তায়াম্মুম ও জুতা মোজার উপর মাসেহ

তায়াম্মুমঃ 

Power point Presentation

তায়াম্মুম ও জুতা মোজার উপর মাসেহ-২০২৩

তায়াম্মুমের ইতিহাসঃ

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ….. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী ’আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কোন এক সফরে বেরিয়েছিলাম। যখন আমরা ’বায়যা’ অথবা ’যাতুল জায়শ’ নামক স্থানে পৌছালাম তখন আমার একখানা হার হারিয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে হারের খোঁজে থেমে গেলেন আর লোকেরাও তাঁর সঙ্গে থেমে গেলেন, অথচ তাঁরা পানির নিকটে ছিলেন না। তখন লোকেরা আবূ বকর (রাঃ) এর কাছে এসে বললেনঃ ’আয়িশা কি করেছে আপনি কি দেখেন নি? তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও লোকদের আটকিয়ে ফেলেছেন, অথচ তাঁরা পানির নিকটে নেই এবং তাদের সাথেও পানি নেই।

আবূ বকর (রাঃ) আমার নিকট আসলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার উরুর উপরে মাথা রেখে ঘুমিয়েছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ তুমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর লোকদের আটকিয়ে ফেলেছো! অথচ আশেপাশে কোথাও পানি নেই। ’আয়িশা (রাঃ) বললেন আবূ বকর আমাকে খুব তিরস্কার করলেন আর, আল্লাহর ইচ্ছা, তিনি যা খুশি তাই বললেন। তিনি আমার কোমরে আঘাত দিতে লাগলেন। আমার উরুর উপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাথা থাকায় আমি নড়তে পারছিলাম না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভোরে উঠলেন, কিন্তু পানি ছিল না। তখন আল্লাহ তা’আলা তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল করলেন। তারপর সবাই তায়াম্মুম করে নিলেন।

উসায়দ ইবনু হুযায়র (রাঃ) বলেছেনঃ হে আবূ বকরের পরিবার বর্গ! এটাই আপনাদের প্রথম বরকত নয়। ’আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ তারপর আমি যে উটে ছিলাম তাকে দাঁড় করালে দেখি আমার হার খানা তার নীচে পড়ে আছে।সহীহ বুখারী ই ফা: ৩২৭, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৩৩৪

যাকারিয়্যা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) …. আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি এক সময়ে (তাঁর বোন) আসমা (রাঃ)-এর হার ধার করে নিয়ে গিয়েছিলেন। (পথিমধ্যে) হারখানা হারিয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটির খোঁজে লোক পাঠালেন। তিনি এমন সময় হারটি পেলেন, যখন তাদের সালাতের ওয়াক্ত হয়ে গিয়েছিল অথচ তাদের কাছে পানি ছিল না। তাঁরা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তারপর বিষয়টি তাঁরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বর্ণনা করেন। তখন আল্লাহ তা’আলা তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল করেন। সেজন্য উসায়দ ইবনু হুযায়র (রাঃ) ’আয়িশা (রাঃ)–কে লক্ষ্য করে বললেনঃ আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন। আল্লাহর কসম! আপনি যে কোন অপছন্দনীয় পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন, তাতেই আল্লাহ তা’আলা আপনার ও সমস্ত মুসলিমের জন্য কল্যাণ রেখেছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৩২৯, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৩৩৬

তায়াম্মুম কাকে বলে?

পানি পাওয়া না গেলে অথবা পানির ব্যবহার স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর হলে ওযু ছাড়া এর বিকল্প হিসেবে মাটি দ্বারা মুখ-হাত মুছে পবিত্র হওয়ার বিশেষ পদ্ধতিকে তায়াম্মুম বলা হয় ।

কোন কোন অবস্থায় তায়াম্মুম করা বৈধ?

