সময় অমূল্য ধন। চলে যাওয়া সময় আর ফিরে আসেনা।
Time and tide wait for none.
“What is the longest,yet the shortest
The swiftst, yet the slowest
All of us neglect it and then we all regret it.
Nothing can be done without it, it
Swallows up all that is small and it
Build up all that is great?”
You know —it is time. So beware
Killing time is not just a crime,
It’s a murder.
“প্রতিদিন প্রত্যুষে দুজন ফেরেশতা ডেকে বলেঃ
হে আদম সন্তান! আমি একটি নতুন দিন। তোমাদের কর্মের আমি সাক্ষী। তাই আমাকে কাজে লাগাও। আমার থেকে উপকৃত হও। কিয়ামত পর্যন্ত আমি আর ফিরে আসবোনা।” আল হাদীস
“ যে ব্যক্তি নিজের নফসকে নিয়ন্ত্রন করে এবং মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের জন্য কাজ করে, সেই প্রকৃত বুদ্ধিমান। যে ব্যক্তি নিজেকে কুপ্রবৃত্তির গোলাম বানায় অথচ আল্লাহর নিকট প্রত্যাশা করে সেই অক্ষম।
জামে আত তিরমিযী
জীবনের সময় ফুড়িয়ে যাচ্ছে,আর কবে আমাদের সচেতনতা আসবে? সবার প্রতি বিনীত অনুরোধ, একটু চেষ্টা করেই দেখি। একটি পরিকল্পনা টিপস দেয়া হবে যার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর উল্লেখ করা হলো–
পড়ার পরিবেশঃ — নিরিবিলি একটি রুম
প্রতিদিন পূর্ণ ১টি ঘন্টা সময়
একটি গুছানো পড়ার টেবিল
প্রয়োজনীয় বই(তাফসীর, রাহীকূল মাখতুম, বুখারী/মুসলিম, হিসনুল মুসলিম দু’আ সমগ্র ও অন্যান্য)
ডায়রী
হাইলাইটার
কলম
- পড়তে পড়তে প্রয়োজনীয় লাইনগুলো মার্ক করে রাখুন।
- প্রয়োজনীয় বিষয় ভিত্তিক আয়াত ও দু’আগুলো ডায়েরীতে টুকে নিতে পারেন অথবা কম্পিউটারে একটি ফাইল করে নিতে পারেন।
বি দ্রঃ অনেকে বলবেন এখন অনেক বই ও নেটে সব কালেকশন করা আছে। কিন্তু আরেকজনের নোট পড়া আর নিজের করা নোটের অনেক পার্থক্য আছে, এটা সবার ছাত্র জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝার কথা। জীবনের পরীক্ষা যার উপর আমার চিরস্থায়ী জীবনের রেজাল্ট, যেই রেজাল্টের পর আর কোন রিএক্সাম দেয়ার কোন সুযোগ নাই, আমার রব ভালোবেসে এই পরীক্ষার হলে পাঠিয়েছেন যেন আমি ভালো রেজাল্ট করে জান্নাতে ফিরে যেতে পারি, এই ভালোবাসার কি কোন মূল্যই নাই!
ঘন্টার পর ঘন্টা আমরা বিভিন্ন মানুষের পিছনে বা বেহুদা কাজে অর্থহীন অপ্রয়োজনীয় সময় ব্যয় করে জীবন নামক পরীক্ষার হলের সময়কে তরাণ্বিত করে যাচ্ছি, যে কোন সময় খাতা জমার ঘন্টা বেজে উঠবে-আমরা কি সচেতন আছি! মহান আল্লাহ আমাদের বর্তমান মুসলমানদের পরিনতি কেন এমন হচ্ছে, তা বুঝার তাওফিক দান করুন এবং নিজেদের সংশোধনের জন্য কুর’আনের সাথে সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য দৃঢ় মন দান করুন এবং বর্তমান সব ধরনের আজাব থেকে আমাদের হেফাজত করুন।
বর্তমান এই সমাজ ও পরিবেশে দীনের পথে সঠিকভাবে দৃঢ়তার সাথে টিকে থাকার জন্য প্রয়োজন মহান আল্লাহর সাহায্য চাওয়া ও পরিকল্পিতভাবে সময়কে কাজে লাগানোর প্রচেষ্টায় নিজেকে সচেতনভাবে পরিশ্রমী করা।
আমরা শুধু চেষ্টা করে যেতে পারি মহান আল্লাহ কবুল করার মালিক ও কাজকে সম্পন্ন করে দেয়ার অধিকারী পালন কর্তা। মহান আল্লাহ আমাদের সুস্থতার সাথে আমল করার তাওফিক দান করুন।
আর মাত্র ৩টি মাস রয়েছে সিয়ামের মাস আসার।
আমরা রামাদান পূর্ববর্তী পরিকল্পনা করবো ইন শা আল্লাহ। পুরিবারকে নিয়ে এগুতে থাকি ও প্রবেশ করি এই রামাদান পূর্বে পরিকল্পিত জীবনের যাত্রায়।
