আল কুর’আন তেলাওয়াতে তারতীল

আসসালামু’আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে

মহান আল্লাহ আল কুর’আনে বলেছেন-

أَوْ زِدْ عَلَيْهِ وَرَتِّلِ الْقُرْآنَ تَرْتِيلًا

অথবা তার ওপর কিছু বাড়িয়ে নাও.আর কুরআন থেমে থেমে পাঠ করো মুজজাম্মিলঃ ৪

ترتيل বলে উদ্দেশ্য হলো ধীরে ধীরে সঠিকভাবে বাক্য উচ্চারণ করা। অর্থাৎ কুরআনের শব্দগুলো ধীরে ধীরে মুখে উচ্চারণ করার সাথে সাথে তা উপলব্ধি করার জন্য গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনাও করতে হবে। [ইবন কাসীর]

‘তারতিল’ শব্দটি দুটি অর্থে ব্যবহৃত হয়।

প্রথমত, ‘তারতিল’ মানে শুদ্ধ পাঠ ; এ অর্থে সকল প্রকার শুদ্ধ পাঠই তারতিল (এ তারতিল ফরজ)।

দ্বিতীয়ত, তারতিল শব্দটি ধীরে পড়া বা সুন্দর করে পড়া ।

পরিস্কার ও বিশুদ্ধ উচ্চারণসহ শব্দের অন্তর্নিহিত অর্থ চিন্তা করে তদ্বারা প্রভাবান্বিত হওয়াই আসল তারতীল।

অনেকেই দেখা যায় নিজস্ব একটি সুরে অভ্যস্থ হয়ে তেলাওয়াত করছেন কিন্তু সেইক্ষেত্রে উচ্চারন ও যেখানে লম্বা করে পড়তে হয় বা যেখানে লম্বা করে টেনে পড়া যাবে না, এই বিষয়গুলো সঠিক নেই। এই ক্ষেত্রে সুর হলেই তারতীল নয়।

ইংরেজী ভাষার কোন একটি শব্দ দ্বারা তারতীলের অর্থ প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আরবীতে এর অর্থ হচ্ছে ভাষা, দেহ ও মনের পরিপূর্ণ ঐক্যতান বজায় রেখে আস্তে আস্তে, থেমে থেমে, স্পষ্টভাবে, শান্তভাবে পরিমিত স্বরে, চিন্তা ভাবনা করে পড়া।

আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কুরআন পাঠের নিয়ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, শব্দগুলোকে টেনে টেনে পড়তেন। উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” পড়ে বললেন যে, তিনি আল্লাহ, রাহমান এবং রাহীম শব্দকে মদ্দ করে বা টেনে পড়তেন।” [বুখারী: ৫০৪৬]

কোরআন তেলাওয়াত:- ‘তেলাওয়াত’ এমন একটি শব্দ বা পরিভাষা- যার অর্থ অনেক ব্যাপক। সাধারণ অর্থে যে কোনো তেলাওয়াতকে ‘পড়া’ বোঝায়। কিন্তু যেকোনো জিনিস বা বই পড়াকে তেলাওয়াত বোঝায় না। তেলাওয়াত হলো- আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ গ্রন্থ বিশেষ করে পবিত্র কোরআন পড়া। এই কোরআন পড়ার জন্য কিছু নিয়ম-কানুন যাকে ব্যাকরণ বলা হয়, সেগুলো মেনে চলতে হবে। কোরআনের পরিভাষায় এই নিয়ম-কানুনকে বলা হয় তারতিল। ‘তারতিল’ মানে কোরআন থেমে থেমে পাঠ করাকে বোঝায়। তাই কোরআন তাড়াতাড়ি বা দ্রুতগতিতে না পড়াই শ্রেয়। ধীরে ধীরে প্রতিটি শব্দ সুন্দরভাবে মুখে উচ্চারণ করে কোরআন তেলাওয়াতের বিশেষ মাহাত্ম রয়েছে। তা হলো, এক একটি আয়াত পড়ে থামলে বা বিরতি নিলে মন আল্লাহর বাণীর অর্থ ও তার দাবীকে পুরোপুরি উপলদ্ধি করতে পারবে এবং তার বিষয়বস্তু দ্বারা প্রভাবিত হবে।   তারতিলের ভেতর কোরআনের প্রতিটি শব্দের বিশুদ্ধ উচ্চারণ করার বিষয়টিও রয়েছে। উচ্চারণের ক্ষেত্রে দু’টি বিষয়ের ওপর খেয়াল রাখতে হবে।

