ইবরাহীম আলাইহিস সালাম কোন ছেলেকে কুরবানী দিয়েছিলেন?

আমি জানি যে, মুসলিম বিশ্বাস মতে নবী ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তার ছেলে নবী ইসমাঈল আলাইহিস সালামকে কুরবানী করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু একজন অমুসলিম, যার সঙ্গে আমার কথাবার্তা হয়েছে, তিনি উল্লেখ করলেন যে, ব্যাপারাটা কুরআনে বলা নেই।

ব্যাপারটা নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে মনে হলো যে, কোন ছেলেকে কুরবানী করার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল সে ব্যাপারে কুরআনের ৩৭ নম্বর সূরার বর্ণনায় অস্পষ্টতা রয়েছে (আমার কাছে যে ইংরেজি অনুবাদটা আছে, সেটা অনুযায়ী)।

দয়া করে নবী ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এবং তিনি যে কুরবানী করতে চেয়েছিলেন, সে ব্যাপারে মুসলিমদের অবস্থান দলীল-প্রমাণ সহকারে ব্যাখ্যা করুন।

উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তাঁর বান্দা ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু ইবরাহীম আলাইহিস সালাম সম্বন্ধে বলেন,

﴿وَقَالَ إِنِّي ذَاهِبٌ إِلَىٰ رَبِّي سَيَهۡدِينِ ٩٩ رَبِّ هَبۡ لِي مِنَ ٱلصَّٰلِحِينَ ١٠٠ فَبَشَّرۡنَٰهُ بِغُلَٰمٍ حَلِيمٖ ١٠١ فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ ٱلسَّعۡيَ قَالَ يَٰبُنَيَّ إِنِّيٓ أَرَىٰ فِي ٱلۡمَنَامِ أَنِّيٓ أَذۡبَحُكَ فَٱنظُرۡ مَاذَا تَرَىٰۚ قَالَ يَٰٓأَبَتِ ٱفۡعَلۡ مَا تُؤۡمَرُۖ سَتَجِدُنِيٓ إِن شَآءَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلصَّٰبِرِينَ ١٠٢ فَلَمَّآ أَسۡلَمَا وَتَلَّهُۥ لِلۡجَبِينِ ١٠٣ وَنَٰدَيۡنَٰهُ أَن يَٰٓإِبۡرَٰهِيمُ ١٠٤ قَدۡ صَدَّقۡتَ ٱلرُّءۡيَآۚ إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجۡزِي ٱلۡمُحۡسِنِينَ ١٠٥ إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ ٱلۡبَلَٰٓؤُاْ ٱلۡمُبِينُ ١٠٦ وَفَدَيۡنَٰهُ بِذِبۡحٍ عَظِيمٖ ١٠٧ وَتَرَكۡنَا عَلَيۡهِ فِي ٱلۡأٓخِرِينَ ١٠٨ سَلَٰمٌ عَلَىٰٓ إِبۡرَٰهِيمَ ١٠٩ كَذَٰلِكَ نَجۡزِي ٱلۡمُحۡسِنِينَ ١١٠ إِنَّهُۥ مِنۡ عِبَادِنَا ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ١١١ وَبَشَّرۡنَٰهُ بِإِسۡحَٰقَ نَبِيّٗا مِّنَ ٱلصَّٰلِحِينَ ١١٢ وَبَٰرَكۡنَا عَلَيۡهِ وَعَلَىٰٓ إِسۡحَٰقَۚ وَمِن ذُرِّيَّتِهِمَا مُحۡسِنٞ وَظَالِمٞ لِّنَفۡسِهِۦ مُبِينٞ ١١٣﴾ [الصافات: ٩٩، ١١٣]

