বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
সুরা বাকারাঃ ১৭তম রুকু (১৪২-১৪৭)আয়াত
১। কা’বা মুসলিমদের কেবলা সাব্যস্ত হোক – এটাই ছিল রাসূল সা-এর আন্তরিক বাসনা।ক্বিবলা পরিবর্তনের নির্দেশটি তৃতীয় হিজরীর রজব বা শাবান মাসে নাযিল হয়। আসরের সময় এসেছিল। ফলে (সর্বপ্রথম) আসরের নামায কাবা শরীফের দিকে মুখ করে পড়া হয়েছে। রসূল (সাঃ) হিজরত করে মক্কা থেকে মদীনায় যান, তখন প্রায় ১৬-১৭ মাস পর্যন্ত বায়তুল মুক্বাদ্দাসের দিকে মুখ করে নামায পড়েন।এর উদ্দেশ্য ছিলো ইমানের পরীক্ষাও।
ইয়াহুদীদের ক্বিবলা হল, বায়তুল মুক্বাদ্দাসের পাথর (যার উপর গম্বুজ নির্মিত আছে)। আর খ্রিষ্টানদের ক্বিবলা হল, বায়তুল মুক্বাদ্দাসের পূর্বদিক।
২। وَسَطًا শব্দের অর্থ সর্বোৎকৃষ্ট বিষয়। আবু সায়ীদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম عدل শব্দ দ্বারা وسط এর ব্যাখ্যা করেছেন। [বুখারী: ৭৩৪৯] এর অর্থ সর্বোৎকৃষ্ট। আবার وسط অর্থ হয় মধ্যবর্তী, মধ্যপন্থী।
ক) মুসলিম সম্প্রদায়কে ভারসাম্যপূর্ণ তথা ন্যায়ানুগ করা হয়েছে যাতে তারা সাক্ষাদানের যোগ্য হয়।
খ) উম্মতে মুহাম্মাদী হল মধ্যপন্থী অর্থাৎ, অতিরঞ্জন ও অবজ্ঞা থেকে তারা পবিত্র। আর এটাই হল ইসলামের শিক্ষা।
গ) এ উম্মাত হাশরের ময়দানে একটি স্বাতন্ত্র্য লাভ করবে। সকল নবীর উম্মতরা তাদের হিদায়াত ও প্রচারকার্য অস্বীকার করবে, তখন মুসলিম সম্প্রদায় নবীগণের পক্ষে সাক্ষ্যদাতা সাক্ষ্য দেবে যে, নবীগণ সর্বযুগেই আল্লাহর পক্ষ থেকে আনীত হিদায়াত তাদের কাছে পৌছে দিয়েছেন।
৩। মসজিদুল হারাম অর্থ সম্মান ও মর্যাদাসম্পন্ন মসজিদ। এর অর্থ হচ্ছে এমন ইবাদতগৃহ, যার মধ্যস্থলে কা’বাগৃহ অবস্থিত। যেখানেই অবস্থান করুক এই দিকেই কিবলা নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
৪। সত্য-জ্ঞান আসার পরও যদি ইহুদি নাসারাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করেন, তাহলে নিশ্চয় যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।
৫। কিতাবীরা রাসূল সা কে সেরূপ জানে যেরূপ তারা নিজেদের সন্তানদেরকে চিনে, জেনে বুঝেই সত্য গোপন করে।
আল্লাহর নামঃ رَءُوۡف—সহানুভূতিশীল رَّحِیۡم — পরম দয়ালু
সুরা বাকারাঃ ১৮তম রুকু (১৪৮-১৫২)আয়াত
১। হে মুসলিমগণ! তোমরা সৎকাজে প্রতিযোগিতামূলকভাবে অগ্রসর হও! অর্থাৎ, নেকী ও সৎ পথে প্রতিষ্ঠিত থাকো।
২। যেখানেই থাকুক না কেনো সকলকেই ফিরে যেতেই হবে আখেরাতে আল্লাহর দরবারে।
৩। আবারো কিবলার কথা এসেছে, আল্লাহ সবই জানেন যা মানুষ করে থাকে।
৪। আল্লাহকেই ভয় করার কথা এসেছে, মুশরিকদের নয়।
৫। অবশ্যই আল্লাহর নির্দেশের উপর আমল মানুষকে অনুগ্রহ, পুরস্কার ও সম্মানের অধিকারী বানায় এবং সে সুপথপ্রাপ্তি তথা হিদায়াতের তওফীক লাভ করে।
৬। রাসূল সা এর কাজঃ
ক) আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করেন, খ) জীবন পরিশুদ্ধ করেন এবং
গ) কিতাব ও ঘ) হেকমত শিক্ষা দেন। আর তা শিক্ষা দেন যা তোমরা জানতে না।
৭। ঈমানদারদের জন্য——
فَاذۡکُرُوۡنِیۡۤ اَذۡکُرۡکُمۡ وَ اشۡکُرُوۡا لِیۡ وَ لَا تَکۡفُرُوۡنِ
- কাজেই তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব। আর তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও এবং অকৃতজ্ঞ হয়ে না।১৫২
সুরা বাকারাঃ ১৯তম রুকু (১৫৩-১৬৩)আয়াত
ঈমানদারদের সম্বোধন করে বলা হয়েছে-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اسۡتَعِیۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَ الصَّلٰوۃِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ مَعَ الصّٰبِرِیۡنَ
- তোমরা সাহায্য চাও সবর ও সালাতের মাধ্যমে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সবরকারীদের সাথে আছেন।১৫৩
৮। শহীদদেরকে মৃত না বলা তাঁদের শ্রদ্ধা ও সম্মানের জন্য। পক্ষান্তরে তাঁদের সে জীবন বারযাখের জীবন যা আমাদের অনুভূতি ও উপলব্ধির অনেক ঊর্ধ্বে
৯। আল্লাহ অবশ্যই পরিক্ষা করবেন- কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা।
কাদের প্রতি রব-এর বিশেষ অনুগ্রহ এবং রহমত বর্ষিত হয়ঃ
১০। বিপদ মুসিবতে ধৈর্যশীল যারা বলে اِنَّا لِلّٰهِ وَ اِنَّاۤ اِلَیۡهِ رٰجِعُوۡنَ (আমরা তো আল্লাহরই। আর নিশ্চয় আমরা তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী), তাদের জন্য সুসংবাদ দিয়েছেন আল্লাহ। তারাই সৎপথে পরিচালিত।
১১। আল্লাহর (شَعَآئِرِ)নিদর্শনঃ সাফা ও মারওয়া (যেখানে হজ্জ ও ওমরায় সাঈ করা হয়)
১২। যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোন সৎকাজ করবে,নিশ্চয় আল্লাহ্ উত্তম পুরস্কারদাতা, সর্বজ্ঞ।
