুরুপুরি শান্তি ও নিরাপদ
سَلٰمٌ ۟ۛ هِیَ حَتّٰی مَطۡلَعِ الۡفَجۡرِ
শান্তিময়, সেই রাত্রি ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত।(সূরা ক্বদর: ৫)
৭। এই রাত পূর্বের সকল সগিরা গোনাহ মাফ পাওয়ার সুযোগ
“যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াবের আশায় লাইলাতুল ক্বদরে রাত জাগরণ করে নফল নামায ও ইবাদত বন্দেগী করবে তার পূর্বের সকল (ছোট) গুনাহ মোচন করে দেয়া হবে।” সহীহ বুখারী
ইবাদত হচ্ছে, প্রত্যেক এমন আন্তরিক ও বাহ্যিক কথা ও কাজ যা, আল্লাহ পছন্দ করেন এবং তাতে সন্তুষ্ট থাকেন। [মাজমুউ ফাতাওয়া,১০/১৪৯]
৮। এ রাত সকল কল্যান ও বরকত লাভের।
রাসূল সা: বলেন- ‘যে ব্যক্তি এ রাত থেকে বঞ্চিত হবে সে সমগ্র কল্যাণ ও বরকত হতে বঞ্চিত হবে। এর কল্যাণ থেকে একমাত্র হতভাগ্য লোক আর কেউ বঞ্চিত হয় না।’ (মিশকাত)
কোন রাতটি লাইলাতুল কদর?
*** সহিহ হাদীসে বিভিন্ন রাতকে উল্লেখ হয়েছে।
রাসূলে কারীম সা কে লাইলাতুল কদর কোন রাত তা জানানো হয়েছিল। তিনি তা সাহাবীদেরকে জানানোর জন্য আসছিলেন, কিন্তু ঘটনাক্রমে সেখানে দুই ব্যক্তি ঝগড়া করছিল। তাদের ওই ঝগড়ার কারণে রাসূলুল্লাহ সা এর নিকট থেকে সে রাতের ইলম উঠিয়ে নেওয়া হয়। এ কথাগুলো সাহাবীদেরকে জানানোর পর নবী সা বললেন- হতে পারে, এতেই তোমাদের জন্য কল্যাণ রয়েছে। এখন তোমরা এ রাত (অর্থাৎ তার বরকত ও ফযীলত) রমযানের শেষ দশকে অন্বেষণ কর। সহীহ বুখারীঃ ২০২০, সহীহ মুসলিম ১১৬৫/২০৯
দুটি বিষয়ে সকলেই একমত, আর তা হলো-
- এ রাতটি রমযান মাসে।
- এ রাতটি রমাযানের শেষ দশকে।
‘রমাযানের শেষ দশদিনে তোমরা কদরের রাত তালাশ কর। (বুখারী : ২০২০; মুসলিম : ১১৬৯)
- আর এটি রমযানের বেজোড় রাতে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
تَحَرُّوْا لَيْلَةُ الْقَدْرِ فِي الْوِتْرِ مِنَ الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ
‘তোমরা রমাযানের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে কদরের রাত খোঁজ কর (বুখারী : ২০১৭)
- এ রাত রমযানের শেষ সাত দিনে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
فَمَنْ كَانَ مُتَحَرِّيْهَا فَلْيَتَحَرِّهَا فِي السَّبْعِ الأَوَاخِرِ
‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর (কদরের রাত) অন্বেষণ করতে চায়, সে যেন রমাযানের শেষ সাত রাতের মধ্য তা অন্বেষণ করে। (বুখারী : ২০১৫; মুসলিম : ১১৬৫)
নিচের হাদীসগুলোর ব্যপারে আলেমগন বলেছেন- নির্দিষ্ট এই তারিখটি যা সাহাবা রা বলেছেন সেটা সেই বছরের জন্য ছিলো বিধায় এতো বলিষ্ঠভাবে বলেছেন।
ক. উবাই ইবনে কাব হতে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, তিনি বলেন যে,
وَاللهِ إِنِّيْ لأَعْلَمُ أَيُّ لَيْلَةٍ هِيَ اللَّيْلَةُ الَّتِيْ أَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ –صلى الله عليه وسلم– بِقِيَامِهَا هِىَ لَيْلَةُ سَبْعٍ وَعِشْرِيْنَ
আল্লাহর শপথ করে বলছি, আমি যতদূর জানি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে যে রজনীকে কদরের রাত হিসেবে কিয়ামুল্লাইল করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তা হল রমাযানের ২৭ তম রাত। (মুসলিম : ৭৬২)