“আর সে বলল (আগুন থেকে তার উদ্ধার হওয়ার পরে): নিশ্চয় আমি আমার রবের কাছে যাচ্ছি। তিনিই আমাকে দিকনির্দেশনা দেবেন। হে আমার রব! আমাকে সৎকর্মশীল সন্তান দান করুন। সুতরাং আমরা তাকে সহনশীল পুত্রসন্তানের সুসংবাদ দিলাম এবং যখন সে (ছেলেটি) তার সাথে হাঁটার মতো বড় হলো, তখন সে বললো, হে আমার পুত্র! আমি একটা স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে জবাই করছি (আমি তোমাকে আল্লাহর জন্য কুরবানী করছি)। তাহলে তুমি কি মনে কর! সে বলল, হে আমার পিতা! আপনাকে যে আদেশ করা হয়েছে, আপনি তা-ই করুন। ইনশাআল্লাহ, আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের মধ্যে পাবেন। তারপর তারা উভয়ে নিজেদেরকে (আল্লাহর ইচ্ছার কাছে) সমর্পণ করল এবং সে তাকে তার কপালের উপর সাজদারত অবস্থায় শুইয়ে দিল (অথবা কাত করে পাশের উপর শুইয়ে দিল)। আমরা তাকে বললাম, হে ইবরাহীম! তুমি তোমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছো! নিশ্চয় এভাবেই আমরা মুহসিন (সৎকর্মশীল) বান্দাদের পুরস্কৃত করি। নিশ্চয় ওটা ছিল স্পষ্ট পরীক্ষা এবং আমরা তাকে একটা বড় কুরবানী দিয়ে (অর্থাৎ একটা ভেড়া দিয়ে) মুক্ত করেছি এবং এটা আমরা পরবর্তী প্রজন্মগুলোর স্মরণে রেখেছি। ইবরাহীমের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। এভাবেই আমরা মুহসিন বান্দাদের পুরস্কৃত করে থাকি। নিশ্চয় সে আমাদের বিশ্বাসী বান্দাদের একজন ছিল এবং আমরা তাকে ইসহাকের ব্যাপারে সুসংবাদ দিলাম সৎকর্মশীলদের মাঝে থেকে একজন নবী হিসেবে। আমরা তাকে এবং ইসহাককে বরকত দান করলাম এবং তাদের বংশধরদের মধ্যে কতক সৎকর্মপরায়ণ এবং কতক নিজেদের মধ্যে স্পষ্ট যুলুমকারী। [সূরা আস-সাফফাত, আয়াত: ৯৯-১১৩]

আয়াতসমূহের তাফসীরে ইমাম ইবন কাসীর বলেন: আল্লাহ আমাদের বলেন যে, তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ইবরাহীম আলাইহিস সালাম যখন তার পিতৃভূমি থেকে হিজরত করলেন, তখন তিনি তার রবের কাছে চেয়েছিলেন যে, তিনি যেন তাকে সৎকর্মশীল সন্তান দান করেন। তাই আল্লাহ তাকে একজন ধৈর্যশীল পুত্রসন্তানের সুসংবাদ দিয়েছিলেন। এটা ছিল ইসমাঈল আলাইহিস সালামের ব্যাপারে। কেননা তিনি ছিলেন ইবরাহীম আলাইহিস সালামের ঔরসে জন্ম নেওয়া প্রথম সন্তান। এ ব্যাপারে বিভিন্ন দীনের (ইয়াহূদী, খ্রিষ্টান ও মুসলিম) অনুসারীদের মধ্যে কোনো মতভেদ নেই যে, ইবরাহীমের ঘরে ইসমাঈলই প্রথম জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

“এবং যখন সে তার সাথে হাঁটার মতো বড় হলো” এর অর্থ হচ্ছে, যখন সে বড় হয়েছিল এবং তার বাবার মতোই নিজেই নিজের দেখাশোনা করতে পারত। মুজাহিদ রহ. বলেন, “এবং যখন সে তার সাথে হাঁটার মতো বড় হলো” এর অর্থ হচ্ছে, যখন সে বড় হয়ে উঠেছিল এবং বাহনে চড়তে পারত, হাঁটতে পারত এবং তার বাবার মতো কাজ করতে পারত। এরকম একটা অবস্থা যখন আসল, তখন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম স্বপ্নে দেখলেন যে, তাকে তার ছেলেকে কুরবানী করার আদেশ দেওয়া হচ্ছে। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত এক মারফূ‘ হাদীসে এসেছে,

«رُؤْيَا الأَنْبِيَاءِ وَحْيٌ»

“নবীদের স্বপ্ন হচ্ছে ওহী”। (তিরমিযী, হাদীস নং ৩৬৮৯)

সুতরাং আল্লাহ তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে, তার প্রিয়পুত্রকে কুরবানী করার আদেশ দিয়ে পরীক্ষা করছিলেন, যে পুত্রকে তিনি তার বৃদ্ধাবস্থায় পেয়েছিলেন এবং তারপর শিশু অবস্থায় তাকে এবং তার মাকে মরুভূমিতে রেখে আসার আদেশ পেয়েছিলেন, এমন একটা উপত্যকায় যেখানে কোনো জনপ্রাণীর সাড়াশব্দ ছিল না, কোনো মানুষজন, কোনো বৃক্ষরাজি এবং কোনো পশু-পাখিও ছিল না। ইবরাহীম আলাইহিস সালাম আল্লাহর আদেশ পালন করলেন এবং আল্লাহর ওপর ভরসা করে তাদেরকে সেখানে রেখে আসলেন। আর আল্লাহ তাদের জন্য অপ্রত্যাশিত উৎস থেকে রিযিক পাঠালেন। এত কিছুর পরেও তার ঘরে প্রথম জন্ম নেওয়া ও তার একমাত্র পুত্রকে কুরবানী করার জন্য যখন আদেশ করা হলো, তিনি তখন তার প্রভুর ডাকে সাড়া দিলেন এবং তার রবের আদেশ মেনে, তিনি যা চেয়েছিলেন, তা করতে উদ্যত হলেন। তাই তিনি তার পুত্রকে ব্যাপারটা সম্বন্ধে বললেন যেন সে শান্ত থাকে এবং জোর করে তাকে কুরবানী করতে না হয়। তিনি বললেন, “হে আমার পুত্র! আমি একটি স্বপ্ন দেখেছি যে, আমি তোমাকে জবাই করছি (আমি তোমাকে আল্লাহর জন্য কুরবানী করছি)। তাহলে, তুমি কি মনে কর!”