১৩। যারা আল্লাহর স্পষ্ট নিদর্শন ও পথ-নির্দেশ অবতীর্ণ হওয়ার পর গোপন করে তাদের শাস্তিঃ আল্লাহ ও অভিসম্পাতকারীরা লা’নত করে। (আগুনের লাগাম মুখে পরানো হবে কিয়ামতের দিন। আবু দাউদঃ ৩৬৫৮,)
১৪। যারা তাওবা করে নিজেদেরকে সংশোধন করেছে এবং সত্যকে সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেছে,এদের তাওবা আল্লাহ কবুল করবেন।
১৫। যারা কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরন করেন- আল্লাহ, ফেরেশতাগণ ও সকল মানুষের লা’নত। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। শাস্তি শিথিল হবে না এবং অবকাশও দেয়া হবে না।
আল্লাহর পরিচয়ঃ وَ اِلٰـهُکُمۡ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ ۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الرَّحۡمٰنُ الرَّحِیۡمُ
আর তোমাদের ইলাহ এক ইলাহ, দয়াময়, অতি দয়ালু তিনি ছাড়া অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই। ১৬৩ (এটা আল্লাহর ইসমে আযম)
আল্লাহর নামঃ شَاکِر – গুণগ্রাহী, উত্তম পুরস্কারদাতা, التَّوَّاب – তওবা গ্রহণকারী الرَّحِیۡمُ – পরম দয়ালু।
সুরা বাকারাঃ ২০তম রুকু (১৬৪-১৬৭)আয়াত
১। মহান আল্লাহর নিদর্শন সমূহঃ বিবেকবান কওমের(জ্ঞানী লোকের) জন্য।
আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের পরিবর্তনে, মানুষের উপকারী দ্রব্যবাহী চলমান সামুদ্রিক জাহাজে এবং আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ যা ভূ-পৃষ্ঠকে ছড়িয়ে দিয়েছেন সকল বিচরণশীল প্রাণী,বায়ুর দিক পরিবর্তনে, নিয়ন্ত্রিত মেঘমালা। বিবেকবান কওমের(জ্ঞানী লোকের) জন্য।
২। দুই শ্রেনীর চরিত্রের কথা এসেছে-
যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যকে আল্লাহর সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে,তাদেরকে ভালবাসে আল্লাহ্র ভালবাসার মতই।
পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকে সর্বাধিক ভালবাসে।
৩। আর যারা যুলুম করেছে যদি তারা আযাব দেখতে পেত, (তবে তারা নিশ্চিত হত যে,) সমস্ত শক্তি আল্লাহরই। আর নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।
৪। অনুসৃত ব্যক্তিবর্গরা অনুসারীদের প্রতি বিমুখ হবে, তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে ও তাদের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। আফসোস করবে-
‘হায়! যদি একটিবার (পৃথিবীতে) ফিরে যাবার সুযোগ আমাদের ঘটত, তাহলে আমরাও তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতাম যেমন তারা আমাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল!’
তারা আগুন থেকে বের হতে পারবে না।
সুরা বাকারাঃ ২১তম রুকু (১৬৮-১৭৬)আয়াত
১। সকল মানুষকে আহবান করে বলেছেন—
- হে মানুষ! যমীনে যা কিছু বৈধ ও পবিত্র খাদ্যবস্তু রয়েছে তা থেকে খাও।
- শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে প্রকাশ্য শত্রু।
- শয়তানের কাজঃ ক) শয়তান মনের মাঝে ওয়াসওয়াসা বা সন্দেহের উদ্ভব করে।
খ) শয়তান নির্দেশ দেয় (سُوْءٌ) মন্দ ও অশ্লীল (فَحْشَاءٌ) কাজের (ক্ষুদ্র ও বৃহৎ পাপ)এবং
গ) আল্লাহ সম্বন্ধে এমন সব বিষয় বলার যা তোমরা জান না।
২। না জেনে আল্লাহ ও তাঁর দ্বীন সম্পর্কে কথা বলা বড় গোনাহ।
৩। পিতৃপুরুষরা কিছু বুঝতো না এবং সৎপথেও পরিচালিত ছিল না, তবুও তারা আল্লাহর আহবান অগ্রাহ্য করে পিতৃপুরুষদের অনুসরন করতেই চায়।
৪। যারা কুফরী করেছে তাদের উপমাঃ এমন কিছুকে ডাকছে যে হাঁক-ডাক ছাড়া আর কিছুই শুনে না। তারা বধির, বোবা, অন্ধ, কাজেই তারা বুঝে না।
৫। এবার মুমিনগণ!কে সম্বোধন করে বলা হয়েছে- শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদাত করতে চাইলে
আল্লাহ যেসব পবিত্র বস্তু দিয়েছেন তা থেকে খাও এবং আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
৬। হারাম খাদ্য তালিকাঃ মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোশত এবং যার উপর আল্লাহর নাম ছাড়া অন্যের নাম উচ্চারিত হয়েছে(৪), কিন্তু যে নিরূপায় অথচ নাফরমান এবং সীমালংঘনকারী নয় তার কোন পাপ হবে না।
৭। যারা আল্লাহর বিধান গোপন করে এবং এর বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে, তাদের শাস্তিঃ (সত্য কিতাব সম্পর্কে বিভিন্ন মতভেদে লিপ্ত)
তারা নিজেদের পেটে আগুন ছাড়া আর কিছুই খায় না। আর কেয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাদের সাথে কথা বলবেন না এবং তাদেরকে পবিত্রও করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। তারাই হিদায়াতের বিনিময়ে ভ্রষ্টতা এবং ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি ক্রয় করেছে; সুতরাং আগুন সহ্য করতে তারা কতই না ধৈর্যশীল!