সাধারণভাবে পানির অভাবে, এর ব্যবহার বা সংগ্রহে কোন ক্ষতি বা বিপদসংকুল অবস্থা সৃষ্টি হলেই পানির পরিবর্তে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করা জায়েয । আর সেগুলো হলো:

১. পানি পাওয়া না গেলে

ইমরান ইবনে হোসাইন (রা) বর্ণিত হাদীসে এসেছে- একবার এক সফরে এক লোক পানির অভাবে ওযূ করতে না পারায় সালাতে শরীক না হয়ে অন্যত্র দাঁড়িয়ে থাকে। বিষয়টি জানতে পেরে রাসূলুল্লাহ (স) তাকে বললেন, “পাক মাটি ব্যবহার করো, তোমার জন্য এটাই যথেষ্ট।” (বুখারী: ৩৪৪) তবে পানি না পেলে আশপাশে কারো কাছে পানি আছে কি না তা খোঁজাখুজি করে দেখবে।

২. পানির ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হলে

ওযুর অঙ্গে কোন ঘা বা ক্ষত স্থান থাকলে, আর এ অবস্থায় পানি ব্যবহার করলে রোগ বৃদ্ধি বা রোগমুক্তি বিলম্বিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে ওযূর বদলে তায়াম্মুম জায়েয, এ বিষয়ে জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা)-এর একটি স্পষ্ট হাদীস রয়েছে। (দেখুন আবু দাউদ: ৩৩৬ নং হাদীসের মর্ম)।

৩. ঠাণ্ডার তীব্রতার কারণে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা থাকলে

ঠাণ্ডার তীব্রতার কারণে তা ব্যবহারে যদি কোন রোগ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, আর পানি গরম করার কোন সহজলভ্য পথও না থাকে তবে সে মুহূর্তে তায়াম্মুম করা বৈধ হবে। এমনকি গোসল ফরয হলেও তায়াম্মুমই যথেষ্ট। সাহাবী আমর ইবন আস (রা) একবার এক শীতের রাতে তার স্বপ্নদোষ হলে পানি খুব ঠাণ্ডা হওয়ার কারণে ওযূ না করে তিনি তায়াম্মুম করে নামাযের ইমামতী করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ (স) বিষয়টি জেনে শুধু একটু হাসলেন, আর কিছুই বললেন না । (আবু দাউদ: ৩৩৪)

৪. পানি সংগ্রহ কষ্টকর হলে

যেমন শত্রুর আক্রমণ, মাল চুরি হয়ে যাওয়া বা জীবনের ঝুঁকি বা ইজ্জতহানী হওয়ার ভয় অথবা এমন অসুস্থ হওয়া যে নিজে গিয়ে পানি আনতে পারছে না বা সহায়তা করবে এমন কেউ নেই, এমন অবস্থা যেন পানি না থাকা বা না পাওয়ার মতোই। তাই এ অবস্থায় তায়াম্মুম জায়েয। (মুগনী- ১/৩১৫)

৫. পরিমাণ স্বল্পতা পানি সাথে আছে, কিন্তু পরিমাণে কম। আর এ দ্বারা ওযূ করলে খাবার পানি ফুরিয়ে যাবে অথবা রান্নার পানির অভাব পড়বে বা সফররত অবস্থায় অন্য কোথাও পানি পাওয়া যাবে কি না তা অনিশ্চিত। এমন আশঙ্কা থাকলে উক্ত অবস্থায় তায়াম্মুম করা যাবে। (মুগনী- ১/৩৪৩) ৬. সময় সংকীর্ণতা পানি খোঁজাখুজি করতে গেলে নামাযের সময় চলে যেতে পারে, সালাত কাযা হয়ে যেতে পারে, এমন ঝুঁকিপূর্ণ মুহূর্তে তায়াম্মুম করে সালাত আদায় জায়েয আছে।

কী কী বস্তু দ্বারা তায়াম্মুম করা যায়?

মাটি, বালি, কাঁকর ও সিমেন্ট ইত্যাদি। তাছাড়া মাটির তৈরি হাড়ি-পাতিল ও ইট দ্বারাও তায়াম্মুম হবে। কোন কোন ফকীহর মতে, পাথর দ্বারাও তায়াম্মুম জায়েয। কারণ পাথর মাটিরই অন্তর্ভুক্ত এক প্রকার কঠিন শীলা পদার্থ । দ্রব্যটি মাটির মতো হলে যেমন চুন, সুরমা ইত্যাদি দিয়েও তায়াম্মুম জায়েয, ইনশাআল্লাহ । তবে লোহা, প্লাস্টিক, কাঠ, কাপড়, সোনা, চাদি, পিতল, কাঁচ, রঙ, কাগজ ও ছাই এসব বস্তু দিয়ে তায়াম্মুম হবে না।

মাটি ও পানি কোনটাই পাওয়া না গেলে কী করব?