ধৈর্যশীল ছেলেটি সাথে সাথেই জবাব দিল: “সে বলল, হে আমার পিতা! আপনাকে যে আদেশ করা হয়েছে, আপনি তা-ই করুন। ইনশাআল্লাহ আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের মধ্যে পাবেন”। সে সবচেয়ে উত্তম জবাবটিই দিয়েছিল তার পিতার প্রতি এবং মানবকুলের রবের প্রতি বাধ্যতার তা এক উদাহরণ। আল্লাহ তা‘আলা বললেন: “তারপর তারা উভয়ে নিজেদেরকে (আল্লাহর ইচ্ছার কাছে) সমর্পণ করল, এবং সে তাকে তার কপালের উপর সাজদারত অবস্থায় শুইয়ে দিল (অথবা তার কপালের পাশের উপর শুইয়ে দিল)”

এখানে বলা হয়েছে, “যখন তারা উভয়ে নিজেদেরকে সমর্পণ করল” এর অর্থ হচ্ছে তারা দু’জনে যখন নিজেদের আল্লাহর আদেশের কাছে সমর্পণ করল। “এবং সে তাকে শুইয়ে দিল” এর অর্থ হচ্ছে তিনি, তাকে (ছেলেকে) মাটির দিকে মুখ করে রাখলেন। এখানে বলা হল যে, তিনি তাকে পেছন থেকে যবেহ করতে চাইলেন, যেন তিনি যবেহ করার সময় তার মুখটা দেখতে না পান। এটা ছিল ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা, মুজাহিদ, সাঈদ ইবন জুবায়ের, কাতাদা এবং আদ-দাহহাক রহ.-এর মত।

“তারা উভয়ে নিজেদের সমর্পণ করল” এর অর্থ হচ্ছে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বললেন, “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” এবং “আল্লাহু আকবার” আর ছেলেটি বললো, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” কেননা সে মৃত্যুবরণ করতে যাচ্ছিল। আস-সুদ্দী এবং অন্যান্যরা বলেন যে, ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ছেলেটির গলদেশে ছুরি চালান, কিন্তু তা তাকে কাটে নি। এটা বলা হয়ে থাকে যে, একটা তামার পাত ছুরি ও তার গলার মাঝখানে রাখা হয়েছিল, আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন।

আর তখনই আল্লাহ তাকে ডেকে বললেন, “হে ইবরাহীম! তুমি তোমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছো!” এর অর্থ হচ্ছে, উদ্দেশ্য সাধিত হয়েছে, তোমাকে পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তোমার রব তোমাকে যে আদেশ করেছেন, তা পালন করার ব্যাপারে তোমার ইচ্ছা ও আনুগত্য প্রমাণিত হয়েছে। তোমার পুত্রের পরিবর্তে বিকল্প কুরবানীর ব্যবস্থা করা হবে -যেমনভাবে তুমি তোমার নিজের শরীরকে আগুনের শিখায় সমর্পণ করেছিলে এবং তোমার অতিথিদের সম্মান জানাতে তোমার সম্পদ খরচ করেছিলে, তা স্মরণ রেখে। তাই আল্লাহ বলেন: “নিশ্চয় এটা ছিল স্পষ্ট পরীক্ষা” অর্থাৎ এটা যে একটা পরীক্ষা ছিল তা একদম পরিষ্কার।

আর আল্লাহর বাণী “আমরা তাকে একটা বড় কুরবানী দিয়ে মুক্ত করলাম” এর অর্থ হচ্ছে আমরা তার ছেলের মুক্তিপণের ব্যবস্থা করলাম, তার পরিবর্তে যবেহ করার জন্য বিকল্প হিসেবে যা সহজ তিনি করেছিলেন। বেশিরভাগ স্কলারের মতে এটা ছিল শিং বিশিষ্ট খুব সুন্দর সাদা একটা ভেড়া। আস-সাওরী আব্দুল্লাহ ইবন উসমান ইবন খাইসাম, সাঈদ ইবন জুবায়ের হয়ে ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, “এটা ছিল এমন একটা ভেড়া যা চল্লিশ বছর ধরে জান্নাতে বেড়িয়েছে।”

ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে এরকম বর্ণনাও এসেছে যে ঐ ভেড়ার শুকনো মাথাটা এখন কা‘বা শরীফের ছাদের (পানি নির্গমনের) পাইপ থেকে ঝুলে রয়েছে। কেবল এটা থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, যাকে কুরবানী করার কথা ছিল, তিনি ছিলেন ইসমাঈল আলাইহিস সালাম। কেননা তিনি মক্কায় বসবাস করতেন এবং আমরা এমন কখনো শুনি নি যে ইসহাক আলাইহিস সালাম তার ছেলেবেলায় কখনো মক্কায় এসেছিলেন, আর আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন।

(দেখুন: ইবন কাসীরের আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া: ১/১৫৭-১৫৮)

সুতরাং স্পষ্ট হলো যে, যাকে কুরবানী করার কথা ছিল তিনি ইসহাক নন বরং তিনি ছিলেন ইসমা‘ঈল, তার কারণগুলো আমরা উপরে বর্ণনা করেছি। ইবন কাসীর তার তাফসীরে এই সকল আয়াতের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বেশ কিছু পয়েন্ট উল্লেখ করেন, যা প্রমাণ করে যে, ইসমাঈল আলাইহিস সালামেরই কুরবানী হওয়ার কথা ছিল। সেই পয়েন্টগুলো এরকম:

ইসমাঈল আলাইহিস সালাম ছিলেন তার প্রথম সন্তান, যার ব্যাপারে ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে সুসংবাদ দেওয়া হয়েছিল। মুসলিম ও আহলে কিতাবগণের ইজমা (ঐক্যমত্য) অনুসারে তিনি হলেন ইসহাক আলাইহিস সালামের চেয়ে বড়। আহলে কিতাবগণের কিতাবসমূহে এটা বর্ণিত হয়েছে যে, আল্লাহ ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে তার একমাত্র পুত্র কুরবানী দিতে আদেশ দিয়েছিলেন এবং কোনো কোনো কপিতে আছে যে, তাকে তার প্রথম জন্ম নেওয়া ছেলেকে কুরবানী দিতে বলা হয়েছিল।

সাধারণতঃ প্রথম ছেলে অন্যদের চেয়ে বেশি প্রিয় হয়ে থাকে, আর তাই তাকে কুরবানী করার আদেশ পরীক্ষার জন্য অধিকতর উপযোগী।
এটা উল্লেখ রয়েছে যে, এক ধৈর্যশীল পুত্রের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছিল এবং তাকেই কুরবানী করার কথা ছিল। এর পরে একই অধ্যায়ে বলা হয়েছে: “এবং আমরা তাকে ইসহাকের সুসংবাদ দিলাম…” যখন ফিরিশতারা ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের কাছে ইসহাকের সুসংবাদ নিয়ে আসলেন, তারা বললেন,

﴿ إِنَّا نُبَشِّرُكَ بِغُلَٰمٍ عَلِيمٖ ٥٣ ﴾ [الحجر: ٥٣]

“আমরা আপনাকে একটি জ্ঞানী পুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি”। [সূরা আল-হিজর, আয়াত: ৫৩]

আল্লাহ আরো বলেন: “কিন্তু আমরা তাকে (সারাকে) ইসহাকের সুসংবাদ দিলাম এবং তার পরে ইয়াকুবের সুসংবাদ দিলাম”। [সূরা হূদ, আয়াত: ৭১] এর অর্থ হচ্ছে, ইয়াকূব বলে একজন শিশুর জন্ম হবে তাদের (সারা এবং ইসহাকের) জীবদ্দশায় এবং তার থেকে অনেক বংশ বিস্তার লাভ করবে এবং এটা সঠিক শোনায় না যে, ইবরাহীমকে সেই ইসহাককেই কুরবানী করতে বলা হবে যখন তিনি ছোট ছিলেন তখন। কেননা আল্লাহ অঙ্গীকার করেছেন যে তার অনেক বংশধর থাকবে।

এখানে সূরা আস-সাফফাতে ইসমাঈলকে ধৈর্যশীল বলে বর্ণনা করা হয়েছে, যা কিনা এই পটভূমিতে যথার্থ। (তাফসীর ইবন কাসীর ৪/১৫) আর আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন।

শাইখ মুহাম্মাদ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
সম্পাদক: ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
সোর্সঃ ইসলামহাউজ ডট কম

https://islamqa.info/en/answers/5522/which-son-was-to-be-sacrificed