আল্লাহর নামঃ غَفُوۡر – অতি ক্ষমাশীল رَّحِیۡمٌ – পরম দয়ালু
সুরা বাকারাঃ ২২তম রুকু (১৭৭-১৮২)আয়াত
ক। যে সৎ কাজ করলে সত্যাশ্রয়ী ও মুত্তাকী হওয়া যায়,আল্লাহ জানিয়েছেন- ৬টি গুনের কথা জানা যায়ঃ(পূর্ব পশ্চিমে মুখ ফিরানো নয় বরং
১। ঈমানঃ আল্লাহ্, শেষ দিবস, ফেরেশতাগণ, কিতাব সমূহ ও নবীগণের প্রতি।
(২) সম্পদ দান করবে তাঁর ভালবাসায়
আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, অভাবগ্রস্ত, মুসাফির, সাহায্যপ্রার্থী ও দাসমুক্তির জন্য।
৩। সালাত প্রতিষ্ঠা করবে, ৪। যাকাত দিবে, ৫। প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করবে
(৬) সর্বাবস্থায় সবর ধারন করবে(অর্থ-সংকটে, দুঃখ-কষ্টে ও সংগ্রাম-সংকটে)।
খ। কিসাসের বিধান জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
- (কিসাস’-এর শাব্দিক অর্থ সমপরিমাণ বা অনুরূপ। অর্থাৎ অন্যের প্রতি যতটুকু যুলুম করা হয়েছে, তার সমপরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করা তার পক্ষে জায়েয এর চাইতে বেশী কিছু করা জায়েয নয়।)
- কিসাস কেবল ইচ্ছাকৃত হত্যার বেলায়ই প্রযোজ্য
- আলেম ও ফেকাহবিদগণের সর্বসম্মত অভিমত অনুযায়ী ‘কিসাস’-এর হক আদায় করার জন্য ইসলামী আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে।
- লাঘব এবং অনুগ্রহ (অর্থাৎ, ক্বিস্বাস, ক্ষমা অথবা মুক্তিপণ গ্রহণ এই তিনটি পদ্ধতিই) আল্লাহর পক্ষ থেকে খাস মানুষের জন্যই। ইতিপূর্বে তাওরাতধারীদের জন্য কেবল ক্বিস্বাস ও ক্ষমা ছিল। মুক্তিপণ ছিল না। আর ইঞ্জীলধারীদের মাঝে কেবল ক্ষমা ছিল; ক্বিস্বাস, মুক্তিপণও ছিল না।
- হে বুদ্ধি-বিবেকসম্পন্নগণ! কিসাসের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে জীবন, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর।
গ। অসিয়ত(উইল)এর কথা (পিতা মাতা,আত্মিয় স্বজন) এসেছে যা মিরাসের আয়াত নাযিল পূর্বে ছিলো।
মিরাসের আয়াত দিয়ে ও হাদিস দিয়ে এই অসিয়ত রহিত হয়ে যায়।
“আল্লাহ্ তা’আলা প্রত্যেক হকদারের হক নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুতরাং এখন থেকে কোন ওয়ারিসের জন্য অসিয়াত নেই”।তিরমিযী: ২১২০, আবু দাউদ: ৩৫৬৫
ঘ। অসিয়ত জানার পর পরিবর্তন করলে তারা গনাহগার হবে। তবে অসিয়াতকারীর পক্ষপাতিত্ব কিংবা পাপের আশংকায় মীমাংসা করে দে্য,তাহলে গোনাহগার হবে না।
আল্লাহর নামঃ سَمِیۡع -সর্বশ্রোতা عَلِیۡمٌ -সর্বজ্ঞ غَفُوۡر -ক্ষমাপরায়ণ
সুরা বাকারাঃ ২৩তম রুকু (১৮৩-১৮৮)আয়াত
১। মুমিনদের সম্বোধন করে বলা হয়েছেঃ
ক) সাওম ফরয করা হয়েছে তাকওয়া অর্জনের জন্য,পূর্ববর্তীদের যেমন করা হয়েছিল।
খ) অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে।
প্রাথমিক নির্দেশনায় ছিলো- সিয়াম কষ্টসাধ্য তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদইয়া- একজন মিসকীনকে খাদ্য দান করা।
যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করে কল্যাণকর। সিয়াম পালন অধিক কল্যান।
গ) রমাদান মাসে কুর’আন নাযিল হয়েছে
* কুর’আন মানুষের জন্য পথ প্রদর্শনের জন্য, আলাহর স্পষ্ট নিদর্শন যা এই পথ পেতে সহায়ক এবং সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী।
* এই আয়াতের দ্বারা সিয়াম বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। শুধুমাত্র অসুস্থ ও সফরে থাকাকালীন সম্ভব না হলে পরবর্তিতে গুনে গুনে আদায় করবে।
* আল্লাহ আমাদের জন্য সহজ চান এবং আমাদের জন্য কষ্ট চান না।
* হিদায়াত অর্থাৎ কুর’আন পাওয়ার কারনে মহান রবের প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা আদায় করার নির্দেশনা এসেছে।
ঘ) فَاِنِّیۡ قَرِیۡبٌ নিশ্চয়ই আল্লাহ বান্দার অতি নিকটে। যখন কেউ আমাকে আহবান করে আমি তার আহবানে সাড়া দেই।
ঙ) সঠিক পথে চলার জন্য যা দরকার- আল্লাহর ডাকে সাড়া দেয়া, আল্লাহর প্রতি ঈমান
চ) সাহরীর সময় যতক্ষণ রাতের কালোরেখা থেকে উষার সাদা রেখা স্পষ্টরূপে প্রকাশ না হয়
ছ) আর মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীর সাথে সংগত হয়ো না। এগুলো আল্লাহর সীমারেখা। আয়াতসমূহ সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করার কারন যাতে তারা তাকওয়ার অধিকারী হতে পারে। ইতিকাফ-এর শাব্দিক অর্থ কোন এক স্থানে অবস্থান করা। কুরআন-সুন্নাহর পরিভাষায় কতগুলো বিশেষ শর্তসাপেক্ষে একটা নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে নির্দিষ্ট মসজিদে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলা হয়।
