সূরা ফাতিহা (মহান রবের সাথে কথা)

দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে—

কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি আপনাকে দান করেছি পুনঃপুনঃ আবৃত্তির সাতটি আয়াত।’ (সূরা হিজর: ৮৭)

আবূ সা‘ঈদ ইবনু মু‘আল্লা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি একদা মাসজিদে নাববীতে সলাত আদায় করছিলাম, এমন সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে ডাকেন। কিন্তু ডাকে আমি সাড়া দেইনি। পরে আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি সলাত আদায় করছিলাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ কি বলেননি যে, ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা সাড়া দেবে আল্লাহ্ ও রসূলের ডাকে, যখন তিনি তোমাদেরকে ডাক দেন (সূরাহ আনফাল ৮/২৪)। তারপর তিনি আমাকে বললেন, তুমি মাসজিদ থেকে বের হওয়ার আগেই তোমাকে আমি কুরআনের এক অতি মহান সূরাহ্ শিক্ষা দিব। তারপর তিনি আমার হাত ধরেন। এরপর যখন তিনি মাসজিদ থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা করেন তখন আমি তাঁকে বললাম, আপনি কি বলেননি যে আমাকে কুরআনের অতি মহান সূরাহ্ শিক্ষা দিবেন? তিনি বললেন, الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য যিনি বিশ্ব জগতের প্রতিপালক, এটা বারবার পঠিত সাতটি আয়াত এবং মহান কুরআন যা কেবল আমাকেই দেয়া হয়েছে। বুখারী [৪৬৪৭, ৪৭০৩, ৫০০৬] (আ.প্র. ৪১১৬, ই.ফা. ৪১১৯)

সূরাখানির স্বাতন্ত্র্য ও বৈশিষ্ট্যের আর একটি দিক এই যে, আলোচ্য সূরাখানির গুরুত্ব মানব জীবনের সব দিকে এতই বেশী পরিব্যপ্ত যে, স্থান বিশেষ ব্যাখ্যায় সম্মানিত তাফসীরকারগণ আলোচ্য সূরাখানির প্রায় ৪২টি নাম দিয়েছেন। যে নামগুলো তাফসীর ইবনু কাসীর, ইবনু জারীর, রুহুল মায়ানী, তাফসীর কবীর, তাফসীর খাযিন, তাফসীরে ফাতহুল ক্বাদীর, তাফসীরে কুরতুবী সহ নির্ভরযোগ্য তাফসীরাতের কিতাবসমূহে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে এতদ সমূদয় হতে মাত্র কয়েকটি নাম চয়ন করা হলো। যথাক্রমেঃ

(১) سورة مفتاح القرآنকুরআনের কুঞ্জিকা,                     (২) سورة أم القرآن কুরআনের মা বা আসল,                    (৩) سورة الدعاء দু‘আর সূরা,                                     (৪) سورة الشفاءরোগ মুক্তির সূরা,

(৫) سورة الحمد প্রশংসার সূরা,                                    (৬) أساس القرآن কুরআনের ভিত্তি,                                    (৭) سورة الرحمة রাহমাতের সূরা,                                 (৮) سورة البركة বারকাতের সূরা,

(৯) سورة النعمة নি‘আমাতের সূরা,                             (১০) سورة العبادة ‘ইবাদাতের সূরা,                                      (১১) سورة الهداية হিদায়াত প্রাপ্তির সূরা,                       (১২) سورة الإسةقامة দৃঢ়তার সূরা,

(১৩) سورة الإسةعانة সাহায্য প্রার্থনার সূরা,                   (১৪) سورة الكافية অত্যধিক ও বিপুলতা দানকারী সূরা,     (১৫) سورة الوافية পূর্ণত্ব প্রাপ্ত সূরা,

(১৬) سورة الكنـز খণির সূরা (জ্ঞানের খনি, রাহমাত, বারাকাত, নি‘আমাত ও যাবতীয় সাফল্যের খণি বলে এ সূরাকে আখ্যায়িত করা হয়েছে),              (১৭) سورة الشكر শুকর করার সূরা বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সূরা (১৮) سورة الصبر সবরের উৎসাহ দানকারী সূরা,               (১৯) سورة التكرار বার বার পঠিতব্য সূরা,                                                                            (২০) سورة التعلق مع الله আল্লাহর সাথে বান্দার গভীর সম্পর্ক স্থাপনের সূরা,

(২১) سورة الصراط المستقيم সরল সঠিক পথ লাভের সূরা,                           (২২) سورة الربوبية প্রভুত্ব সনাক্ত করণের সূরা,                                (২৩) سورة الوحدانية আল্লাহ তা‘আলার একত্ববাদের প্রতি স্বীকৃতি প্রকাশের সূরা, (২৪) سورة الاجةناب الغضب والضلالة আল্লাহর গযব ও গোমরাহী হতে আত্মরক্ষা করার সূরা,                              (২৫) سورة الصلاة সলাতে একান্তই পঠিতব্য সূরা।

আমরা নিচের ছোট লেকচারগুলো একটু সময় নিয়ে শুনি ও পরিচয় হই সূরা ফাতিহার সাথে নতুন করে। মহান আল্লাহ আমাদের অন্তর্চক্ষু খুলে দিন। আমাদের ক্ষমা করে দিন। কবুল করে নিন তাঁর প্রিয় বান্দাদের মাঝে শামিল করে।