মসজিদে যাওয়ার সময়ে পড়ার দো‘আ
اللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي نُوراً، وَفِي لِسَانِي نُوراً، وَفِي سَمْعِي نُوراً، وَفِي بَصَرِي نُوراً، وَمِنْ فَوْقِي نُوراً، وَمِنْ تَحْتِي نُوراً، وَعَنْ يَمِينِي نُوراً، وَعَنْ شِمَالِي نُوراً، وَمِنْ أَمَامِي نُوراً، وَمِنْ خَلْفِي نُوراً، وَاجْعَلْ فِي نَفْسِي نُوراً، وَأَعْظِمْ لِي نُوراً، وَعَظِّمْ لِي نُوراً، وَاجْعَلْ لِي نُوراً، وَاجْعَلْنِي نُوراً، اللَّهُمَّ أَعْطِنِي نُوراً، وَاجْعَلْ فِي عَصَبِي نُوراً، وَفِي لَحْمِي نُوراً، وَفِي دَمِي نُوراً، وَفِي شَعْرِي نُوراً، وَفِي بَشَرِي نُوراً،
আল্লা-হুম্মাজ‘আল ফী ক্বালবী নূরান, ওয়া ফী লিসানী নূরান, ওয়া ফী সাম্‘য়ী নূরান, ওয়া ফী বাসারী নূরান, ওয়া মিন ফাওকী নূরান, ওয়া মিন তাহ্তী নূরান, ওয়া ‘আন ইয়ামীনী নূরান, ওয়া ‘আন শিমালী নূরান, ওয়া মিন আমামী নূরান, ওয়া মিন খলফী নূরান, ওয়াজ‘আল ফী নাফ্সী নূরান, ওয়া আ‘যিম লী নূরান, ওয়া ‘আয্যিম লী নূরান, ওয়াজ‘আল্ লী নূরান, ওয়াজ‘আলনী নূরান; আল্লা-হুম্মা আ‘তিনী নূরান, ওয়াজ‘আল ফী ‘আসাবী নূরান, ওয়া ফী লাহ্মী নূরান, ওয়া ফী দামী নূরান, ওয়া ফী শা‘রী নূরান, ওয়া ফী বাশারী নূরান।
হে আল্লাহ! আপনি আমার অন্তরে নূর (বা আলো) দান করুন, আমার যবানে নূর দান করুন, আমার শ্রবণশক্তিতে নূর দান করুন, আমার দর্শনশক্তিতে নূর দান করুন, আমার উপরে নূর দান করুন, আমার নীচে নূর দান করুন, আমার ডানে নূর দান করুন, আমার বামে নূর দান করুন, আমার সামনে নূর দান করুন, আমার পেছনে নূর দান করুন, আমার আত্মায় নূর দান করুন, আমার জন্য নূরকে বড় করে দিন, আমার জন্য নূর বাড়িয়ে দিন, আমার জন্য নূর নির্ধারণ করুন, আমাকে আলোকময় করুন। হে আল্লাহ! আমাকে নূর দান করুন, আমার পেশীতে নূর প্রদান করুন, আমার গোশ্তে নূর দান করুন, আমার রক্তে নূর দান করুন, আমার চুলে নূর দান করুন ও আমার চামড়ায় নূর দান করুন। বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ) ১১/১১৬, নং ৬৩১৬; মুসলিম ১/৫২৬, ৫২৯, ৫৩০, নং ৭৬৩।
اللَّهُمَّ اجْعَلْ لِي نُوراً فِي قَبْرِي… وَنُوراً فِي عِظَامِي
আল্লা-হুম্মাজ‘আল লী নূরান ফী কাবরী… ওয়া নূরান ফী ‘ইযামী
হে আল্লাহ! আমার জন্য আমার কবরে নূর দিন, আমার হাড়সমূহেও নূর দিন ।তিরমিযী ৫/৪৮৩, নং ৩৪১৯
وَزِدْنِي نُوراً، وَزِدْنِي نُوراً، وَزِدْنِي نُوراً
ওয়া যিদ্নী নূরান, ওয়া যিদনী নূরান, ওয়া যিদনী নূরান
আমাকে নূরে বৃদ্ধি করে দিন, আমাকে নূরে বৃদ্ধি করে দিন, আমাকে নূরে বৃদ্ধি করে দিন ইমাম বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ, নং ৬৯৫; পৃ. ২৫৮; আর আলবানী সেটার সনদকে সহীহ আদাবিল মুফরাদে সহীহ বলেছেন, নং ৫৩৬।
মসজিদে প্রবেশের দো‘আ
আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “সুন্নাত হচ্ছে, যখন তুমি মসজিদে প্রবেশ করবে, তখন তোমার ডান পা দিয়ে ঢুকবে, আর যখন বের হবে, তখন বাম পা দিয়ে বের হবে” বাইহাকী, ২/৪৪২; আর শাইখ আলবানী তার সিলসিলাতুল আহাদীসিস সহীহা গ্রন্থে এটাকে হাসান বলেছেন, ৫/৬২৪; নং ২৪৭৮।
তাই ডান পা দিয়ে ঢুকবে এবং বলবে,
