দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে
৪। আর রব্ব الرَّبُّ প্রতিপালক, স্রষ্টা, পরিচালক, মালিক, অধিপতি
رَبّ মহান আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের অন্যতম। যার অর্থ হল, প্রত্যেক জিনিসকে সৃষ্টি ক’রে তার প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবস্থা ক’রে তাকে পরিপূর্ণতা দানকারী।
মহান আল্লাহ সমগ্র বিশ্বচরাচরের স্রষ্টা,অধিপতি, পরিচালক এবং প্রতিপালক। তিনি সৃষ্টি জগতকে অসংখ্য নিয়ামত সহকারে প্রতিপালন করেন আর তার প্রিয়ভাজনদেরকে এমনভাবে প্রতিপালন করেন যেন তাদের অন্তরগুলো সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত থাকে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, الْحَمْدُ لِلَّـهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
“যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।” (সূরা ফাতিহা: ২)
আভিধানিক তত্ত্ব
একঃ প্রতিপালন করা, ক্রমবিকাশ ও ক্রমোন্নতি সাধন এবং বর্ধিত করণ।
দুইঃ সংকুচিত করা, সংগ্রহ করা এবং একত্র করা।
তিনঃ তত্ত্বাবধান করা, অবস্থার সংশোধন ও পরিবর্তন সাধন করা, দেখাশোনা করা এবং জামিন হওয়া।
রব শব্দটি নিম্নোক্ত অর্থ সমূহ প্রকাশ করেঃ কোরআন মজীদে রব শব্দটি এসব অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। কোথাও এসবের কোন এক বা দুই অর্থ উদ্দেশ্য; কোথাও এর চেয়েও বেশী, আর কোথাও পাঁচটি অর্থই এক সাথে বোঝান হয়েছে।
একঃ প্রতিপালক, প্রয়োজনীয় বস্তু সরবরাহকারী, তরবিয়ত ও ক্রমবিকাশ দাতা।
সে বললো, আল্লাহ্র আশ্রয়! যিনি আমাকে ভালোভাবে রেখেছেন, তিনিই তো আমার রব।ইউসুফ-২৩
দুইঃ জিম্মাদার, তত্ত্বাবধায়ক, দেখাশোনা এবং অবস্থার সংশোধন- পরিবর্তনের দায়িত্বশীল।
বিশ্ব জাহানের রব, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, আমাকে পথ প্রদর্শন করেন, পানাহার করান, আমি পীড়িত হলে আরোগ্য দান করেন, তিনি ব্যতীত তোমাদের এ সকল রব তো আমার দুশমন।-শোয়ারা-৭৭-৮০
সিঙ্গায় ফুঁক দেয়া মাত্রই তারা নিজ নিজ ঠিকানা থেকে আপণ রব-এর দিকে বেরিয়ে পড়বে।-ইয়াসীন-৫১
তিনঃ যিনি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেন। যাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন লোক সমবেত হয়।
চারঃ নেতা- সর্দার, যার আনুগত্য করা হয়, ক্ষমতাশালী কর্তা , যার নির্দেশ চলে, যার কর্তৃত্ব স্বীকার করে নেয়া হয়, হস্তক্ষেপ ও বল প্রয়োগের অধিকার আছে যার।
তারা আল্লাহ্র পরিবর্তে নিজেদের দরবেশ, ওলামা-পাদ্রী-পুরোহিতদেরকে নিজেদের রব বানিয়ে নিয়েছে। (তওবা-৩১)
বার্তাবাহক ইউসুফের কাছে হাযির হলে ইউসুফ তাকে বললোঃ তোমার রব-এর কাছে ফিরে যাও এবং তাকে জিজ্ঞেস করো, যেসব মহিলারা নিজেরাই নিজেদের হাত কেটেছিল, তাদের কি অবস্থা। আমার রবতো তাদের চক্রান্ত সম্পর্কে ওয়াকিফহাল আছেনই।-ইউসুফ-৫০
এসব আয়াতে হযরত ইউসুফ (আঃ) মিসরীয়দের সাথে কথাবার্তাকালে মিসরের শাসনকর্তা ফিরাউনকে তাদের রব বলে বারবার উল্লেখ করেছেন। কারণ তারা তখন তার কেন্দ্রীয় কর্তৃত্ব, সার্বভৌমত্ব স্বীকার করতো, তাকে আদেশ-নিষেধের মালিক মনে করেন।
পাঁচঃ মালিক-মুনিব।
সুতরাং তাদের উচিত, এ ঘরের মালিকের ইবাদত করা, যিনি তাদের রিজিক সরবরাহের ব্যবস্থা করেছেন এবং ভয়-ভীতি থেকে তাদের নিরাপদ রেখেছেন। কোরাইশ-৩-৪
আল্লাহ, যিনি আরশের মালিক-তারা যেসব দোষ-ত্রুটির কথা বলছে তিনি সে সব হতে মুক্ত পবিত্র। আল-আম্বিয়া-২২
https://www.youtube.com/watch?v=DmuZO7wmrK8https://www.youtube.com/watch?v=DmuZO7wmrK8