আইয়্যামে তাশরিক ও আইয়্যামে বীদ

দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে

 

আইয়্যামে তাশরিকের  তিন দিনসহ ঈদের দিন মোট চারদিন সাওম রাখা হারাম, অর্থাৎ যিলহজ্জ মাসের ১০-১৩ তারিখ সাওম রাখা হারাম(নফল সাওম ও রাখা যাবে না)

আইয়্যামে তাশরিক বলতে সেই দিনগুলি বুঝায় যিলহজ্জ মাসের ১১, ১২, ১৩ তারিখ।

যিলহজ্জ মাসের ৯তারিখ হলো আইয়ামে আরাফা বা আরাফার দিন বা হজ্জের দিন।

যিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ হলো আইয়ামে নহর বা কুরবানীর দিন।

আশরায়ে যিলহজ্বের পরবর্তী তিন দিন অর্থাৎ এগার, বার ও তের তারিখকে পরিভাষায় ‘আইয়ামে তাশরীক’ বলে। আশরায়ে যিলহজ্বের দশ দিন ও আইয়ামে তাশরীকের তিনদিন সর্বমোট যিলহজ্বের এই প্রথম তের দিনের একটি আমল রয়েছে। তা হচ্ছে বেশি বেশি আল্লাহর যিকির ও তাকবীর পাঠ।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যেন তারা নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে।’ (সূরা হজ, আয়াত : ২৮) বিখ্যাত সাহাবি মুফাসসির ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, এখানে নির্দিষ্ট দিন বলতে ‘আইয়ামে তাশরিক’ ও ‘আল্লাহর স্মরণ’ বলতে তাকবিরে তাশরিক বোঝানো হয়েছে। (সহিহ বোখারি, অধ্যায় দুই ঈদ)।

নুবাইশা আল-হুযালী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

“আইয়্যামে তাশরীক পানাহার ও আল্লাহর যিকিরের দিন”।[সহীহুল জামে হা/২৬৮৯-নুবাইশা আল হুযালী রা. থেকে বণিত]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন:

“তোমরা এই দিনগুলোতে রোযা রাখিও না। কেননা, এগুলো পানাহারের দিন।” (সহীহল জামে, হা/৭৩৫৫-হামযা বিন আমর আল আসলামীন থেকে বর্ণিত

সুতরাং এই তিন দিনসহ ঈদের দিন মোট চারদিন সাওম রাখা হারাম।

 

আইয়াম’ আরবি শব্দ, অর্থ হলো দিবসগুলো, কাল, সময় ইত্যাদি। এটি বহুবচন। একবচন হলো ‘ইয়াওম’ অর্থ হলো দিন বা দিবস। ‘বীয’ বা ‘বীদ’ অর্থ শ্বেত বর্ণ, শুভ্র, উজ্জ্বল, সফেদ, সাদা রঙ ইত্যাদি।

আ’ব্দুল্লাহ ইবনে আ’মরইবনে আ’স রাদিয়াল্লাহু আ’নহুহতে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা রাখা, সারা বছরধরে রোযা রাখার সমান।”সহীহুল বুখারীঃ ১১৫৯, ১৯৭৫।

আবূ যার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “প্রত্যেক মাসে (নফল) সাওম পালন করলে তেরো, চৌদ্দ ও পনেরো তারিখে পালন করো।” ক্বাতাদাহ ইবন মিলহান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে তেরো, চৌদ্দ ও পনেরো তারিখে সাওম পালন করার জন্য আদেশ করতেন। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবাসস্থল ও সফর কোথাও (তিন) দিনের সাওম পালন ছাড়তেন না।’

তিরমিযীঃ ৭৬১, নাসায়ীঃ ২৪২৪,শায়খ আলবানীর মতে হাসান সহীহ, তাহকীক রিয়াদুসসালেহীন।

এই হিসেবে যিলহজ্জ মাসের ৩দিন সাওম রাখতে চাইলে যিলহজ্জ মাসের ১৪ তারিখ থেকে রাখা যাবে ইন শা আল্লাহ।