একটি হলো মাখরাজ বা উচ্চারণ স্থান। প্রতিটি ধ্বনি বাক প্রত্যঙ্গের ঠিক কোন স্থান থেকে উচ্চারিত হবে সেটি জানতে হবে।

আরেকটি হলো- সিফাত বা শব্দের অবস্থা ও গুণাবলি অনুযায়ী উচ্চারণ করা। কোরআন তেলাওয়াতের এই ব্যাকরণকে তাজবিদ বলা হয়। তাজবিদ জানার কোনো বিকল্প নেই। কোরআনকে সুন্দর করে সুরেলা কণ্ঠে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কোরআন দেখে দেখে পড়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণটা হলো, কোরআনের আয়াতের দিকে তাকালে এবং কানে সেই দেখা আয়াতের তেলাওয়াত শুনলে চোখ এবং কানের ওপর তার প্রভাব পড়ে। সেই প্রভাব চূড়ান্তভাবে অন্তরে গিয়ে আসন গাড়ে।

হুযায়ফা ইবনে ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু আনহু বৰ্ণনা করেন, একদিন রাতে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সালাত পড়তে দাঁড়ালাম। আমি দেখলাম, তিনি এমনভাবে কুরআন তেলাওয়াত করছেন যে, যেখানে তাসবীহের বিষয় আসছে সেখানে তিনি তাসবীহ পড়ছেন, যেখানে দোআর বিষয় আসছে সেখানে দোআ, করছেন এবং যেখানে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনার বিষয় আসছে সেখানে তিনি আশ্রয় প্রার্থনা করছেন। [মুসলিম: ৭৭২]

আবু যার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বৰ্ণনা করেন, একবার রাতের সালাতে কুরআন তেলাওয়াত করতে করতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন এ আয়াতটির কাছে পৌছলেন “আপনি যদি তাদের শাস্তি দেন, তবে তারা আপনারই বান্দা। আর যদি আপনি তাদের ক্ষমা করে দেন, তাহলে আপনি পরাক্রমশালী ও বিজ্ঞ” তখন তিনি বার বার এ আয়াতটিই পড়তে থাকলেন এবং এভাবে ভোর হয়ে গেল। [মুসনাদে আহমাদ: ৫/১৪৯]

সাহাবী ও তাবেয়ীগণেরও এই অভ্যাস ছিল। তাছাড়া, যথাসম্ভব সুললিত স্বরে তিলাওয়াত করাও তারতীলের অন্তর্ভুক্ত।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে নবী সশব্দে সুললিত স্বরে তেলাওয়াত করেন, তার কেরাআতের মত অন্য কারও কেরাআত আল্লাহ তা’আলা শুনেন না। [বুখারী: ৫০২৩, ৫০২৪]

তবে পরিস্কার ও বিশুদ্ধ উচ্চারণসহ শব্দের অন্তর্নিহিত অর্থ চিন্তা করে তদ্বারা প্রভাবান্বিত হওয়াই আসল তারতীল। অনুরূপভাবে সুন্দর করে পড়াও এর অংশ।

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে কুরআনকে সুন্দর স্বরে পড়ে না সে আমার দলভুক্ত নয়।” [বুখারী: ৭৫২৭]

অন্য হাদীসে এসেছে, “তোমরা কুরআনকে তোমাদের সুর দিয়ে সৌন্দর্যমণ্ডিত কর” [ইবনে মাজহঃ ১৩৪২]

আবু মুসা আল-আশা’আরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সুমিষ্ট স্বরে কুরআন পাঠ করতেন বিধায় রাসূল তার প্রশংসা করে বলেছিলেন, “তোমাকে দাউদ পরিবারের সুর দেয়া হয়েছে”। [বুখারী: ৫০৪৮, মুসলিম: ৭৯৩]

তাছাড়া হাদীসে আরও এসেছে, “কিয়ামতের দিন কুরআনের অধিকারীকে বলা হবে, তুমি পড় এবং আরোহন করতে থাক। সেখানেই তোমার স্থান হবে যেখানে তোমার কুরআন পড়ার আয়াতটি শেষ হবে।” [আবু দাউদ: ১৪৬৪, তিরমিযী: ২৯১৪]