মাটি ও পানি কোনটাই পাওয়া না গেলে সে অবস্থায় ওযু বা তায়াম্মুম ছাড়াই সালাত আদায় করতে পারবে। (দেখুন বুখারী: ৩৩৬ নং হাদীসের মর্ম)। এরপরও নামায না পড়ে থাকার অনুমতি নেই।

ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: “আমি বিছানায় শয্যাশায়ী। নড়াচড়া করার মত শক্তি রাখি না। এমতাবস্থায় আমি নামাযের জন্য কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করতে পারি ও নামায পড়তে পারি? জবাবে তাঁরা বলেন: এক: মুসলিমের উপর পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা ওয়াজিব। যদি কোন রোগের কারণে কিংবা অন্য কোন কারণে পানি ব্যবহার করতে অক্ষম হয় তাহলে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে। যদি তায়াম্মুমও করতে না পারে তাহালে তার উপর থেকে পবিত্রতার বিধান মওকুফ হয়ে যাবে এবং সে যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায় নামায পড়বে। আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: “তোমরা সাধ্যমত আল্লাহ্‌কে ভয় কর”। আল্লাহ্‌ তাআলা আরও বলেন: “তবে দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোন কষ্ট চাপিয়ে দেননি।”[সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত: ৭৮] পক্ষান্তরে, পেশাব ও পায়খানার যা কিছু বের হয় সেটা পাথর দিয়ে কিংবা পবিত্র টিস্যুপেপার দিয়ে পরিষ্কার করাই যথেষ্ট। এগুলো দিয়ে ময়লা বের হওয়ার স্থানটি তিন বা ততোধিকবার পরিষ্কার করবে; যাতে করে স্থানটি নির্মল হয়ে যায়।”[ফাতাওয়াল লাজনাদ্‌ দায়িমা (৫/৩৪৬)]

তায়াম্মুমের ফরয কয়টি ও কী কী?

১. নিয়ত করা, ২. মুখমণ্ডল মাসেহ করা, ৩. হাত মাসেহ করা।

তায়াম্মুমের জন্য কী কী কাজ সুন্নাত?

১. শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা,

২. প্রথমে মুখমণ্ডল ও পরে হাত মাসেহ করা,

৩. দু হাতের তালু দিয়ে মাটির উপর হাত মারা,

৪. মাটিতে হাত মারার পর সেখানে ফু দেওয়া ও হাত ঝাড়া দেওয়া।

৫. প্রথমে ডান হাত ও পরে বাম হাত মাসেহ করা।

কী কী কারণে তায়াম্মুম ভঙ্গ হয়ে যায়?

১. যেসব কারনে ওযূ ভেঙে যায় বা গোসল ফরয হয় এমন কিছু ঘটলে ।

২. পানি পাওয়া গেলে ।

৩. যেসব উযরের কারণে তায়াম্মুম করা যায়, ঐসব উযর দূরীভূত হয়ে গেলে ।

তায়াম্মুম করার পদ্ধতি কী?

১. প্রথমে মনে মনে নিয়ত করবে । অর্থাৎ এ তায়াম্মুম ওযূর বদলে অথবা গোসল ফরয হয়ে থাকলে গোসলের পরিবর্তে সে ইচ্ছা পোষণ করবে। মুখে কোন কিছুই বলা লাগবে না।

২. অতঃপর ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ পড়বে।

৩. এরপর দুই হাতের তালু পাক মাটির উপর মেরে ধুলোবালি থাকলে ফু দিয়ে বা ঝাড়া দিয়ে পরিষ্কার করে দু’হাত দিয়ে মুখমণ্ডল হালকাভাবে একবার মাসেহ করবে। তারপর ডান হাত মাসেহ করবে বাম হাত দ্বারা, আর সবশেষে বাম হাত মাসেহ করবে ডান হাত দ্বারা। তবে এর বিপরীতও জায়েয। নিয়ম হলো এক হাতের তালু দিয়ে অপর হাতের পিঠ মাসেহ করবে শুধুমাত্র কজি পর্যন্ত, কনুই পর্যন্ত নেওয়ার প্রয়োজন নেই। (দেখুন: এ সম্পর্কিত হাদীস, বুখারী: ৩৪৭, মুসলিম: ৩৬৮)।