জ) কারো অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষন নিষেধ। অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে বিচারকদের কাছে পেশ করাও হারাম।
সুরা বাকারাঃ ২৪তম রুকু (১৮৯-১৯৬)আয়াত
১) নতুন চাঁদ-‘এটা মানুষ এবং হজ্জের জন্য সময়-নির্দেশক।
২) তাকওয়া অবলম্বন যেনো সফলকাম হতে পার।(ইহরাম অবস্থায় বাড়ীর পিছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ কোন পূন্য নয়, তাকওয়া পূন্য)
৩) মদীনায় হিজরতের পর সর্বপ্রথম কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার আয়াতটি নাযিল হয়।
হিজরতের পূর্বে কাফেরদের সঙ্গে ‘জিহাদ ও ‘কিতাল তথা যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ ছিল। কাফেরদের অন্যায়-অত্যাচার নীরবে সহ্য করে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা, ক্ষমা ও উদারতা প্রদর্শনের শিক্ষা দেয়া হয়
৪। তবে আল্লাহ সীমালংঘনকারীদেরকে(لۡمُعۡتَدِیۡنَ) ভালবাসেন না।
৫। তাদেরকে যেখানে পাবে হত্যা করবে এবং যে স্থান থেকে তারা তোমাদেরকে বহিস্কার করেছে তোমরাও সে স্থান থেকে তাদেরকে বহিস্কার করবে।
এই আয়াতের অপব্যাখ্যা করা হয় সমাজে।অথচ তাদের বলতে বুঝায়-
কাফেরদের হত্যা করার জন্য শর্ত দেয়া হয়েছে দু’টি –
(১) তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধকারী সম্প্রদায় হবে। (২) তোমরা যদি এসব যুদ্ধবাজ কাফেরদের সাথে যুদ্ধ কর,মুসলিম মানবতার জন্য রহমতস্বরূপ সেহেতু হত্যা করতে সীমালংঘন করোনা।
৬। ‘হারাম সীমানায় যুদ্ধ করা নিষেধ। কিন্তু কাফেররা যদি যুদ্ধ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অনুমতি রয়েছে।
৭। কতক্ষন যুদ্ধ করা জরুরীঃ
ফেতনা(অশান্তি, শিরক বা ধর্মদ্রোহিতা) চূড়ান্তভাবে দূরীভূত হওয়া এবং দ্বীন একমাত্র আল্লাহর জন্য হয়ে যায়।
কাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নয় – যদি তারা নিবৃত্ত হয়, তবে অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে ছাড়া (অন্য কারো বিরুদ্ধে) আক্রমণ করা চলবে না।
৮।মক্কার মুশরিকরা হারাম মাসে যুদ্ধ শুরু করে তবে তার প্রতিরোধকল্পে মুসলিমরা কিভাবে যুদ্ধ করবে?( হিজরী ৬ষ্ঠ বছরে যুলহজ্জ মাসে রসূল (সাঃ) চৌদ্দশ সাহাবীদেরসহ উমরাহ করতে গেলে মক্কার কাফেররা বাধা দিল এবং আপোস হল যে, আগামী বছর মুসলিমরা তিন দিনের জন্য উমরাহ করার জন্য মক্কায় প্রবেশ করতে পারবে।
৯।হারাম মাসের পবিত্রতা অলংঘনীয়, তার অবমাননা কিসাসের অন্তর্ভুক্ত।কেউ মুসলিমদেরকে আক্রমণ করলে তারাও তাকে অনুরূপ আক্রমণ করবে।
১০।আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।
১১। যাকাত ছাড়াও অন্যান্য দান করার কথা বলা হয়েছে। বিসেষ করে দ্বীন কায়েমের জন্য।
১২।ধ্বংসের মুখে নিক্ষেপ করা বলতে ২টি বর্ননা জানা যায়-
- জিহাদ পরিত্যাগ করা মুসলিমদের জন্য ধ্বংসেরই কারণ।(আল্লাহ্ তা’আলা ইসলামকে যখন বিজয়ী ও সুপ্রতিষ্ঠিত করলেন, তখন আমাদের মধ্যে আলোচনা হলো যে, এখন আর জিহাদ কি প্রয়োজন? এখন আমরা আপন গৃহে অবস্থান করে বিষয়-সম্পত্তির দেখা-শোনা করি। এ প্রসঙ্গেই এ আয়াতটি নাযিল হল। [আবু দাউদ: ২৫১২, তিরমিযী: ২৯৭২]
- পাপের কারণে আল্লাহর রহমত ও মাগফেরাত থেকে নিরাশ হওয়াও নিজ হাতে নিজেকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়ার নামান্তর। [মাজমাউয যাওয়ায়িদ: ৬/৩১৭]
১৩।সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে কাজ করা- ইহসান। ইহসান যে করে-মুহসিনিন।
নিশ্চয় আল্লাহ মুহসীনদের ভালবাসেন। ইহসান দুরকমঃ (ক) ইবাদাতে ইহসান ও (খ) দৈনন্দিন কাজকর্ম, পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে ইহসান।
ক) ইবাদাতের ইহসানঃ ‘হাদীসে জিবরীল- এমনভাবে ইবাদাত কর, যেন তুমি আল্লাহকে দেখছ। আর যদি সে পর্যন্ত পৌছতে না পার, তবে এ বিশ্বাস রাখা অপরিহার্য যে, স্বয়ং আল্লাহ তোমাকে দেখছেন।[মুসলিমঃ
খ) দৈনন্দিন কাজকর্ম এবং পারিবারিক ও সামাজিক ব্যাপারে ইহসানঃ‘তোমরা নিজেদের জন্য যা কিছু পছন্দ কর, অন্যদের জন্যেও তা পছন্দ করো। আর যা তোমরা নিজেদের জন্য পছন্দ কর না, অন্যের জন্যেও তা পছন্দ করবে না’। [মুসনাদে আহমাদঃ ৫/২৪৭]
১৪। আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ ও উমরা পালনের নির্দেশ। বাধাপ্রাপ্ত হলে হাদঈ, ওয়াজিব শরীয়ত কারনে তরকে ফিদইয়া প্রদান নিয়ম জানানো হয়েছে।
১৫। তাকওয়া অবলম্বনের নির্দেশ ও সাবধানতা যে আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।(شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ)