 

আলেমগণ বলেন: কুরআনে কারীম তেলাওয়াত করার সময় ব্যক্তি যেন এ অনুভুতি লালন করে যে, প্রত্যেক আয়াতে আল্লাহ্‌ তাকে সম্বোধন করছেন। কিন্তু, শাইখ! আল্লাহ্‌ যখন কাফের, মুশরিক, মিথ্যাবাদী ও অন্যদেরকে সম্বোধন করছেন তখন আমি কিভাবে অনুভব করতে পারি যে, আল্লাহ্‌ আমাকেই সম্বোধন করছেন; অথচ আমি তো— মুসলিম ও আখিরাতে বিশ্বাসী মুমিন। বারাকাল্লাহু ফিকুম।

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

কুরআনের মাধ্যমে আল্লাহ্‌ বান্দাকে সম্বোধন করছেন সে অনুভূতি অর্জিত হবে কুরআন তেলাওয়াতের সময় চুপ থাকা, গভীর চিন্তাভাবনা (তাদাব্বুর) করা ও উত্তম আমলের মাধ্যমে। যেহেতু একজন মুসলিম এ ঈমান রাখে যে, কুরআনের মাধ্যমে আল্লাহ্‌ তার বান্দাদেরকেই সম্বোধন করেন: তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন, নিষেধ করেন। কখনও বিশেষ কোন গোষ্ঠীকে নির্দিষ্ট করে সম্বোধন করেন; আর কখনও সাধারণভাবে সম্বোধন করেন।

যখন আল্লাহ্‌ মুমিনদেরকে নির্দিষ্ট করে সম্বোধন করেন তখন একজন মুসলিম এ সম্বোধনটিকে স্মরণে আনবে এবং বলবে: আমরা শুনলাম এবং মানলাম। ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন: “যখন আপনি শুনবেন আল্লাহ্‌ তাআলা বলছেন: ‘হে যারা ঈমান এনেছ’ তখন আপনি কান খাড়া রাখুন। কারণ আল্লাহ্‌ হয়তো কোন ভাল কাজের নির্দেশ দিবেন কিংবা কোন মন্দ কাজ থেকে বারণ করবেন।”[তাফসিরে ইবনে কাছির (১/৩৭৪)]

যখন আল্লাহ্‌ সকল মানুষকে লক্ষ্য করে সম্বোধন করেন তখনও স্মরণ করবে যে আল্লাহ্‌ তাকে সম্বোধন করছেন: যদি সেটা কোন আদেশ হয় তাহলে সেটা পালন করবে, যদি কোন নিষেধ হয় তাহলে সেটা থেকে বিরত থাকবে, যদি কোন উপদেশ হয় তাহলে উপদেশ মোতাবেক আমল করবে।

গোটা কুরআনের ক্ষেত্রেই বান্দা এ অনুভুতি লালন করবে যে, আল্লাহ্‌ তাকে সম্বোধন করছেন। তবে কুরআনের যে অংশ তেলাওয়াত করা হচ্ছে সে অংশ মোতাবেক এ অনুভূতি ভিন্ন ভিন্ন হবে:

যখন কোন আনুগত্যের কথা উল্লেখ করা হবে তখন স্মরণে আনবে যে, আল্লাহ্‌ তাকে এ আনুগত্য করার নির্দেশসূচক সম্বোধন করছেন। যখন কোন পাপের উল্লেখ আসবে তখন স্মরণ করবে যে, আল্লাহ্‌ তাকে এ গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার নিষেধাজ্ঞাসূচক সম্বোধন করছেন। যখন ঈমানদারদের উল্লেখ আসবে তখন স্মরণ করবে যে, আল্লাহ্‌ তাদের সাথে মিত্রতা রাখা ও ভালবাসা পোষণ করার সম্বোধন করছেন। যখন কুফর ও নিফাক ওয়ালাদের উল্লেখ আসবে তখন স্মরণ করবে যে, আল্লাহ্‌ তাদের সাথে শত্রুতা রাখা ও ঘৃণা করার ব্যাপারে সম্বোধন করছেন।