أَعُوذُ بِاللَّهِ العَظِيمِ، وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ، وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيمِ، مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ
আ‘ঊযু বিল্লা-হিল ‘আযীম, ওয়া বিওয়াজহিহিল কারীম, ওয়াসুলতা-নিহিল ক্বদীম, মিনাশ শাইত্বা-নির রাজীম।
আমি মহান আল্লাহ্র কাছে তাঁর সম্মানিত চেহারা ও প্রাচীন ক্ষমতার ওসীলায় বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আবূ দাউদ, নং ৪৬৬; আরও দেখুন, সহীহুল জামে‘ ৪৫৯১।
بِسْمِ اللَّهِ
বিসমিল্লা-হি
আল্লাহ্র নামে (প্রবেশ করছি) শাইখ আলবানী তার আস-সামারুল মুস্তাতাব গ্রন্থে একে হাসান বলেছেন, পৃ. ৬০৭
وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ
ওয়াসসালাতু ওয়াসসালা-মু ‘আলা রাসূলিল্লা-হি
সালাত ও সালাম আল্লাহ্র রাসূলের উপর। আবূ দাউদ ১/১২৬; নং ৪৬৫; আরও দেখুন, সহীহুল জামে‘ ১/৫২৮।
اللَّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ
আল্লা-হুম্মাফ্তাহ লী আবওয়া-বা রাহ্মাতিকা
হে আল্লাহ! আপনি আমার জন্য আপনার রহমতের দরজাসমূহ খুলে দিন। মুসলিম ১/৪৯৪, নং ৭১৩;
১. বিসমিল্লাহ পড়া।
২. দরূদ শরীফ পড়া
৩. অতঃপর এই দু‘আ পড়া :
اللهم افتح لى ابواب رحمتك
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিকা
উল্লেখিত দু‘আ সমূহ একত্রে এভাবে পড়া যায়-
بسم الله والصلوة والسلام على رسول الله اللهم افتح لى ابواب رحمتك
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি অসসলাতু অচ্ছালামু আলা রাসুলিল্লাহ আল্লাহুম্মাফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিকা।
৪. মসজিদে ডান পা আগে রাখা।
৫. মসজিদে প্রবেশ করে ই‘তিকাফের নিয়ত করা।
(যতক্ষণ মসজিদে থাকবেন, ততক্ষণ এ’তেকাফের সাওয়াব পেতে থাকবেন)
বি.দ্র. মসজিদে প্রবেশের সময় প্রথমে বাম পায়ের জুতা খুলে জুতার উপর বাম পায়ে দাঁড়াবে অতঃপর ডান পায়ের জুতা খুলে দু‘আসমূহ পড়ে তারপর প্রথমে ডান পা মসজিদের ভিতরে রাখবে।
মসজিদ থেকে বের হওয়ার দো‘আ
বাম পা দিয়ে শুরু করবে আল-হাকিম, ১/২১৮; বাইহাকী, ২/৪৪২, আর শাইখ আলবানী তার সিলসিলাতুস সহীহায় একে হাসান হাদীস বলেছেন, ৫/৬২৪, নং ২৪৭৮।
এবং বলবে,
بِسْمِ اللَّهِ وَالصّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِك، اللَّهُمَّ اعْصِمْنِي مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ،
বিস্মিল্লা-হি ওয়াস্সালা-তু ওয়াস্সালা-মু ‘আলা রাসূলিল্লাহ, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা মিন ফাদ্বলিকা, আল্লা-হুম্মা আ‘সিমনি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম।
আল্লাহ্র নামে (বের হচ্ছি)। আল্লাহ্র রাসুলের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। হে আল্লাহ! আপনি আমার গুনাসমূহ মাফ করে দিন এবং আমার জন্য আপনার দয়ার দরজাগুলো খুলে দিন। হে আল্লাহ, আমাকে বিতাড়িত শয়তান থেকে হেফাযত করুন [২]
ইবন মাজাহ্ ১/১২৯।
.মসজিদ থেকে বের হওয়ার সুন্নাতসমূহ…………
১. বিসমিল্লাহ পড়া।(মুসনাদে আহমাদ, হাঃ নং ২৬৪৭৩
২. দরূদ শরীফ পড়া।মুসনাদে আহমাদ, হাঃ নং ২৬৪৭২
৩. অতঃপর এই দু‘আ পড়া :
اللهم انى اسئلك من فضلك