উল্লেখ্য যে,

(ক) মুখ ও হাত মাসেহ করার জন্য মাটিতে হাত মারবে মাত্র একবার, মুখ মাসেহের জন্য একবার, আবার হাত মাসেহের জন্য আরেকবার এভাবে দু’বার প্রয়োজন নেই । দু’বার হাত মারার হাদীসটি দুর্বল । বিশুদ্ধ হলো, মাটিতে মাত্র একবার হাত মারা।

(খ) কনুই পর্যন্ত হাত মাসেহ করার পক্ষে কোন সহীহ হাদীস নেই। আছে দুর্বল হাদীস । কাজেই শুদ্ধ হলো, শুধুমাত্র হাতের কজি পর্যন্ত মাসেহ করা। যা সহীহ বুখারীতে এসেছে । সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যাকার ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রা) বলেছেন, তায়াম্মুম বিষয়ে বুখারী ও মুসলিম ব্যতীত অন্যান্য গ্রন্থে বর্ণিত হাদীসগুলো দুর্বল । অতএব, বিজ্ঞ ফকীহগণের মতে, সহীহ হাদীসের বিপরীতে দুর্বল হাদীস আমল করা ঠিক নয়।

তায়াম্মুমের বিবিধ মাসাইল

১. তায়াম্মুম করে সালাত আদায়ের পরপরই পানি পাওয়া গেলে- এ সালাত আবার নতুন করে আদায় করা লাগবে না।

২. যার উপর গোসল ফরয এমন লোক যদি গোসল করলে রোগ বৃদ্ধি পায় তাহলে গোসল না করে তায়াম্মুম করলেই তার জন্য যথেষ্ট।

৩. একই তায়াম্মুমে একাধিক ওয়াক্তের নামায আদায় করা জায়েয। (আল মুমতি)। প্রতি ওয়াক্তে পুনঃপুন তায়াম্মুম করার পক্ষে যেসব কথাবার্তা বা আছার রয়েছে এগুলো শুদ্ধ নয়।

৪. ওযূ ও ফরয গোসল উভয়ের জন্য যদি একসাথে তায়াম্মুম করে, অতঃপর শুধু ওযু ভঙ্গের কারণ ঘটে তাহলে শুধু ওযূর তায়াম্মুম ভঙ্গ হবে। গোসলের তায়াম্মুম ভঙ্গ হবে না। তবে যদি পুনরায় গোসল ফরয হয় তাহলে সে তায়াম্মুমও ভঙ্গ হয়ে যাবে ।

৫. পানি খোঁজাখুজি না করেই তায়াম্মুম করে সালাত আদায় করল, অথচ পাশেই পানি রয়েছে এমন হলে সালাত বাতিল হয়ে যাবে । (ফাতাওয়া ইসলামিক সউদী উলামা কমিটি- ১/২২০)।

৬. কেউ যদি সালাত আদায় অবস্থায় পানির সন্ধান পেয়ে যায় তাহলে তার উচিত নামায ছেড়ে দিয়ে পুনরায় ওযু করে সালাত আদায় করা। (ফিকহুস্ সুন্নাহ- ১/৬৩)

৭. ওযু ও গোসল করে যা যা করা বৈধ, তায়াম্মুম করেও সেসব কাজ করা জায়েয। কেননা, তায়াম্মুম ওযূ গোসলের পরিবর্তে । (ফিকহুস সুন্নাহ)।

৮. যেসব দ্রব্য দিয়ে তায়াম্মুম করা জায়েয নেই, ঐসব বস্তুর উপর যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে ধুলোবালি পড়ে থাকে তাহলে ঐসব বস্তুর উপর হাত মেরে তায়াম্মুম করা জায়েয হবে

 

জুতার বা মোজার উপর মাসেহ করাঃ

আলহামদু লিল্লাহ।.