যখন শয়তানের উল্লেখ আসবে তখন স্মরণে আনবে যে, শয়তানের শত্রুতা ও বিরুদ্ধাচারণ করা, তার অনুসরণ না করা এবং আল্লাহ্‌র আনুগত্য মোতাবেক আমল করার ব্যাপারে সম্বোধন হচ্ছে। আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: “হে বনী আদম! আমি কি তোমাদেরকে বলে দেইনি যে, তোমরা শয়তানের দাসত্ব করবে না, সে তোমাদের স্পষ্ট শত্রু? আর (বলে দেইনি যে,) আমারই ইবাদত করবে? এটাই তো সরল পথ।”[সূরা ইয়াসীন, আয়াত: ৬০-৬১]

যখন সত্য ও সত্যবাদীদের উল্লেখ আসবে তখন স্মরণে আনবে যে, আল্লাহ্‌ তাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য সম্বোধন করছেন।

যখন মিথ্যা ও মিথ্যাবাদীদের উল্লেখ আসবে তখন স্মরণে আনবে যে, আল্লাহ্‌ তাদের অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার জন্য সম্বোধন করছেন।

ইমাম আবু বকর আল-আজুর্‌রি (রহঃ) বলেন:

এরপর আল্লাহ্‌ তাআলা তার মাখলুককে কুরআন অনুধাবন করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি বলেন: “তবে কি তারা কোরআন অনুধাবন করে না; নাকি তাদের অন্তরে তালা লাগানো আছে?”[সূরা মুহাম্মদ, আয়াত: ২৪]

তিনি আরও বলেন: “তবে কি তারা কুরআন অনুধাবন করবে না? এই কুরআন যদি আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে আসত তাহলে তারা এতে অনেক বৈপরীত্য দেখতে পেত।”[সূরা নিসা, আয়াত: ৮২]

মুহাম্মদ বিন হুসাইন (তিনিই আজুর্‌রি) বলেন: আপনাদের প্রতি আল্লাহ্‌ রহম করুন! আপনারা কি দেখছেন না যে, আল্লাহ্‌ তাঁর বান্দাদেরকে তাঁর বাণী অনুধাবন করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করছেন। যে ব্যক্তি তাঁর বাণী অনুধাবন করে সে রব্বকে চিনতে পারে, তাঁর মহা ক্ষমতা ও শক্তি জানতে পারে, ঈমানদারদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ অবগত হতে পারে, জানতে পারে আল্লাহ্‌ তাঁর বান্দাদের উপর যা কিছু ফরয করেছেন; তখন ওয়াজিব পালন করাকে সে নিজের উপর অবধারিত করে নেয় এবং তার মহান মনিব যা কিছু থেকে থেকে সতর্ক করেছেন সেটা থেকে সতর্ক হয় এবং যা কিছুর প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন সেগুলোর প্রতি আগ্রহী হয়।

নিজে কুরআন তেলাওয়াত করার সময় কিংবা অন্যের তেলাওয়াত শ্রবণ করার সময় যে ব্যক্তির অবস্থা এমন হবে তার জন্য কুরআন নিরাময়ক। সে ব্যক্তির সম্পদ না থাকলেও সে ধনী। আত্মীয়-স্বজন না থাকলেও সে শক্তিমান। যখন অন্যেরা নির্জনতা অনুভব করে তখন সে তা অনুভব করে না। সে যখন কোন সূরা পড়া শুরু করে তখন তার লক্ষ্য থাকে কখন আমি যা তেলাওয়াত করছি সেটা থেকে নসীহত গ্রহণ করতে পারব? তার উদ্দেশ্য এটা থাকে না যে কখন আমি সূরাটি শেষ করতে পারব? তার উদ্দেশ্য থাকে কখন আমি আল্লাহ্‌র ভাষ্য উপলব্ধি করতে পারব? কখন আমি (নিষেধ) থেকে বিরত হব? কখন আমি শিক্ষা গ্রহণ করব? কেননা তার কুরআন তেলাওয়াত হচ্ছে- ইবাদত। গাফলতি নিয়ে কোন ইবাদত হয় না। আল্লাহ্‌ই তাওফিকদাতা।[“আখলাকু হামালাতিল কুরআন”, পৃষ্ঠা-৩]

অতএব, আল্লাহ্‌র কিতাব তেলাওয়াতকারীর অবস্থা এমনই হোক।

আল্লাহ্‌ তাআলাই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

https://islamqa.info/en/answers/146675/ruling-on-rushing-when-reciting-and-praying