সুরা বাকারাঃ ২৫তম রুকু (১৯৭-২১০)আয়াত
১। হজ্জের সম্পর্কে নির্দেশনাঃ
- সুবিদিত মাসগুলোতে, বিরত থাকবে হজের সময়- স্ত্রী-সম্ভোগ, অন্যায় আচরণ ও কলহ-বিবাদ।
- উত্তম কাজ কর আল্লাহ তা জানেন
- আর পাথেয় সাথে নিবে।তবে সবচেয়ে উত্তম পাথেয় হচ্ছে তাকওয়া। হে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিগণ! তোমরা আমারই তাকওয়া অবলম্বন কর।
- অনুগ্রহ(ব্যবসা বানিজ্য) সন্ধান করার অনুমতি আছে।
- আরাফাত হতে ফিরে মাশ’আরুল হারামের কাছে পৌছে আল্লাহকে স্মরণ করা যেভাবে শিক্ষা দিয়েছেন – ঠিক সেভাবে তাকে স্মরণ করার আদেশ।
২। হজ্জের অনুষ্ঠানাদি সমাপ্ত করার পর আল্লাহকে স্মরণ করবে যেভাবে পিতৃ পুরুষদের স্মরণ করে থাক, অথবা তার চেয়েও অধিক।
৩। যারা দুনিয়ার জন্য কল্যান চায় তাদের জন্য খেরাতে কিছুই নেই কিন্তু যারা এভাবে বলে-
দু’আঃ(দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যানের)
رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنۡیَا حَسَنَۃً وَّ فِی الۡاٰخِرَۃِ حَسَنَۃً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ
হে আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দিন এবং আখেরাতেও কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন। ২০১
আল্লাহর পরিচয়ঃ আল্লাহ হিসেব গ্রহণে অত্যন্ত তৎপর।
৪। নির্দিষ্ট সংখ্যক দিন বলে তাশরীকের দিনগুলোকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, যুল-হজ্জের ১১, ১২ এবং ১৩ তারিখ। রম্ই জিমার (জামরাতে কাঁকর মারা) তিন দিন উত্তম। কিন্তু কেউ যদি কেবল দু’দিন (১১ ও ১২ই যুলহজ্জ) কাঁকর মেরে মিনা থেকে প্রত্যাগমন করে, তবে তারও অনুমতি আছে।
৫। মুনাফিক বা অহংকারী ঝগড়াটে ব্যক্তির চরিত্রঃ(জাহান্নামী)
(১) পার্থিব জীবন সম্পর্কে যার কথাবার্তা চমৎকৃত করে/ পার্থিব জীবনে যাদের কথাবার্তা চমৎকৃত করে/ পার্থিব জীবনে চমৎকৃত হন তাদের কথাবার্তায়।
২। যমীনে অশান্তি সৃষ্টি এবং শস্যক্ষেত্র ও প্রাণী ধ্বংসের চেষ্টা করে।
৩। তাকওয়া অবলম্বন করার কথা বললে, তখন আত্মাভিমানে (গর্ব) আরো পাপাচারে লিপ্ত হয়।
৬। আল্লাহ বান্দার প্রতি সহানুভূতিশীল যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আত্মবিক্রয় করে দেয়।
(সুহায়ব রূমী (রাঃ)-এর ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। হিজরত করার সময় মক্কার কাফেররা তার ধন-সম্পদ সাথে নিতে বাধা দান করে।। সুহায়ব (রাঃ) সমস্ত ধন-সম্পদ তাদেরকে সমর্পণ করে দ্বীন নিয়ে রসূল (সাঃ)-এর নিকটে উপস্থিত হন।রাসূল সা শুনে বললেন, ‘‘সুহায়ব অতীব লাভদায়ক ব্যবসা করেছে।’’
৭। মুমিনদের আহবান করেছেন- পুর্ণাঙ্গভাবে ইসলামে প্রবেশ এবং শয়তানের পদাঙ্কসমূহ অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শক্ৰ।
৮। ইমান আনে নাই যারাঃ প্রকাশ্য নিদর্শন আসার পরও যদি তোমাদের পদস্খলন ঘটে, তবে সাবধান করা হয়েছে। কিয়ামতের অবস্থা দেখার পর ইমান আনলে কোন লাভ নেই।
আল্লাহর নামঃ عَزِیۡزٌ – মহাপরাক্রান্ত, حَکِیۡمٌ – প্রজ্ঞাময়
সুরা বাকারাঃ ২৬তম রুকু (২১১-২১৬)আয়াত
১। বনী ইসরাইলকে স্মরন করিয়ে দেয়া, আল্লাহর নিদর্শন পাওয়ার কথা। অনুগ্রহ বা নিয়ামত পরিবর্তন করার অর্থ, ঈমানের পরিবর্তে কুফরী ও বিমুখতার পথ অবলম্বন করা।
২। যারা কুফরী করে তাদের পরিচয়ঃ
- তাদের জন্য দুনিয়ার জীবন সুশোভিত করা হয়েছে এবং তারা মুমিনদেরকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে থাকে।
৩। তাকওয়ার পুরস্কারঃ কেয়ামতের দিন তারা সম্মানিত স্থান/ উর্ধ্বে থাকবে।
আল্লাহ যাকে ইচ্ছে অপরিমিত রিযিক দান করেন।
৪। সকল মানুষ একই মতাদর্শে ছিল।(ইবনে আব্বাস রা বলেন, আদম ও নূহ আ-এর মাঝে দশটি প্রজন্ম তাওহীদের উপর ছিলেন)
৫। নবীগণ প্রেরণ উদ্দেশ্যঃ সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে এবং তাদের সাথে সত্যসহ কিতাব নাযিল করেন যাতে মানুষদের মতভেদগুলোর মীমাংসা করতে পারেন।
৬। শুধুমাত্র পরস্পর বিদ্বেষবশত আল্লাহর নিদর্শন বিরোধীতা করে। (কাফের গ্রুপ)
৭। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হেদায়েত দান করেন।
৮। জান্নাত পাওয়ার পূর্বে যে পরীক্ষা দিতে হবে-
অর্থ-সংকট ও দুঃখ-ক্লেশ এবং তারা ভীত-কম্পিত হওয়ার মত অবস্থা। সেই অবস্থায় এমনকি রাসূল ও তার সংগী-সাথী ঈমানদারগণ বলে উঠেছিল, আল্লাহ্র সাহায্য কখন আসবে
৯। জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর সাহায্য অতি নিকটে।
১০। সম্পদ হতে কি পরিমাণ ব্যয় করব এবং কোথায় ব্যয় করব?