চামড়ার মোজা কিংবা কাপড়ের মোজার ওপর মাসেহ করার সময়কাল শুরু হয় প্রথমবার ওযু ভাঙ্গার পর প্রথমবার মাসেহ করা থেকে। প্রথমবার মোজা পরিধানের সময় থেকে নয়। এ বিষয়টি জানার জন্য 9640 নং প্রশ্নোত্তর দেখা যেতে পারে।

মাসেহ করার পদ্ধতি:

দুই হাতের ভেজা আঙ্গুলগুলো দুই পায়ের আঙ্গুলের ওপর রাখবে। এরপর হাত দুইটি পায়ের গোছার দিকে টেনে আনবে। ডান পা ডান হাত দিয়ে মাসেহ করবে; বাম পা বাম হাত দিয়ে মাসেহ করবে। মাসেহ করার সময় হাতের আঙ্গুলগুলো ফাঁকা ফাঁকা করে রাখবে। একাধিকবার মাসেহ করবে না।[দেখুন: শাইখ ফাউযানের ‘আল-মুলাখ্‌খাস আল-ফিকহি ১/৪৩]

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন: অর্থাৎ মোজার যে অংশ মাসেহ করা হবে সেটা উপরের অংশ। শুধু পায়ের আঙ্গুলের দিক থেকে পায়ের গোছার দিকে হাত টেনে আনবে। একত্রে দুই হাত দিয়ে দুই পা মাসেহ করবে। অর্থাৎ ডান হাত দিয়ে ডান পা মাসেহ করবে এবং একই সময়ে বাম হাত দিয়ে বাম পা মাসেহ করবে। যেমনটি দুই কান মাসেহ করার ক্ষেত্রেও করা হয়। কেননা সুন্নাহ থেকে বাহ্যিকভাবে এটাই জানা যায়। দলিল হল মুগিরা বিন শুবা (রাঃ) এর উক্তি: “তিনি দুই পায়ের ওপর মাসেহ করেছেন”।তিনি এ কথা বলেননি যে, ডান পা দিয়ে শুরু করেছেন। বরং বলেছেন: “দুই পায়ের ওপর মাসেহ করেছেন”। এ কারণে সুন্নাহ থেকে বাহ্যিকভাবে এটাই জানা যায়। হ্যাঁ, যদি এমন হয় যে, তার এক হাত কাজ করে না সেক্ষেত্রে সে বাম পায়ের আগে ডান পা মাসেহ করে তাহলে ঠিক আছে। অনেক মানুষ দুই হাত দিয়ে ডান পা মাসেহ করে এবং দুই হাত দিয়ে বাম পা মাসেহ করে— এর কোন ভিত্তি নেই। তবে ব্যক্তি মোজার উপরের অংশ যেভাবেই মাসেহ করুক না কেন সেটা জায়েয হবে। আমরা এখানে যেটা আলোচনা করেছি সেটা হচ্ছে উত্তম পদ্ধতি কোনটি সে সম্পর্কে।[সমাপ্ত]

[দেখুন: ফাতাওয়াল মারআ আল-মুসলিম ১/২৫০]

মোজার দুই পার্শ্ব কিংবা পেছনের অংশ মাসেহ করবে না। যেহেতু এ বিষয়ে কোন দলিল নেই। শাইখ উছাইমীন বলেন: “কেউ হয়ত বলতে পারে যে, বাহ্যিক দৃষ্টিতে মোজার ওপরের অংশ মাসেহ করার চেয়ে নীচের অংশ মাসেহ করা অধিক যুক্তিযুক্ত। কারণ নীচের অংশে মাটি ও ময়লা লাগে। কিন্তু, আমরা চিন্তাভাবনা করে পেয়েছি মোজার ওপরের অংশ মাসেহ করা অধিক যুক্তিযুক্ত এবং বিবেক-বুদ্ধিসম্মত। কারণ এ মাসেহ দ্বারা পরিষ্কার করা বা নির্মল করা উদ্দেশ্য নয়। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি ইবাদত পালন করা। যদি আমরা মোজার নীচের অংশ মাসেহ করতাম তাহলে তো মোজা আরও বেশি ময়লা হয়ে যেত। আল্লাহই ভাল জানেন।

[দেখুন ‘আল-শারহুল মুমতি ১/২১৩]