(খ) আব্দুল্লাহ বিন ‘উমার থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন
مَنْ كَانَ مُتَحَرِّيْهَا فَلْيَتَحَرِّهَا لَيْلَةَ السَّبْعِ وَالْعِشْرِيْنَ
‘যে ব্যক্তি কদরের রাত অর্জন করতে ইচ্ছুক, সে যেন তা রমাযানের ২৭শে রজনীতে অনুসন্ধান করে। (আহমাদ : ২/১৫৭)
* এ রজনীটি স্থানান্তরশীল। অর্থাৎ প্রতি বৎসর একই তারিখে বা একই রজনীতে তা হয় না এবং শুধুমাত্র ২৭ তারিখেই এ রাতটি আসবে তা নির্ধারিত নয়। আল্লাহর হিকমত ও তাঁর ইচ্ছায় কোন বছর তা জোড় বা বেজোড় বা শেষ দশকের কোন এক রাতে হবে।
যে রাতটি লাইলাতুল কদর হবে সেটি বুঝার কিছু আলামত হাদীসে বর্ণিত আছে। সেগুলো হল :
আবু সালামা র. বলেছেন, আমি আবু সাঈদকে, যিনি আমার বন্ধু ছিলেন, এক প্রশ্ন করলাম। তিনি জবাব দিলেন, আমরা নবী সা.এর সঙ্গে রামাদানের মধ্যের দশদিনে ই’তেকাফে বসলাম। অতঃপর বিশ তারিখের ভোরে নবী সা. বেরিয়ে আসলেন, আমাদের সামনে ভাষণ দিলেন এবং বললেন, আমাকে শবে ক্বদর দেখান হয়েছে। তারপর আমি তা ভুলে গিয়েছি। কিংবা তিনি বলেছেন, আমাকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। অতএব তোমরা (রামাদানের) শেষ দশ দিনের বেজোড় তারিখে (অর্থাৎ ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯) লাইলাতুল ক্বদর তালাশ কর। কেননা আমি দেখতে পেয়েছি যে, আমি স্বয়ং পানি ও কাঁদায় সিজদা করছি। তাই যে ব্যক্তি রাসূল সা.এর সাথে ই’তেকাফে বসেছে সে যেন ফিরে আসে। সুতরাং আমরা ফিরে এলাম। আমরা আকাশে এক টুকরা মেঘও দেখলাম না। হঠাৎ এক খণ্ড মেঘ দেখা দিল এবং বর্ষণ শুর হল। এমনকি মসজিদের ছাদ ভেসে গেল। এ ছাদ খেজুর পাতায় নির্মিত ছিল। অতঃপর নামায পড়া হল। আমি রাসূলুল্লাহ সা.কে পানি ও কাঁদায় সিজদা করতে দেখলাম। এমনকি আমি তাঁর কপালে কাদার চিহ্ন দেখতে পেলাম। সহীহ আল বুখারী: ১৮৭৩
(১) রাতটি গভীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে না।
(২) নাতিশীতোষ্ণ হবে। অর্থাৎ গরম বা শীতের তীব্রতা থাকবে না।
(৩) মৃদুমন্দ বাতাস প্রবাহিত হতে থাকবে।
(৪) সে রাতে ইবাদত করে মানুষ অপেক্ষাকৃত অধিক তৃপ্তিবোধ করবে।
(৫) কোন ঈমানদার ব্যক্তিকে আল্লাহ স্বপ্নে হয়তো তা জানিয়েও দিতে পারেন।
(৬) ঐ রাতে বৃষ্টি বর্ষণ হতে পারে।
(৭) সকালে হালকা আলোকরশ্মিসহ সূর্যোদয় হবে। যা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মত। (সহীহ ইবনু খুযাইমাহ: ২১৯০, বুখারী: ২০২১, মুসলিম: ৭৬২)
ক্বদর রাতের আমল বা করনীয়ঃ
একজন মুসলিমের উচিত গোটা রামাদান জুড়েই আনুগত্য ও ইবাদাতের কাজে সর্বোচ্চ পরিশ্রম করা এবং শেষ দশকে আরো বেশী তৎপর হওয়া।
আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: (রামাদানের শেষ) দশদিন শুরু হলে রাসূলুল্লাহ সা. নিজে সারারাত জাগতেন, পরিবারের লোকদেরকেও জাগিয়ে দিতেন এবং পরনের কাপড় মজবুত করে বাঁধতেন (অর্থাৎ ইবাদাতের জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। সহীহ আল বুখারী: ২০২৪