যে ধন-সম্পদ তোমরা ব্যয় করবে তা পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, মিসকীন এবং মুসাফিরদের জন্য।
উত্তম কাজের যা কিছুই তোমরা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক অবগত।
১১। তোমরা যা অপছন্দ কর হতে পারে তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর এবং যা ভালবাস হতে পারে তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর আল্লাহ্ জানেন তোমরা জান না।
জিহাদের নির্দেশ আসার পর জানান হয়েছে।
সুরা বাকারাঃ ২৭তম রুকু (২১৭-২২১)আয়াত
১। পবিত্র মাসে যুদ্ধ করা গুরুতর অপরাধ তবে তার চেয়ে বেশী অপরাধ-
আল্লাহর পথে বাধা দান করা, আল্লাহ্র সাথে কুফরী করা, মসজিদুল হারামে বাধা দেয়া ও এর বাসিন্দাকে এ থেকে বহিস্কার করা। ফিতনা হত্যার চেয়েও গুরুতর অপরাধ।
(রজব মাসে মুসলিম বাহিনী দিয়ে একজন কাফের নিহত এবং কিছু লোককে বন্দী করা ঘটনার আলোকে)
২। যে দ্বীন ইসলাম থেকে ফিরে যাবে, অর্থাৎ মুরতাদ হয়ে যাবে, দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের আমলসমূহ নিস্ফল হয়ে যাবে। স্থায়ী আগুনের অধিবাসী, হবে।
৩। আল্লাহর অনুগ্রহ প্রত্যাশা করার অধিকার কাদেরঃ
ঈমান এনে এবং হিজরত করেছে এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে
৪। মদ ও জুয়া সম্পর্কে প্রাথমিক নির্দেশঃ (মদিনায় যখন উমর, মুআয ইবনে জাবাল এবং কিছুসংখ্যক আনসার রাসূল সা এর কাছে প্রশ্ন করেন)
দু’টোর মধ্যেই আছে মহাপাপ এবং মানুষের জন্য উপকারও; আর এ দু’টোর পাপ উপকারের চাইতে অনেক বড়। (আন-নিসা ৪৩ নং আয়াতে মদপানের সময় সীমিত করা হয়। সবশেষে সূরা আল-মায়িদাহ এর ৯০ হারাম করা হয়েছে।
৫। তারা কি ব্যয় করবে? আল্লাহ জানিয়েছেন যা উদ্ধৃত।
৬। আল্লাহ্ তার আয়াতসমূহ সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন, যাতে মানুষ চিন্তা করে।
৭। ইয়াতিমদের সম্পর্কে- তাদের জন্য সুব্যবস্থা করা উত্তম। তোমরা যদি তাদের সাথে একত্রে থাক তবে তারা তো তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ জানেন কে উপকারকারী এবং কে অনিষ্টকারী।
৮। মুশরিক নারী পুরুষ ঈমান না আনা পর্যন্ত বিয়ে করা নিষেধ। মুশরিকের চেয়ে মুমিন ক্রীতদাস উত্তম। মুশরিক আগুনের দিকে আহবান করে।
৯। আল্লাহ নিজ ইচ্ছায় জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহবান করেন। আয়াত সমূহ সুস্পষ্ট ব্যক্ত করেন, যেন শিক্ষা নিতে পারে।
সুরা বাকারাঃ ২৮তম রুকু (২২২-২২৮)আয়াত
১। مَحِيْضٌ (রজঃস্রাব (হায়েয) অর্থ দুটি। ১. হয়েযের স্থান ২. হয়েযের সময়।
أذى – এর এক অর্থ, কষ্ট। আরেক অর্থ, অপবিত্রতা, অশুচি। দুটি অর্থই শুদ্ধ।
স্ত্রী-সংগম থেকে বিরত থাক এবং পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত (সংগমের জন্য) তাদের নিকটবর্তী হবে না।
২। আল্লাহ্ তাওবাকারীকে ও পবিত্রতা অর্জনকারীকে ভালবাসেন।
৩। তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের শস্যক্ষেত্র। অতএব তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছে গমন করতে পার।( আল্লাহ এখানে স্ত্রীদের সাথে সংগমের কোন নিয়মনীতি বেঁধে দেননি তবে যৌনাঙ্গ ছাড়া অন্যান্য অঙ্গ যেমন, পায়ূপথ, মুখ ইত্যাদিতে সংগম করা জায়েয নেই)
নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য কিছু করো বলতে অনেকের মতে সন্তান সন্ততির প্রচেষ্টা । আল্লাহ্কে ভয় করা ও অবশ্যই আল্লাহর সম্মুখীন হবে। মুমিনদেরকে সুসংবাদ দেয়া হয়েছে।
৪। রাগে সৎকাজ এবং তাকওয়া ও মানুষের মধ্যে শান্তি স্থাপন থেকে বিরত থাকার জন্য আল্লাহ্র নামের শপথ করা নিষেধ।
৫। ইয়ামীনে লাগও বা ‘অনর্থক-কসম-এর এক অর্থ হচ্ছে, কোন বিষয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে মুখ থেকে শপথ শব্দ বেরিয়ে পড়া। বুখারী: ৪৬১৩ এই ধরনের কসমের জবাবদিহি করতে হবে না কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে কসম রক্ষা করতে হবে।
সেসব কসম যা ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা জেনেই করা হয়। একে বলা হয় ‘গামুস’। এতে পাপ হয়।
৬। ‘ঈলা’র অর্থ কসম খাওয়া। যদি চার মাসেরও অধিক সময়ের জন্য কসম খায় কিংবা যদি কোন সময় নির্দিষ্ট না করেই কসম খায়,আয়াতে এই লোকদের জন্য সময় নির্ধারিত -চার মাস অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর হয় সে স্বীয় স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক স্থাপিত করে নেবে, নতুবা তাকে তালাক দিয়ে দেবে।
৭। তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীগণ তিন রজঃস্রাব কাল প্রতীক্ষায় থাকবে। (এমন নারীর ইদ্দত, যার সাথে তার স্বামীর সম্পর্ক কায়েম হয়েছে। ইদ্দত হল, তিন ‘ক্বুরু। যার অর্থ, তিন পবিত্রাবস্থা অথবা তিন মাসিকাবস্থা।
( গর্ভবতীর ইদ্দত হল প্রসব হওয়া পর্যন্ত)। (স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে) সম্পর্ক পূর্ব যে তালাক পেয়েছে- তার কোন ইদ্দত নেই।) যার হায়েয আসা বন্ধ হয়ে গেছে, তার ইদ্দত হল, তিন মাস।)