সূত্র: শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ

চামড়ার মোজার উপর মাসেহ করার জন্য শর্ত চারটি:

প্রথম শর্ত: পবিত্র অবস্থায় মোজাদ্বয় পরিধান করা। দলিল হচ্ছে মুগিরা বিন শু’বা (রাঃ)কে উদ্দেশ্য করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “মোজাদ্বয়কে রেখে দাও; কারণ আমি সে দুটো পবিত্র অবস্থায় পরিধান করেছি।”

দ্বিতীয় শর্ত: মোজাদ্বয় সেটা চামড়ার হোক কিংবা কাপড়ের হোক পবিত্র হতে হবে। নাপাক মোজার উপর মাসেহ করা জায়েয নেই। দলিল হচ্ছে- একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবীদেরকে নিয়ে জুতা পায়ে দিয়ে নামায আদায় করছিলেন। নামায আদায়কালে তিনি জুতাজোড়া খুলে ফেলেন এবং জানালেন যে, জিব্রাইল (আঃ) তাঁকে অবহিত করেছেন যে, জুতাদ্বয়ে নাপাকি আছে।[ইমাম আহমাদ তার মুসনাদ গ্রন্থে আবু সাঈদ খুদরি থেকে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। এর থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, নাপাক জিনিস নিয়ে নামায পড়া নাজায়েয। আর নাপাক জিনিস মাসেহ করতে গেলে যেটা দিয়ে মাসেহ করা হবে সেটাতে নাপাকি লেগে সেটাও নাপাক হয়ে যাবে। তাই সেটা নাপাক জিনিসকে পবিত্র করবে না।

তৃতীয় শর্ত: মোজাদ্বয় মাসেহ করা যায় ছোট অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জন করার ক্ষেত্রে। জানাবাত বা যে কারণে গোসল ফরয হয় সে অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জনের ক্ষেত্রে মাসেহ করা যায় না। দলিল হচ্ছে সাফওয়ান বিন আস্‌সালের (রাঃ) হাদিস: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন আমরা যখন সফরে থাকি তখন আমরা যেন তিনদিন তিনরাত জানাবাত ব্যতীত আমাদের মোজা না খুলি। অর্থাৎ পায়খানা, পেশাব বা ঘুমের কারণে যেন মোজা না খুলি।”[মুসনাদে আহমাদ গ্রন্থে সাফওয়ান বিন আস্‌সাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে] এ হাদিসের দলিল থেকে জানা গেল ছোট অপবিত্রতার ক্ষেত্রে মাসেহ চলে; বড় অপবিত্রতার ক্ষেত্রে নয়।