নবী সা. রামাদানের শেষ দশদিনে ই’তেকাফে বসতেন যতক্ষণ না আল্লাহ তাঁকে উঠিয়ে নিলেন। তারপর তাঁর পত্নীগনও (শেষ দশকে) ই’তেকাফ করতেন। সহীহ আল বুখারী: ১৮৮৪
আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগীর ক্ষেত্রে রামাদানের শেষ দশ দিনে যে রকম চেষ্টা-সাধনা করতেন, অন্য কোন সময়ে তা করতেন না। সহীহ মুসলিম
আয়েশা রা. বলেছেন: হে রাসূলুল্লাহ! যদি আমি জানি কোন রাতে লাইলাতুল ক্বদর তবে আমি সেই রাতে কি বলবো? তিনি সা. বললেন, বল:
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আ’ফুউউন তুহিব্বুল আ’ফওয়া ফা’ফু আ’ন্নী
হে আল্লাহ! তুমি বড়ই ক্ষমাকারী, বড়ই অনুগ্রহশীল। মাফ করে দেয়াই তুমি পছন্দ কর। তাই তুমি আমার গুনাহ মাফ করে দাও। আল জামে আত তিরমিযী
হাদিসের আলোকে যা করনীয়ঃ
১। শেষ দশকে ইবাদাতের কঠোর পরিশ্রমের জন্য প্রস্তুতি গ্রহন।
২। পরিবারের সদস্যদের সহ রাত জেগে এই পরিশ্রম করার তাগিদ প্রদান।
৩। শেষ দশকের দিন রাত্রি ইবাদাতে কাটানোর সুযোগ গ্রহন।
৪। মসজিদে ইতিকাফে বসার সুযোগ করে নিয়ে এই ক্বদর রাতকে তালাশ করা।
৫। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন করনীয়ঃ তাওবা ও ইস্তিগফার করে রবের কাছ থেকে ক্ষমা পাওয়ার জন্য বিশেষভাবে চেষ্টা করা।
৬। কিয়ামুল লাইল (তারাবীহ,তাহাজ্জুদ সালাত)
৭। কুরআন তিলাওয়াত
৮। যিকর: তাসবীহ, তাহলীল, তাহমীদ ইত্যাদি।
৯। দু’আ করা
হায়েজ/নিফাস অবস্থায় একজন নারী নামাজ ছাড়া বাকী সবই করতে পারেন।
তাওবা ও ইস্তিগফার
তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও এবং তাঁর দিকে ফিরে এসো, তাহলে তিনি একটি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত তোমাদের উত্তম জীবন সামগ্রী দেবেন এবং অনুগ্রহ লাভের যোগ্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার অনুগ্রহ দান করবেন৷ তবে যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে আমি তোমাদের ব্যাপারে একটি অতীব ভয়াবহ দিনের আযাবের ভয় করছি৷ তোমাদের সবাইকে আল্লাহর দিকে ফিরে যেতে হবে এবং তিনি সবকিছুই করতে পারেন৷সূরা হুদঃ ৩-৪
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহর কাছে তাওবা করো, প্রকৃত তাওবা৷ অসম্ভব নয় যে, আল্লাহ তোমাদের দোষত্রুটিসমুহ দুর করে দিবেন এবং এমন জান্নাতে প্রবেশ করবেন যারা পাদদেশ দিয়ে ঝরণাসমূহ প্রবাহিত হতে থাকবে৷সূরা তাহরীমঃ৮
কুর’আনের উক্ত দুই আয়াতের আলোকে
১। প্রথমে ইস্তেগফার করতে হবে এরপর তাওবা করতে হবে।
২।তাওবা করতে হবে তাওবাতুন নাসূহা বা বিশুদ্ধ তাওবা।
ইস্তিগফার কিঃ ইস্তেগফার অর্থ ক্ষমা প্রার্থনা করা। কৃত গোনাহের জন্যে আল্লাহর কাছে অনুতাপ ও অনুশোচনার সঙ্গে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
‘তোমরা আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থী হও, নিশ্চয় মহান আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, অতীব দয়ালু (সূরা বাকরাহ:১৯৯)
অতএব, হে নবী! ভাল করে জেনে নাও, আল্লাহ ছাড়া আর কেউ ইবাদাতের যোগ্য নয়৷ নিজের ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো৷ এবং মু’মিন নারী ও পুরুষদের জন্যও৷ আল্লাহ তোমাদের তৎপরতা সম্পর্কে অবহিত এবং তোমাদের ঠিকানা সম্পর্কেও অবহিত৷ সূরা মুহাম্মদঃ১৯