৮। আপোষ-নিষ্পত্তি করতে চায় তবে তাদের পুনঃ গ্রহণে তাদের স্বামীরা বেশী হকদার।
আর নারীদের তেমনি ন্যায়সংগত অধিকার আছে যেমন আছে তাদের উপর পুরুষদের;
আর নারীদের উপর পুরুষদের মর্যাদা আছে
আল্লাহর নামঃ حَلِیۡم – পরম সহিষ্ণু غَفُوۡرٌ – ক্ষমাপরায়ণ
সুরা বাকারাঃ ২৯তম রুকু (২২৯-২৩১)আয়াত
১। তালাকের বিস্তারিত নিয়ম নীতি উল্লেখ হয়েছে।
তালাক দু’বার। অতঃপর (স্ত্রীকে) হয় বিধিমত রেখে দেওয়া, নতুবা সদয়ভাবে মুক্ত করে দেওয়া। এখানে সেই তালাক, যে তালাকে স্বামীর (ইদ্দতের মধ্যে) স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার থাকে, তার সংখ্যা হল দুই। তৃতীয়বার তালাক দেওয়ার পর ফিরিয়ে নেওয়ার অনুমতি নেই।
২। উভয়ের আশংকা হয় যে, তারা আল্লাহ্র সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না, তবে স্ত্রী কোন কিছুর বিনিময়ে নিস্কৃতি পেতে চাইলে, তাদের কারো কোন অপরাধ নেই
৩। আল্লাহর সীমারেখা লংঘন করা নিষেধ। আর যারা আল্লাহর সীমারেখা লংঘন করে তারাই যালিম।
৪। স্ত্রীকে তালাক দেয় তবে সে স্ত্রী অন্য স্বামীর সাথে সংগত না হওয়া পর্যন্ত পূর্ব স্বামীর এই স্ত্রীকে আবার বিয়ে করার সুযোগ নেই। উভয়ে (স্ত্রী ও প্রথম স্বামী) মনে করে যে, তারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করতে পারবে তবে তাদের পুনর্মিলনে কারো কোন অপরাধ হবে না, তবে বিয়ের পূর্ব শর্ত মেনে চলতে হবে।
৫। স্ত্রীর ক্ষতি করে সীমালংঘনের উদ্দেশ্যে তাদেরকে আটকে রেখো না। যে তা করে, সে নিজের প্রতি যুলুম করে।
৬। আল্লাহর বিধানকে ঠাট্টা-বিদ্রুপের বস্তু করো না।
৭। আল্লাহর নেয়ামত ও কিতাব এবং হেকমত যা নাযিল করেছেন, যা দ্বারা তিনি উপদেশ দেন, তা স্মরণ করার আদেশ দান। আর আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করার আহবান।
সুরা বাকারাঃ ৩০তম রুকু (২৩২-২৩৫)আয়াত
১। তালাকপ্রাপ্তা মহিলার ব্যাপারে তৃতীয় একটি নির্দেশ-
ইদ্দত অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর তারা (প্রথম বা দ্বিতীয় তালাকের পর) স্বামী-স্ত্রী উভয়েই সন্তুষ্টচিত্তে পুনরায় যদি বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হতে চায়, তাহলে তোমরা তাদেরকে তাতে বাধা দিও না।
২। যারা আল্লাহ্ তা’আলা ও আখেরাতে বিশ্বাস করে, তাদের জন্য এসব আহকাম যথাযথভাবে পালন করা অবশ্য কর্তব্য
৩। দুধপানের মাসআলা বর্ণিতঃ(দুধপানের সর্বাধিক সময়সীমা হল, দুবছর।)
জননীগণ তাদের সস্তানদেরকে পূর্ণ দুবছর স্তন্য পান করাবে এটা সে ব্যক্তির জন্য, যে স্তন্যপান কাল পূর্ণ করতে চায়। পরস্পরে সম্মতি ও পরামর্শক্রমে স্তন্যপান বন্ধ রাখতে চায়, তবে তাদের কারো কোন অপরাধ নেই।
পিতার কর্তব্য যথাবিধি তাদের (মাতাদের) ভরণ-পোষণ করা( যখন তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী)। শিশুর মা ব্যতীত অন্য মহিলা দিয়েও দুধ পান করানোর অনুমতি আছে। তবে শর্ত হল, এই মহিলারও পারিশ্রমিক আদায় করে দিতে হবে।
৪। তাকওয়া অবলম্বন কর এবং নিশ্চয় আল্লাহ তা প্রত্যক্ষকারী।
৫। স্বামীর মৃত্যুর পর (শোক পালনের) এই ইদ্দত (চার মাস দশ দিন)সকল নারীর জন্য, তাতে বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কায়েম হয়ে থাকুক বা না হয়ে থাকুক, যুবতী হোক বা বৃদ্ধা। অবশ্য গর্ভবতী মহিলা এই আওতায় পড়বে না। কারণ, তার ইদ্দতকাল হল সন্তানপ্রসব হওয়া পর্যন্ত।
৬। ইদ্দতের মধ্যে ইশারা-ইঙ্গিতে বিবাহের পয়গাম দিতে পারো, তার নিকট থেকে গোপনভাবে কোন অঙ্গীকার নেবে না এবং ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পূর্বে বিবাহ পাকা করবে না।
৭। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের অন্তরে যা আছে তা জানেন। আল্লাহকেই ভয় কর।
সুরা বাকারাঃ ৩১তম রুকু (২৩৬-২৪২)আয়াত
১। এ নির্দেশ এমন মহিলার জন্য, বিবাহের সময় যার দেনমোহর নির্ধারিত হয়নি এবং স্বামী সহবাসের পূর্বেই তালাক হয়েছে, তাকে কিছু না কিছু খরচপত্র (ক্ষতিপূরণস্বরূপ) দিয়ে বিদায় কর। সচ্ছল তার সাধ্যমত এবং অসচ্ছল তার সামর্থ্যানুযায়ী, বিধিমত সংস্থান করবে, এটা মুহসিন লোকদের উপর কর্তব্য।
২।সহবাসের পূর্বে তালাক দিয়ে দিয়েছে, কিন্তু মোহর নির্ধারিত ছিল। এমতাবস্থায় স্বামীর জন্য জরুরী হল অর্ধেক মোহর আদায় করা। কিন্তু স্ত্রী যদি তার মোহরের অধিকার মাফ করে দেয়, তাহলে স্বামীকে কিছুই দিতে হবে না।
৩। সালাতের কথা এসেছে-
তোমরা নামাযসমূহের প্রতি যত্নবান হও; বিশেষ করে মধ্যবর্তী (আসরের) নামাযের প্রতি।আর আল্লাহর সম্মুখে বিনীতভাবে খাড়া হও।
৪। সালাতুল খাওফ বা ভীতির সালাত-( যাতুর রিকা’র যুদ্ধে)
শত্রুর ভয়ের সময় যেভাবে সম্ভব; হাঁটতে হাঁটতে অথবা বাহনের উপর বসে নামায পড়ে নাও। অতঃপর যখন ভয়ের অবস্থা দূর হয়ে যাবে, তখন পুনরায় সেইভাবে নামায পড়,
৫। স্বামীর মৃত্যুর দরুন স্ত্রীর ইদ্দতকাল ছিল এক বছর। কিন্তু পরবর্তীতে এ সূরার ২৩৪ নং আয়াতের মাধ্যমে বছরের স্থলে চার মাস দশ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে একটি বিষয় জানা আবশ্যক যে, এ ২৪০নং আয়াতটি এ সূরার ২৩৪ নং আয়াতের পূর্বে নাযিল হয়েছিল।