(ফেব্রুয়ারী মাস – এপ্রিল মাস) + রামাদান মাস
পরিকল্পনা-১
আল কুর’আনঃ
ফেব্রুয়ারী মাস—৩০তম পারা শেষ করা ( তাফসির সহ ) এখানে মোট ৩৭টি সূরা আছে।
মার্চ—২৯তম পারা ( তাফসির সহ-এখানে মোট ১১টি সূরা আছে)
এপ্রিল—সূরা মুমিনূন, সূরা আহযাব, সূরা নূর,বনী ইসরাইল, হুজুরাত, তাগাবুন, মুনাফিকুন, হাদীদ, হাশর,আস সফ, ওয়াকীয়া, রহমান। এখানে ১২টি সূরা।
আল হাদীসঃ সহিহ বুখারী বা মুসলিম শরিফের –সালাত,আযু,সাও্ম ও আখলাক সংক্রান্ত হাদীস প্রতিদিন ১টি করে।
বইঃ আমরা রাহীকূল মাখতুম থেকে রাসূল স. এর জীবনী জানবো ইন শা আল্লাহ।
ফেব্রুয়ারী মাসের—
১ম সপ্তাহেঃ প্রথম থেকে -৬৬ পৃষ্ঠা
২য় সপ্তাহেঃ ৬৭- ৯৫ পৃষ্ঠা
৩য় সপ্তাহেঃ ৯৬- ১৩২ পৃষ্ঠা
৪র্থ সপ্তাহেঃ ১৩৩- ১৭১ পৃষ্ঠা
মার্চ মাসের – ১ম সপ্তাহেঃ ১৭২- ২১৬ পৃষ্ঠা
২য় সপ্তাহেঃ – ২১৭ – ২৫৬ পৃষ্ঠা
৩য় সপ্তাহেঃ ২৫৭- ২৮০ পৃষ্ঠা
৪র্থ সপ্তাহেঃ ২৮০- ৩১২ পৃষ্ঠা
এপ্রিল মাসের – ১ম সপ্তাহেঃ ৩১৩- ৩৬১ পৃষ্ঠা
২য় সপ্তাহেঃ ৩৬২ – ৩৯২ পৃষ্ঠা
৩য় সপ্তাহেঃ ৩৯৩ – ৪৪৬ পৃষ্ঠা
৪র্থ সপ্তাহেঃ ৪৪৭- ৪৬৩ পৃষ্ঠা
মে মাসের – ১ম সপ্তাহেঃ ৪৬৪- ৪৭৪ পৃষ্ঠা
২য় সপ্তাহেঃ ৪৭৫ – ৫০৪ পৃষ্ঠা
৩য় সপ্তাহেঃ ৫০৫ – ৫২৬ পৃষ্ঠা
ভালো মন্দ আমরা সবাই মহান আল্লাহর সাহায্যে বুঝতে পারি। রামাদান আসার আগে আমরা একটি একটি করে নিজের ত্রুটিগুলো যা দীনের পথের আনন্দকে মাটি করে দেয় অর্থাৎ নিরানন্দ বানিয়ে দেয়, যার কারনে সময় দ্রুত চলে যায়, যার কারনে শয়তান অন্তরের বা ক্বালবের দরজা খোলা পেয়ে ঢুকে যায়, যার কারনে দীনের জ্ঞান অর্জনের জন্য সময় দিতে ধৈর্য্য থাকে না, যার কারনে সালাতে মন স্থীর থাকে না, যার কারনে বিবেক দূর্বল হয়ে নফস শক্তিশালী হয়ে উঠে—সেগুলো খুঁজে সনাক্ত করি।
রোগ সঠিকভাবে সনাক্ত করার পর তার সঠিক চিকিৎসা নেয়ার মাধ্যমে সুস্থ্য হওয়া যেমন সহজ মহান আল্লাহর সাহায্যে তেমনি চারিত্রিক দূর্বলতাগুলোকে নিজ ডায়েরীতে সনাক্ত করে চিকিৎসার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে শুরু করলে মহান আল্লাহর সাহায্যে দীনের পথের আনন্দকে অন্তরে উপলব্ধি করে সত্যিকার স্থায়ী সুখ শান্তির পরশ পেয়ে তৃপ্ত হতে পারবো। বলতে পারেন সেগুলো কি হতে পারে?
আজ এই প্রজন্মে প্রয়োজন সেই রকম মা, বোন, কন্যা এক কথায় আদর্শ মুমিনা নারী যে, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দুনিয়ার জিনিষ থেকে মূল্যবান জিনিষকে ধারন করতে সদা প্রস্তুত, আর তা হলো ঈমানী জীবনীশক্তি। আর কত আমরা আমাদের আবেগ দিয়ে দুনিয়ার ও সংসারের শুধু দেনা পাওনার হিসেব করে সময় পার করবো? অল্প কয়েকদিনের এই জীবনের সময়কে অর্থবহ করতে কেনো উদ্যোগী হবো না? শয়তানের পথে চলার জন্য কিভাবে আজকের মায়েদের তথা নারীদের কত সুন্দর সুন্দর পরিকল্পনায় যুক্ত করা হচ্ছে, আমরা ঈমানদার মুমিনারা কি এখনও ঘুমিয়ে অলসভাবে সময় পার করে যাবো? ঘর সাজানো, নিজকে সাজানো, ভোগ বিলাস, পরিবারে কে কি বললো আর কে কি দিলো না-এইটাই কি জীবনের মূল কাজ?
চলুন না আমরা আমাদের আল্লাহর দেয়া মর্যাদাকে উদ্ভাসিত করি ও জান্নাতী মুমিন হয়ে কিছু নমুনা রাখার চেষ্টায় ব্রত হই। এই রামাদানপূর্ব সময়ে আমাদের পরিকল্পনা হোক এই শপথকে কেন্দ্র করে। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।