(হে নবী,) তুমি বলে দাও, হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের ওপর অবিচার করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। আল্লাহ সমুদয় পাপ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি তো মহা ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু। সূরা যুমার : ৫৩
তোমরা তোমাদের প্রভুর নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি মহাক্ষমাশীল। (ক্ষমাপ্রার্থনা করলে) তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারায় বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। তোমাদেরকে তিনি ধনসম্পদ ও সন্তানাদি দিয়ে সমৃদ্ধ করবেন। তোমাদের জন্যে তিনি বিভিন্ন রকমের বাগান ও অনেক নদ-নদী সৃষ্টি করে দেবেন। সূরা নূহ : ১০-১২
তোমাদের পালন কর্তার কাছে তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর তাঁরই প্রতি মনোনিবেশ কর; তিনি আসমান থেকে তোমাদের উপর বৃষ্টি ধারা প্রেরণ করবেন এবং তোমাদের শক্তির উপর শক্তি বৃদ্ধি করবেন। (সূরা হুদ: ৫২)
তারা যতক্ষণ ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে আল্লাহ কখনও তাদের উপর আযাব দেবেন না। (সূরা আনফাল: ৩৩)
“আল্লাহ দিনে হাত বাড়িয়ে দেন যাতে রাতের পাপীরা ক্ষমা চাইতে পারে এবং তিনি রাতে হাত বাড়িয়ে দেন যাতে দিনের পাপীরা ক্ষমা চাইতে পারে।” (মুসলিম)
বামকাঁধের ফেরশতা গুনাহ করা একজন মুসলিম বান্দাকে ছয় ঘন্টা সময় দেয়। সেই বান্দা যদি তওবা করে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, তবে ফেরেশতা তা লিপিবদ্ধ করেনা। এবং যদি সেই বান্দা আল্লাহর কাছে ক্ষমা না চায়, তবে ফেরেশতা তা একবার লিপিবদ্ধ করে।” (মুসলিম)
“বান্দা যখন কোন গোনাহর কাজ করে তখন তার অন্তরে এক ধরনের কালো দাগ পড়ে যায়। যদি ইস্তেগফার করে তাহলে এই দাগ দূরীভূত করে তার অন্তর সূচালু, ধারালো ও পরিশীলিত হবে। আর এই দাগের কথা কুরআনেই আছে, খবরদার! তাদের অন্তরে দাগ রয়েছে যা তারা কামাই করেছে।” জামে তিরমিযি: ৩৩৩৪।
কুর’আনের আয়াত ও হাদীসের আলোকে ইস্তিগফারের মাধ্যমে যা লাভ হয়ঃ
১. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হয়।
২. এটি গোনাহকে মুছে ফেলে ও বান্দার মর্যাদা উন্নীত করে।
৩. রিজিক প্রশস্ত হয়।
৪. পরিবারে শান্তি আসে।
৫. শরীরে ঈমানি শক্তি বৃদ্ধি পায়।
৬. হৃদয় স্বচ্ছ ও নির্মল হয়।
৭. এর মাধ্যমে বালামুসিবত দূর হয়।
৮. চিন্তা-পেরেশানি দূর হয়।
৯। সুখ-সমৃদ্ধি ও প্রাপ্য হক অর্জিত হয়।
১০। আযাব থেকে নিরাপদ লাভ
সাইয়িদুল ইস্তিগফার (সাইয়েদুল ইস্তেগফার) বা ক্ষমা প্রার্থনার শ্রেষ্ঠ দো‘আ
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এই দো‘আ পাঠ করবে, দিনে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিনে মারা গেলে, সে জান্নাতী হবে’।
اَللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّىْ لآ إِلهَ إلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِىْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّمَا صَنَعْتُ، أبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَىَّ وَأَبُوْءُ بِذَنْبِىْ فَاغْفِرْلِىْ، فَإِنَّهُ لاَيَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা আনতা রব্বী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদুকা ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা ছানা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ বিযাম্বী ফাগফিরলী ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার পালনকর্তা। তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার দাস। আমি আমার সাধ্যমত তোমার নিকটে দেওয়া অঙ্গীকারে ও প্রতিশ্রুতিতে দৃঢ় আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হ’তে তোমার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আমার উপরে তোমার দেওয়া অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমি আমার গোনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা কর। কেননা তুমি ব্যতীত পাপসমূহ ক্ষমা করার কেউ নেই’। বুখারী, মিশকাত হা/২৩৩৫
তাওবা
তওবা শব্দের অর্থ হল: অনুশোচনা করা, প্রত্যাবর্তন করা, ফিরে আসা ইত্যাদি।
ব্যাপক অর্থে তওবা বলা হয়: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জীবনের অন্যায় বা পাপরাশি থেকে নিজেকে মুক্ত করা। অন্যায়ের প্রতি অনুশোচনা করত: দৃঢ়তার সাথে বর্জন করার অঙ্গিকার গ্রহণ করা। এবং ভবিষ্যতে অন্যায়ে ফিরে না যাওয়ার মনমানসিকতা পোষণ করা।
এক কথায় পাপ-কর্ম থেকে ফিরে এসে সৎকাজে প্রবৃত্ত হওয়া।
“কিন্তু যারা তাওবা করেছে, নিজেদের সংশোধন করেছে এবং বর্ণনা করেছে তারা হলো সেই লোক যাদের তাওবা আমি কবুল করবো এবং আমিই একমাত্র তাওবা কবুলকারী, দয়ালু।” সূরা আল বাকারা: ১৬০
“মহান আল্লাহ তওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন। আল বাকারা: ২২২
“যারা তওবা করে, ঈমান আনে ও আমলে সালিহ করে, আশা করা যায় তারা সফলকাম হবে।” সূরা কাসাস-৬৭।
“কিন্তু যারা তওবা করে, ঈমান আনে ও আমলে সালিহা করে, এদের সকল পাপরাশি নেকীতে রূপান্তর করে দেন আল্লাহ তা আলা। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।” সূরা ফোরকান: ৬৯।
গোনাহ থেকে তওবাকারীর কোন গোনাহই থাকে না।” ইবন মাজাহ: ৪২৫০।
“নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা রাত্রিবেলা তাঁর হস্ত প্রসারিত করেন যাতে দিবাভাগের গোনাহগুলোর তওবা কবুল করতে পারেন। ওদিকে দিনের বেলায় হস্ত প্রসারিত করেন যাতে রাতের গোনাহ তওবা গ্রহণ করতে পারেন। সহীহ মুসলিম: ২৭৪৭
রাসূলুল্লাহ সা বলেছেন, হে লোকসকল! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা করো, কারণ আমি দিনে একশত বার তার কাছে তাওবা করি। [মুসলিম: ২৭০২]
তাওবাতুন নাসূহা
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহর কাছে তাওবা করো, প্রকৃত তাওবা৷ অসম্ভব নয় যে, আল্লাহ তোমাদের দোষত্রুটিসমুহ দুর করে দিবেন এবং এমন জান্নাতে প্রবেশ করবেন যারা পাদদেশ দিয়ে ঝরণাসমূহ প্রবাহিত হতে থাকবে৷সূরা তাহরীমঃ৮