৬। বিচ্ছেদের সময় (মহিলার সাথে) সদ্ব্যবহার এবং তার মানসিক খুশির প্রতি যত্ন নেওয়ার উপর তাকীদ করা হয়েছে।
৭। আল্লাহ তার আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন যাতে সবাই বুঝতে পারে।
সুরা বাকারাঃ ৩২তম রুকু (২৪৩-২৪৮)আয়াত
১। এ ঘটনা বিগত কোন জাতির। কোন সহীহ হাদীসে এর বিস্তারিত আলোচনা আসেনি। তফসীরের বর্ণনায় এটাকে বনী-ইস্রাঈলদের যুগের ঘটনা বলা হয়েছে এবং যে নবীর দু’আয় তাদেরকে মহান আল্লাহ পুনরায় জীবিত করেছিলেন, তাঁর নাম ‘হিযক্বীল’ বলা হয়েছে। এরা জিহাদে নিহত হয়ে যাওয়ার ভয়ে অথবা মহামারী রোগের ভয়ে নিজেদের ঘর থেকে বের হয়ে গিয়েছিল; যাতে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যায়।
২। তোমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ কর এবং জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
৩। قَرْضٌ حَسَنٌ (উত্তম ঋণ) প্রদান করার অর্থ আল্লাহর পথে এবং জিহাদে মাল ব্যয় করা। তিনি তার জন্য তা বহুগুণ বৃদ্ধি করবেন। আর আল্লাহ সংকুচিত ও সম্প্রসারিত করেন এবং তাঁর দিকেই তোমাদেরকে প্রত্যাবর্তিত করা হবে।
৪। মূসার পরবর্তী ইসরাঈল-বংশীয় নেতাদের ঘটনা এসেছেঃ তাদের প্রতি যুদ্ধের বিধান দেয়া হলো তখন তাদের কিছু সংখ্যক ছাড়া সবাই পৃষ্ঠ প্রদর্শন করল আর আল্লাহ যালিমদের সম্পর্কে সবিশেষ জ্ঞানী।
৫। আল্লাহ অবশ্যই তালুতকে তোমাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তিনি তাকে জ্ঞানে ও দেহে সমৃদ্ধ করেছেন। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছে স্বীয় রাজত্ব দান করেন।
৬। সিন্দুক অর্থাৎ, তাবূত বা শবাধার। تابوت শব্দটি توب ধাতু থেকে গঠিত। যার অর্থ হল, প্রত্যাবর্তন করা। যেহেতু বানী-ইস্রাঈল বরকত অর্জনের জন্য এর প্রতি প্রত্যাবর্তন করত, তাই এর নাম তাবূত রাখা হয়। (ফাতহুল ক্বাদীর) এই সিন্দুকে মূসা এবং হারূন (আলাইহিমাসসালাম)-এর বরকতময় কিছু জিনিস ছিল
৭। ফেরেশতাগণ তা বহন করে আনবে। তোমরা যদি মুমিন হও তবে নিশ্চয় তোমাদের জন্য এতে নিদর্শন রয়েছে।
সুরা বাকারাঃ ৩৩তম রুকু (২৪৯-২৫৩)আয়াত
১। তালুত যখন সেনাবাহিনীসহ বের হলো তখন সে বলল, আল্লাহ এক নদী দ্বারা তোমাদের পরীক্ষা করবেন
নদীটি জর্ডান ও প্যালেষ্টাইনের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত। জালূত ও তার সেবাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য গিয়েছিলো।
তাফসীরে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এতে তিন ধরণের লোক ছিল। একদল অসম্পূর্ণ ঈমানদার, যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি। দ্বিতীয় দল পূর্ণ ঈমানদার, যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু নিজেদের সংখ্যা কম বলে চিন্তা করেছে এবং তৃতীয় দল ছিল পরিপূর্ণ ঈমানদার, যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন(৩১৩জন) এবং নিজেদের সংখ্যালঘিষ্টতার কথাও চিন্তা করেননি।
আল্লাহ্র হুকুমে কত ক্ষুদ্র দল কত বৃহৎ দলকে পরাভূত করেছে! আর আল্লাহ্ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।
দু’আ করেছে প্রত্যয়ের সাথে-
رَبَّنَاۤ اَفۡرِغۡ عَلَیۡنَا صَبۡرًا وَّ ثَبِّتۡ اَقۡدَامَنَا وَ انۡصُرۡنَا عَلَی الۡقَوۡمِ الۡکٰفِرِیۡنَ
হে আমাদের রব! আমাদের উপর ধৈর্য ঢেলে দিন, আমাদের পা অবিচলিত রাখুন এবং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে জয়যুক্ত করুন।
২। আল্লাহর হুকুমে তাদেরকে (কাফেরদেরকে) পরাভূত করল এবং দাউদ জালুতকে হত্যা করলেন। আর আল্লাহ্ তাকে রাজত্ব ও হেকমত দান করলেন এবং যা তিনি ইচ্ছে করলেন তা তাকে শিক্ষা দিলেন
৩। আল্লাহ্ যদি মানুষের এক দলকে অন্য দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন তবে পৃথিবী বিপর্যস্ত হয়ে যেত। কিন্তু আল্লাহ সৃষ্টিকুলের প্রতি অনুগ্রহশীল।
৪। সমস্ত আল্লাহর নিদর্শন; যা যথাযথভাবে আল্লাহ জানিয়েছেন। আর নিশ্চয় মুহাম্মদ সা রসূলগণের অন্যতম।
৫। বিভিন্ন রাসূলকে বিভিন্ন মর্যাদা দেয়ার উদাহরন আল্লাহ তুলে ধরেছেন। যেমনঃ কারো সাথে কথা বলেছেন(মুসা আ)
নবী করীম (সাঃ) যে বলেছেন, ‘‘তোমরা আমাকে নবীদের মাঝে শ্রেষ্ঠত্ব দিও না। (বুখারী ৪৬৩৮, মুসলিম ২৩৭৩নং) এ থেকে একে অন্যের উপর শ্রেষ্ঠত্বের অস্বীকৃতি সাব্যস্ত হয় না, বরং এ থেকে উম্মতকে নবীদের ব্যাপারে আদব ও সম্মান দানের শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে যে, তোমরা যেহেতু সে সমূহ বৈশিষ্ট্য ও বিষয়াদি সম্পর্কে অবহিত নও, যার ভিত্তিতে তাঁদের কেউ অন্যের উপর শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী হয়েছেন, তাই তোমরা আমার শ্রেষ্ঠত্বও এমনভাবে বর্ণনা করো না, যাতে অন্য নবীদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়।
প্রেজেন্টেশন( Power point Presentation)
২য় পারা সমাপ্ত