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা মিন ফাদলিকা।
উল্লেখিত দু‘আ সমূহ একত্রে এভাবে পড়া যায় :
بسم الله والصلوة والسلام على رسول الله اللهم انى اسئلك من فضلك
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি অসসলাতু অচ্ছালামু আলা রাসুলিল্লাহ আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা মিন ফাদলিকা।
এ দু‘আ গুলো বের হওয়ার পূর্বেই পড়বে।
৪. মসজিদের বাইরে (জুতার উপর) বাম পা আগে রাখা।
৫. অতঃপর প্রথমে ডান পায়ে জুতা পরা।বুখারী শরীফ, হাঃ নং ৫৮৫৫ তারপর বাম পায়ে পরা।
মসজিদে প্রবেশের পর আদবঃ
মসজিদ মহান আল্লাহর ঘর। দুনিয়ার সকল গৃহের উপর আল্লাহ্’র গৃহের সম্মান। তাই এই গৃহে প্রবেশ করে বসার পূর্বেই আল্লাহ্’র প্রতি আনুগত্যের সিজদাহ করতে হয়। আল্লাহ্ সব চাইতে বেশি খুশি হন বান্দা যখন সিজদাহ করে। কিন্ত যারা সিজদাহ না করেই মসজিদে গিয়ে বসে পড়ে, তারা আল্লাহ্ ও আল্লাহ্’র গৃহের প্রতি অসম্মান করে এবং রাসুল(সাঃ)এর অবাধ্যতা করে।
তাহিয়্যাতুল মাসজিদ:
মসজিদে প্রবেশ করে ২রাক’আত তাহিয়্যাতুল মাসজিদের সালাত আদায় করা সুন্নাত। আবু কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে,
«إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ المَسْجِدَ، فَلاَ يَجْلِسْ حَتَّى يُصَلِّيَ رَكْعَتَيْنِ»
“তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে সে যেন দু’ রাকাত সালাত না পড়া পর্যন্ত না বসে।”সহীহ বুখারী, জুমু‘আ, হাদীস নং ১১১৪; সহীহ মুসলিম, সালাতুল মুসাফিরীন ওয়াকাসরিহা, হাদীস নং ৭১৪;
(বহু হাদীস প্রণেতারা হাদীসটি বর্ণনা করেছেন)
সুতরাং এই হাদীসের আলোকে আমাদের লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন যেকোন সময়েই হোক যখন কেউ মসজিদে প্রবেশ করবে তখনই মসজিদে বসার পূর্বে আগে ২রাক’আত সুন্নাত সালাত আদায় করে নিবে, তারপর মুসাল্লাতে বসবে।এই সালাত আদায় না করে বসাটা মাকরুহ।
তবে যদি সালাতের ইকামাত দেয়া শুরু হয়ে যায় তখন জামা’আতে সালাতে দাঁড়িয়ে যাবে তখন আর তাহিয়াতুল মসজিদ সালাত পড়ার সময় নেই।
কিন্তু জুমা’বার খুতবা শুরু হয়ে গেলে সকল কাজ নিষেধ কিন্তু ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে ২রাকা’আত তাহিয়াতুল মসজিদ আদায় করেই বসে খুতবাহ শুনবে।
জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত । তিনি বলেন ,নবী করীম (সাঃ) এর খুৎবা দানকালে সেখানে এক ব্যক্তি আগমন করেন । তিনি তাকে বলেন , হে অমুক ! তুমি কি ( তাহিয়াতুল মাসজিদ ) সালাত পড়েছ ? ঐ ব্যক্তি বলেন , না । নবী ( সাঃ ) বলেন , তুমি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় কর । অন্য হাদীসে বলা হয়েছে তুমি সংক্ষিপ্ত ভাবে দুই রাকাআত ( তাহিয়াতুল মাসজিদ ) সালাত আদায় কর ।
( বুখারী হা/৮৮৩ , ৮৮৪ ; মুসলিম হা/১৮৯৫ , ১৮৯৬ , ১৮৯৭ , ১৮৯৮ , ১৮৯৯ , ১৯০০ ; তিরমিযী ; ইবনে মাজাহ ; নাসাঈ হা/১৪০৩ ; আবু দাউদ হা/১১১৫ , ১১১৬ , ১১১৭)
‘মসজিদে হারাম’’এর তাহিয়াহ হল তাওয়াফ করা। আর তাওয়াফের নিয়ত না থাকলে দু’রাকআত সালাত আদায় না করে মসজিদে কখনো বসবেন না। তবে, জামাআত দাঁড়িয়ে গেলে সরাসরি জামাআতে শরীক হয়ে যাবেন।