نصوح শব্দটির বিভিন্ন অর্থ হয়ে থাকে।
এক. نصحة অর্থ খাঁটি করা। “তাওবাতুন নাসূহ” এর অর্থ এমন তাওবা, যা রিয়া ও নামযশ থেকে খাঁটি-কেবল আল্লাহ তা’আলার সস্তুষ্টি অর্জন ও আযাবের ভয়ে ভীত হয়ে এবং গোনাহের কারণে অনুতপ্ত হয়ে গোনাহ পরিত্যাগ করা।
نصاحة অর্থ বস্ত্র সেলাই করা ও তালি দেয়া। “তাওবাতুন নাসূহ” শব্দটি এই উদ্দেশ্য ব্যক্ত করার জন্যে হবে যে, গোনাহের কারণে সৎকর্মের ছিন্নবস্ত্রে তাওবা তালি সংযুক্ত করে। ( কুরতুবী) এ ছাড়া—
- গোনাহর কারণে তার দীনদারীর মধ্যে যে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে তাওবা দ্বারা তা সংশোধন করবে ৷
- নিষ্কলুষতা ও কল্যাণকামিতা ৷ খাঁটি মধু যা মোম ও অন্যান্য আবর্জনা থেকে মুক্ত করা হয়েছে
পাপ বা অপরাধ দু ধরনের হয়ে থাকে :
১। যে সকল পাপ শুধুমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের হক বা অধিকার সম্পর্কিত।
২। যে সকল পাপ বা অপরাধ মানুষের অধিকার সম্পর্কিত। যে পাপ করলে কোন না কোন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
প্রথম প্রকার পাপ থেকে আল্লাহর কাছে তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করার সাথে পাঁচটি শর্তের উপস্থিতি জরুরী
১। ইখলাস (অকপটতা),
২। কৃত পাপটিতে লিপ্ত হওয়ার কারণে আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হওয়া।
৩। পাপ কাজটি পরিহার করা।
৪। ভবিষ্যতে আর এ পাপ করব না বলে দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করা।
৫। তওবা কবুল হওয়ার সময়সীমার মধ্যে তওবা করা।
দ্বিতীয় প্রকার পাপ থেকে তাওবা করার শর্ত হল মোট ছয়টি:
১। ইখলাস (অকপটতা),
২। পাপ কাজটি পরিহার করা।
৩। কৃত পাপটিতে লিপ্ত হওয়ার কারণে আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হওয়া।
৪। ভবিষ্যতে আর এ পাপ করব না বলে দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করা।
৫। পাপের কারণে যে মানুষটির অধিকার ক্ষুন্ন করা হয়েছে বা যে লোকটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার পাওনা পরিশোধ করা বা যথাযথ ক্ষতিপুরণ দিয়ে তার সাথে মিটমাট করে নেয়া অথবা তার কাছে ক্ষমা চেয়ে দাবী ছাড়িয়ে নেয়া।
৬। তওবা কবুল হওয়ার সময়সীমার মধ্যে তওবা করা। শাইখ উছাইমীনের “লিকাউল বাব আল-মাফতুহ” ৫৩/৭৩
তওবা করতে হবে মৃত্যু শুরু হওয়ার পূর্বে(মৃত্যুর ফেরেশতা দেখার পূর্বে) এবং পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয় শুরু হওয়ার আগে। তিরমিযী: ৩৫৩৭, ইবনু মাজাহ: ৪২৫৩
তাওবা কিভাবে করবো
অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে যে কোন সময়ই নিজের গুনাহের ফলে অনুশোচনায় ব্যথিত হওয়া যে, নিজের উপর যুলুম করে ফেলেছেন, ভবিষ্যতে আর এই কাজ করবেন না ও মহান আল্লাহর আনুগত্যে অটল থাকবেন এই অংগীকার নিয়ে মহান আল্লাহর কাছেই ক্ষমা চাওয়া দিয়েই তাওবা করা হয়ে যায়।
নির্দিষ্ট কোন গুনাহ করে ফেললে—-