চতুর্থ শর্ত: শরিয়ত নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে মাসেহ করতে হবে। সে সময়সীমা মুকীমের জন্য একদিন এক রাত। আর মুসাফিরের জন্য তিনদিন তিনরাত। দলিল হচ্ছে আলী বিন আবু তালেব (রাঃ) এর হাদিস তিনি বলেন: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুকীমের জন্য একদিন একরাত ও মুসাফিরের জন্য তিনদিন তিনরাত নির্ধারণ করেছেন; অর্থাৎ মোজার উপর মাসেহ করার সময়কাল”[সহিহ মুসলিম] এ সময়কাল শুরু হবে ওযু ভঙ্গ হওয়ার পর প্রথমবার মাসেহ করা থেকে এবং শেষ হবে মুকীমের ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টা পর। আর মুসাফিরের ক্ষেত্রে ৭২ ঘণ্টা পর। যদি আমরা ধরে নিই যে, এক লোক মঙ্গলবার ফজরের সময় ওযু করে ঐ দিন এশার নামায আদায় করা পর্যন্ত এ ওযুর উপর ছিল। রাতে ঘুমিয়েছে। বুধবার ভোরে ফজরের নামাযের জন্য উঠে ঠিক ভোর পাঁচটায় মোজার উপর মাসেহ করেছে। এক্ষেত্রে তার মোজা মাসেহ করার সময়কাল শুরু হবে বুধবার ভোর পাঁচটা এবং শেষ হবে বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটা। যদি ধরা হয় যে, বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটার আগে সে ব্যক্তি মোজার উপর মাসেহ করেছে তাহলে সে ব্যক্তি যতক্ষণ পর্যন্ত পবিত্রতার উপর থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত এ ওযু দিয়ে ফজরের নামায ও অন্যান্য নামায পড়া তার জন্য জায়েয। কেননা আলেমদের অগ্রগণ্য মতানুযায়ী, মাসেহ করার সময় পূর্ণ হয়ে গেলেও তার ওযু ভাঙ্গবে না। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্রতার জন্য কোন সময় নির্ধারণ করেননি। তিনি মাসেহ করার সময় নির্ধারণ করেছেন। মাসেহ করার সময় পূর্ণ হয়ে গেলে আর মাসেহ করা যাবে না। কিন্তু কেউ যদি মাসেহ এর সময়কাল পূর্ণ হওয়ার সময় ওযু অবস্থায় থাকে তাহলে তার এ পবিত্রতা অব্যাহত থাকবে; নষ্ট হবে না। কারণ এ পবিত্রতা একটি শরয়ি দলিলের ভিত্তিতে সাব্যস্ত হয়েছে। আর যা শরয়ি দলিলের মাধ্যমে সাব্যস্ত হয় সেটা অন্য কোন শরয়ি দলিল ছাড়া রহিত হবে না। অথচ মোজার উপর মাসেহ করার সময়কাল পূর্ণ হয়ে গেলে ওযু ভেঙ্গে যাওয়ার পক্ষে কোন দলিল নেই। যে কোন কিছু এর মূল বিধানের উপর অটুট থাকে যতক্ষণ না মূল বিধান দূর হয়ে যাওয়ার পক্ষে কোন দলিল পাওয়া যায়।

এগুলো হচ্ছে চামড়ার মোজার উপর মাসেহ করার শর্ত। কোন কোন আলেম আরও কিছু শর্ত উল্লেখ করে থাকেন। তবে, সেসব শর্তের কোন কোনটি আপত্তিকর।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

আমেরিকা ও কানাডাতে বসবাসকারী লোকেরা হাঁটু পর্যন্ত লম্বা কটন বা উলের তৈরী মোজা পরে; মোজার ওপরে জুতা পরে। কিন্তু জুতা টাখনুর উপরে উঠে না। ওজু করার সময় এমন জুতার উপরে মাসেহ করা জায়েয হবে কি? জুতা খুলে ফেলার পরও কি ওজু ঠিক থাকবে? যখন তারা নামাযে যায় তখন জুতা খুলে রাখে। সেক্ষেত্রে ওজু কি অটুট থাকবে?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

এক:

যদি কোন জুতা পায়ের টাখনু পর্যন্ত ঢেকে রাখে তাহলে সে জুতার উপর মাসেহ করা জায়েয আছে। কেননা সেটা চামড়ার মোজার সমতুল্য।

তবে, পায়ের যতটুকু স্থান ধৌত করা ফরয জুতা যদি ততটুকু স্থান আচ্ছাদিত না করে, সে স্থানটুকু হচ্ছে- পায়ের টাখনুসহ সম্পূর্ণ পায়ের পাতাদ্বয়; সেক্ষেত্রে জমহুর আলেমের মতে, মাসেহ করা জায়েয হবে না।[দেখুন: আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা আল-কুয়েতিয়্যা (৩৭/২৬৪)]

এটি শাইখ বিন বায ও ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির মনোনীত অভিমত।

শাইখ বিন বায বলেন: চামড়ার মোজা ও কাপড়ের মোজার ওপর মাসেহ করার শর্ত হচ্ছে– যতটুকু স্থান ধোয়া ফরয ততটুকু স্থানকে ঢাকতে হবে।[মাজমুউ ফাতাওয়া বিন বায (১০/১১১), দেখুন: ফাতাওয়াল লাজনা আদ-দায়িমা (৫/৩৯৬)]

দুই

যদি কেউ যতটুকু স্থান ধৌত করা ফরজ ততটুকু স্থান আচ্ছাদিত করে এমন জুতার উপর মাসেহ করে, এরপর পবিত্র অবস্থায় জুতা খুলে ফেলে সেক্ষেত্রে আলেমগণের সঠিক মতানুযায়ী তার পবিত্রতা নষ্ট হবে না।