আবুবকর রা. হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সা.-কে বলতে শুনেছি যে, কোন লোক যদি গোনাহ করে। অতঃপর উঠে দাঁড়ায় ও পবিত্রতা অর্জন করে এবং দু’রাক‘আত সালাত আদায় করে। অতঃপর আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন।
আবুদাঊদ, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, বায়হাক্বী, তিরমিযী, হাদীছ হাসান; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১৫৯; মিশকাত হা/১৩২৪ ‘ঐচ্ছিক ছালাত’ অনুচ্ছেদ-৩৯; আলে ইমরান ৩/১৩৫।
উক্ত সালাত দুই বা চার রাক‘আত ফরয কিংবা নফল, পূর্ণ ওযূ ও সুন্দর রুকূ-সিজদা সহকারে হ’তে হবে। আহমাদ হা/২৭৫৮৬; সহীহাহ হা/৩৩৯৮; সহীহ আত-তারগীব হা/২৩০।
“অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন, যারা ভুলবশতঃ মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদের তওবা আল্লাহ কবুল করেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, রহস্যবিদ।” সূরা নিসা: ১৭
তাওবা ইস্তেগফার এর মধ্যে উত্তম হল:
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
১। আমি আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর নিকটই তাওবা করছি আস্তাগফিরুল্লাহ ওয়া আতূবু ইলাইহি বুখারী (ফাতহুল বারীসহ) ১১/১০১, নং ৬৩০৭; মুসলিম ৪/২০৭৫, নং ২৭০২।
رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ أنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ الغَفُوْرُ
উচ্চারণঃ রাব্বিগ্ ফিরলী, ওয়া তুব ‘আলাইয়্যা, ইন্নাকা আনতাত তাওয়া-বুর রাহীম। দ্বিতীয় বর্ণনয় “রাহীম”-এর বদলে: ‘গাফূর’।
২। অনুবাদঃ হে আমার প্রভু, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী করুণাময়। দ্বিতীয় বর্ণনায়: তাওবা কবুলকারী ও ক্ষমাকারী।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মসজিদে বসে এক বৈঠকেই এই দোয়া ১০০ বার পড়েছেন। [আবূ দাঊদ-১৫১৬, ইবনু মাজাহ-৩৮১৪, তিরমিযী-৩৪৩৪, মিশকাত-২৩৫২]
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ূমু ওয়া আতূবু ইলাইহে।
৩। অনুবাদ : ‘আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি সেই আল্লাহর নিকটে যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্ব চরাচরের ধারক এবং তাঁর দিকেই আমি ফিরে যাচ্ছি বা তওবা করছি’।
তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৩৫৩ ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯, ‘ক্ষমা প্রার্থনা ও তওবা করা’ অনুচ্ছেদ-৪।
أَستَغْفِرُ اللهَ
উচ্চারণঃ আস্তাগফিরুল্লা-হ।
৪। অনুবাদঃ আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
প্রতি ওয়াক্তের ফরয সালাতে সালাম ফিরানোর পর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এই দু’আ ৩ বার পড়তেন। [মিশকাত-৯৬১]
৫। সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার
—————————————————————————-
وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
হে মু’মিনগণ! তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর কাছে তাওবা করো,আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে৷সূরা নূরঃ ৩১