ইতিপূর্বে 100112 নং ও 26343 নং প্রশ্নোত্তরে এ মাসয়ালাটি উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে খেয়াল রাখতে হবে এ খুলে ফেলার মাধ্যমে মাসেহ করার যে রুখসত (শিথিলতা) সেটা শেষ হয়ে যাবে। যদি সে দ্বিতীয়বার জুতা পরে ওজু করার ইচ্ছা করে তাহলে তার কর্তব্য হবে জুতা ও মোজা খুলে ফেলা এবং পায়দ্বয় ধৌত করা।

তিন:

যদি সে মোজা পরে মোজার উপর খাটো জুতা পরে -যে জুতা টাখনু ঢাকে না- সেটার তিনটি অবস্থা হতে পারে:

১। শুধু জুতার ওপর মাসেহ করা; ইতিপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এটা জায়েয নেই।

২। শুধু মোজাদ্বয়ের ওপর মাসেহ করা। অর্থাৎ জুতা খুলে মোজাদ্বয়ের ওপর হাতদ্বয় দিয়ে মাসেহ করা। এরপর পুনরায় জুতা পরা। এটা জায়েয; এতে কোন অসুবিধা নেই। এ অবস্থায় তিনি জুতা খুলে ফেললেও তার ওজু ভাঙ্গবে না।

৩। জুতা ও মোজা উভয়টির ওপরে মাসেহ করা। এটাও জায়েয।

কেউ যদি খাটো জুতার ওপর মাসেহ করে অবশিষ্ট মাসেহ মোজাদ্বয়ের ওপর করার মাধ্যমে মাসেহ পরিপূর্ণ করে সেক্ষেত্রে এ দুটো জিনিসের সাথে বিধান সম্পৃক্ত হয়ে যাবে। যার ফলে সে ব্যক্তি যদি শুধু জুতা খুলে ফেলে কিংবা মোজাদ্বয়ের সাথে জুতা খুলে ফেলে তার পবিত্রতা ভঙ্গ হবে না; তার জন্য নামায পড়া জায়েয হবে। কিন্তু পরবর্তীতে পাদ্বয় ধৌত করে পরিপূর্ণ ওজু করা ছাড়া জুতা বা মোজার ওপর মাসেহ করা জায়েয হবে না।

স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্রে (৫/৩৯৬) এসেছে: ওজুকারী শুধু মোজার ওপরে মাসেহ করতে পারেন এবং শুধু বুট জুতার ওপরেও মাসেহ করতে পারেন; যদি বুট জুতা টাখনুদ্বয়কে আচ্ছাদন করে এবং পায়ের পাতার চামড়া দেখা না যায়।

আর যদি টাখনুদ্বয় আচ্ছাদন না করে কিন্তু টাখনু ঢেকে রেখেছে এমন মোজা পায়ে থাকে সেক্ষেত্রে ধৌত করার স্থান পর্যন্ত মোজাদ্বয়ের ওপরেও মাসেহ করে তাহলে এ জুতা ও মোজা পরে নামায পরতে পারবে।

শাইখ বিন বায বলেন:

যদি বুট জুতা সেন্ডেলের মত টাখনুসহ পায়ের পাতা না ঢাকে তখন কেউ যদি মোজাসহ বুটের উপর মাসেহ করে সেক্ষেত্রে এ দুটো জিনিসের সাথে হুকুম সম্পৃক্ত হয়ে যাবে…। সে যদি শুধু মোজার ওপর মাসেহ করত তাহলে সেটাই তার জন্য যথেষ্ট হত, তার যখন ইচ্ছা তখন বুট জুতা খুলে ফেলাও জায়েয হত, কিন্তু তার পবিত্রতা অব্যাহত থাকত। যেহেতু মাসেহ করার হুকুম শুধু মোজা এর সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে।[মাজমুউ ফাতাওয়া বিন বায (২৯/৭৩)]

আমরা প্রশ্নকারী ভাই এর এই দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাচ্ছি যে, অগ্রগণ্য মতানুযায়ী চামড়ার মোজার সাথে সম্পৃক্ত বিধি-বিধান কাপড়ের মোজা ও আচ্ছাদনকারী জুতার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব